আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জেজু দ্বীপের ভ্রমণ কাহিনী- পর্ব ৩

গলাবাজ আর সত্যিকারের লেখক এই ব্লগে টিকে থাকে, আমি কোনটাই না

পর্ব ১ এখানে পর্ব ২ এখানে বাইরের রোদের তেজ আর লান্চের পরের ভাত ঘুমের টান। তার উপর সকালে ভালো ঘুম হয়নি। লবির ওখানেই অনেক সোফা ফাঁকা পড়ে আছে। একটাতে বসেই ঢুলতে ঢুলতে হাল্কা ঘুম দিয়ে নিলাম। আহ কি ফ্রেশ লাগছে এখন।

ওদিকে রোদটাও একটু কমে এসেছে। এবার নীচে যাওয়া যায় সমুদ্র দর্শনে। ইন্টারনেশনাল কনভেনশন সেন্টারের একাংশ কিছুটা দূর থেকে তোলা পুরো কনভেনশন সেন্টার জনৈক ছবিতুলক নীচে বেরিয়ে হাটতে লাগলাম। নানা রকম পাথরের ভাস্কর্য করে রাখা আছে এখানে সেখানে। কিছুটা সামনে গেলে দেয়ালের লাইনিং।

নীচে পাহাড়ের ঢালে এসে আছড়ে পড়ছে উত্তাল পানি। আকাশ পুরো পরিস্কার ছিলো আস্তে আস্তে ছেড়া ছেড়া মেঘে ভরে যেতে লাগলো। প্রথম দিনের সেমিনার শেষ হবে ৬.৩০ এ। এর আগেই আবার সবাই এক জায়গায় মিলিত হতে হবে নেক্সট প্ল্যান জানার জন্য। বাইরে দেখলাম বুফের আয়োজন হচ্ছে।

তাই ভাবলাম হয়তো এখানেই ডিনার করবে দলের সবাই। আস্তে আস্তে সূর্য ডোবা শুরু হলো। পুরো আকাশটা যেন রঙে ভরে গেলো এক নিমেষে। বেশ কিছু ছবি তুলে ফিরে গেলাম ভিতরে। সাদা সাদা মেঘ গুলো খুব সুন্দর লাগছিলো আরেকটা মেঘ আর আকাশের ছবি সমুদ্র এসে মিশেছে নকশী পাহাড়ে, জানিনা এটা মানুষের খোদাই করা নাকি ন্যাচারাল সামনে অথৈ সমুদ্র লাল হতে শুরু করলো মেঘ আর আকাশ গাছ পালার ফাঁকে সূর্যের খেলা সূর্য ডুবতে শুরু করেছে আর ধরে রাখা গেলোনা জানতে পারলাম এখানে বুফে তে ডিনার করবেনা তারা।

সবাই মিলে এখন কটেজে যাবে, যেখানে রাতে থাকবো আমরা। বারবিকিউ আয়োজন চলছে। ডিনার প্রায় রেডি। এর ভিতরে মুদাচ্ছের কে পাওয়া যাচ্ছেনা, তার মোবাইল ও বন্ধ। তিনজন মিলে খুঁজতে বের হলাম।

এদিক সেদিক খুঁজে অবশেষে তাকে পাওয়া গেলো। সেমিনার সেন্টার থেকে কটেজ ১০ মিনিটের রাস্তা। কিন্তু জিপিএস থাকা সত্বেও সরু গলিটা বুঝতে পারছিলোনা জে ওয়ান। বেশ কয়েকবার ঘুরলি খেয়ে পৌঁছালাম অবশেষে। খুব সুন্দর দোতলা বাড়ি, কয়েকটা ইউনিট আছে, সবগুলোই একরকম।

প্রত্যেক ইউনিটে দুটা বেড, বড় ড্রইয়, কিচেন, বাথ। আমরা মোট ৯ টা ছেলে এক ইউনিটে। আমি, নিয়াজ, থোরাত, মুদাচ্ছের, ওয়াহিদ (আরেক পাকিস্তানী), সতীশ (ভারতীয়), দীপক (নেপালী), পুনা (ভারতীয়) আর সাং হো (কোরিয়ান)। এই বাসায় ছিলাম দুই রাত, এই সাদা গাড়ীগুলোই ভাড়া করা হয়েছিলো তিন দিনের জন্য জামা কাপড় ছাড়লাম না, একটু হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হতেই ডিনারের জন্য ডাকাডাকি। তিন তলার ছাদে হচ্ছে বারবিকিউ।

মাছ, পোর্ক আর চিকেন ফ্রাই। ফ্রুটস, ড্রিংকস তো আছেই। খুব ঠান্ডা বাতাস বইছিলো ছাদে। সারাদিন গরমে মাথা কনকন করছিলো, রাতের ঠান্ডাটা খুব বাজে লাগছিলো। কোন রকমে খাওয়াটা শেষ করেই বসকে বলে নীচে নেমে আসলাম।

এখন ওরা আরো ড্রিন্কস করবে, নাচবে গাইবে, আমার দরকার একদম টানা ফ্রেশ একটা ঘুম। কিন্তু নীচে নেমেই ঘুমানো হলোনা। বিশাল পর্দার টিভিতে হলিউড মুভি দেখতে বসে গেলাম। শেষের দিকের সাসপেন্স। এর ভিতরে কিছুটা পলিটিক্স ঘটে গেলো।

একটা বেড রুমে সতীশ, পুনা, মুদাচ্ছের আর ওয়াহিদ আগে ভাগেই বালিশ আর কম্বল নিয়ে আলো নিভিয়ে ঘুমানো শুরু করে দিলো। আসল উদ্দেশ্য যদি সর্ট পড়ে আমাদের পড়বে। মুভি শেষ করে দেখি একটা বালিশ আর দুটো কম্বল সর্ট। বাসার মালিকের কাছে সাধারণত এক্সট্রা থাকে, সেখান থেকে নিয়ে আসলাম। তবে ঐ শালাদের ইচ্ছা করে আগে ঘুমিয়ে যাওয়ার কারন টা বুঝে মেজাজ খারাপ হলো, পরে সময়মতো ট্রিট দেয়া হবে এই আশায় ঘুমিয়ে পড়লাম।

চলবে.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।