গলাবাজ আর সত্যিকারের লেখক এই ব্লগে টিকে থাকে, আমি কোনটাই না
পূর্বকথন
কোরিয়াতে আসার পরই জেজু নামটার সাথে আমার পরিচয় ঘটে। কারন একজন বাংলাদেশি স্টুডেন্ট যে কিনা ওখানে মাস্টার্স করেছে, পরে আমার ওখানে পিএইচডি তে ভর্তি হয়েছে। সেজন্য সবাই তাকে জেজু বলেই ডাকে। পরে জানলাম কোরিয়ার খুব সুন্দর দ্বীপ এই জেজু। পর্যটনের জন্য খুব সুন্দর জায়গা হওয়ায় সব কিছু খুব ব্যয়বহুল এবং যাতায়াত ব্যবস্হা বিমানে।
তাই সাধারণত নিজ খরচে যাওয়াটা সবার পক্ষে হয়ে ওঠেনা। ল্যাব থেকে কোন সেমিনারে নিয়ে গেলে ঐ সুযোগেই সবাই ঘুরে আসে ৩-৪ দিনের জন্য।
সিউলের গিমপো বিমানবন্দর থেকে সোজা জেজু দ্বীপ (তীর আঁকা)
ছয় মাস আগেও আমার ল্যাব থেকে জেজু গিয়েছিলো, কিন্তু তখন মাত্র কয়েকজন কে বাছাই করে নিয়ে গিয়েছিলো। তাই ফিরে এসেই বস জানিয়ে দিয়েছিলো নেক্সট অক্টোবর মাসে সবাইকে নিয়ে সেমিনারে যাবো আমরা। এর আগেও ল্যাব থেকে অনজু আর পোহাং সিটি নিয়ে গিয়েছিলো।
আমার বউকেও সাথে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানালেন বস। প্রায় তিন মাস আগে থেকেই এয়ারলাইনসে টিকিট বুকিং দিতে হলো। কারণ প্রচুর ভিড় থাকে সেমিনার সিজনে।
আমার ল্যাবে আমরা পাঁচজন, চারজন বিদেশী একটা কোরিয়ান ছেলে। আর আমার বসের আরো তিনটা সহযোগী ল্যাবের সব মিলে প্রায় ৪০ জন।
এই বিশাল বহরে বসের সংখ্যা ৬ জন, আর সব ছাত্র। ল্যাবমেট আগেই বলে দিয়েছে তিন দিনের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস আর পাহাড়ে ওঠার জন্য কেডস নিয়ে যেতে। সকাল ৬। ৩০ টার ভিতর আমরা সাবওয়ে স্টেশনে এক হবো। সেখান থেকে এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে রওনা দেবো।
অক্টোবর ১৬, বৃহস্পতিবার
সময় সকাল ৬.৩০, আমরা সাবওয়ের টিকেট কাউন্টারে অপেক্ষা করছি বাকি সবার জন্য। সবাই চলে আসলে আমরা ট্রেনে চেপে বসলাম, সকালের এই সময়টা সাধারণত বেশী ভীড় হয়না। সিট পাওয়া গেলো। প্রায় এক ঘন্টা ট্রেন চলার পর আমরা গিমপো এয়ারপোর্ট স্টেশনে নামলাম। স্টেশনের সাথেই কানেক্টেড এয়ারপোর্টের প্রবেশ পথ।
ভিতরে যেয়ে দেখলাম আমাদের বসেরা উপস্হিত। আমাদের ফরেন রেজিঃ কার্ড (কোরিয়াতে বলে এলিয়েন কার্ড) নিয়ে ল্যাবমেট টিকেট কাটতে গেলো। একটু পরে যেটা হাতে ধরিয়ে দিলো সেটা যেকোন ডিপার্টমেন্টাল শপের ভাউচারের মতো দেখতে। সিউল থেকে আমাদেরকে জেজু পৌঁছে দেবে এশিয়ানা এয়ারলাইন্সের বিমান।
বিমানবন্দরের ভিতরে টিকেট সংগ্রহের এক ফাঁকে
এশিয়ানার এই বিমানেই জেজু যাত্রার অপেক্ষায়
ইমিগ্রেশনের ওখানে দেখি ব্যাপক অবস্হা।
জুতো পর্যন্ত খুলাচ্ছে সবার, ভালো মতো চেকাপ করলো এবার ওয়েটিং রুমে অপেক্ষার পালা, ৯.১৫ তে ছাড়বে বিমান। চারিদিকে তখনো কুয়াশার চাদর। ৯ টার দিকে ভিতরে গেলাম আমরা। মাঝারি সাইজের বিমান। ৩ সিট করে ৬ সিটের, মাঝে স্পেস।
জানালার পাশে দুটো সিট পেলাম আমরা। সকালের ঘুমটা মনমতো হয়নি তাই চোখেমুখে একটু বিরক্তির ছাপ সবারই। কেউ কেউ হালকা ঘুমিয়েও নিলো। আমি অবশ্য বসে বসে প্লেনের ডানা আর নীচের ছবি তুলতে লাগলাম। প্রায় ৫০ মিনিট পরে জেজু দ্বীপটা চক্কর দিয়ে মাটিতে নামলো লোহার পাখি।
বিমানের জানালা থেকে তোলা ডানা আর আকাশ
নীচে দেখা যাচ্ছে জেজু দ্বীপের একাংশ
আরো নীচে নেমেছে বিমান, হঠাৎ মনে হয় যেনো খেলনা বাড়ি
চলবে.....
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।