অনেকবার চেষ্টা করেছি কলম আর ক্যামেরার দাসত্ব থেকে বের হয়ে যেতে..কিন্তু পারি নি....পারবো কিনা জানি না---এভাবেই হয়তো চলবে...
স্বপ্নের বৃটেনে বাড়ছে বেকারত্ব। কর্মের সন্ধানে ছুটে আসা মানুষগুলো দিশেহারা। লন্ডন ক্রমেই হয়ে পড়ছে বেকারের শহর। কর্মহীন হয়ে পড়ছে শিক্ষিত দক্ষ অসংখ্য মানুষ, বাড়ছে অস্থিরতা। দ্রব্যমূল্যেও উর্ধ্বগতির কারণে এমনিতেই বৃটেনে গত এক বছরে মাথাপিছু ব্যয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে আশঙ্কাজনকহারে এখন মড়ার ওপর খড়ার ঘা হয়ে দাড়িয়েছে কর্মহীনতা।
মানুষ আছে কিন্তু কাজ নেই। এ জ্বালা কেবল বাংলাদেশের মতো দরিদ্র দেশগুলো পোহাচ্ছে তা কিন্তু নয়, ইউরোপীয় ইকোনমিক এরিয়া থেকে আসা ঝাঁকে ঝাঁকে মানুষগুলোকেও বরণ করে নিতে হচ্ছে এই করুণ অর্থনৈতিক বাস্তবতা। সেন্ট্রাল লন্ডনসহ আশপাশের শহরগুলোয় এখন কর্মহীন পথচারী বাংলাদেশীর সংখ্যা বাড়ছে। প্রতিদিন যেনো এই অস্থিরতা বাড়ছে।
শেয়ার মার্কেটে তালিকাভুক্ত বেশ কিছু প্রভাবশালী কোম্পানী লোকসান দিয়েই চলেছে।
এসব কোম্পানীতে বিরাজ করছে ছাটাই আতঙ্ক। লন্ডনের অন্যতম অর্থনৈতিক জোন ক্যানেরিহোয়ার্ফ থেকে কিছু দিন আগে ছাটাই করা হয় প্রায় ৫০হাজর কর্মী। প্রায় প্রতিদিন কোন না কোন কোম্পানীতে এভাবে লোকবল ছাটাইয়ের খবর প্রকাশিত হচ্ছে বৃটেনের পত্র-পত্রিকায়। সার্বিক পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাড়ায় এ নিয়ে নীতি নির্ধারকরা রীতিমতো শংকিত। সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গেও মাঝে প্রকাশ পাচ্ছে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা।
প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন সমূহ বিপর্যয় এড়াতে বেশ জোরালোভাবে বলেছেন, আমরা সব কিছু করবো। কাজের ক্ষেত্র সৃষ্টি এবং মানুৈেষর কাজ পেতে আমরা সব কিছু করবো। প্রধানমন্ত্রীর এই আশ্বাস বাণী লন্ডনাবাসীদের মাঝে শান্তনা সৃষ্টি করতে পেরেছে কতখানি তার পরিষ্কার ধারণা পাওয়া না গেলেও তার বক্তব্যের মাঝে অর্থনীতির বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। বিশ্বের অন্যতম ধনী দেশের এই বাস্তবতা বাংলাদেশের মতো দরিদ্র কিংবা উন্নয়নশীল দেশগুলোর মাঝে হতাশার সৃষ্টি করতে পারে বলে অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন।
এক অর্থনৈতিক জরিপে বলা হয়েছে যে, বৃটেনে বেকারত্বেও হার গত সতেরো বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার লন্ডনের বিভিন্ন সংবাদপত্রে গুরুত্বেও সাথে এই খবর ছাপা হয়।
এই মুহুর্তে সরকারী হিসাব কাজের বাইরে অবস্থান করছে এক লাখ চৌষট্টি হাজার মানুষ। গত তিন মাসেই বেকারত্বেও হার বেড়েছে প্রায় ১০ শতাংশ। যা ১৯৯১সালের পর এই প্রথম। বর্তমানে বৃটেনে রয়েছে প্রায় সতের লাখ নব্বই হাজার মানুষ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন সরকারের কাছে জব সিকারস এ্যালাউন্স চাওয়ার হারও গত আট মাসে আশংকাজনক হারে বেড়ে গেছে। কাজ নাই এবং কাজ না পাওয়া পর্যন্ত সরকার বেকারদের এই আর্থিক ভাতা দিবে।
সেপ্টম্বর মাসে এদের সংখ্যা নয় লাখ উনচল্লিশ হাজার নয়শো জনে দাড়িয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় বত্রিশ হাজার বেশি। অর্থনীতিতে প্রশিক্ষণ দেবার জন্য যুক্তরাজ্য সরকার ইতোমধ্যে বাড়তি দশ কোটি পাউন্ডের একটি তহবিল গঠন করেছে।
গার্ডিয়ান পত্রিকার সাথে আলাপে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের মনিটরি পলিসি কমিটির সদস্য ডেইভিড ব্যাঞ্চফ্লাওয়ার বলেন, ক্রিসমাস প্রাক্কালে কর্মহীনের সংখ্যা বিশ লাখ ছাড়িয়ে যাবে।
এ সংখ্যার মধ্যে কাজ কর্ম চলে যাওয়া ছাপান্ন হাজার তরুণের ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এমপ্লয়মেন্ট মিনিষ্টারের দপ্তর থেকেও অর্থনীতির পরিস্থিতির ব্যাপারে সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে। পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের সংকল্প ব্যাক্ত করে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমাদের পদক্ষেপ নিতে হবে।
বিরোধী দলের পক্ষ থকে সরকারের পক্ষ থেকে আসা কর্মসংস্থান বাড়ানোর প্রচেষ্টা সংক্রান্ত আশ্বাসের প্রতি আদৌ কোনো সমর্থ জ্ঞাপন করা হয়নি। বরং টোরী পার্টিও শ্যাডৌ ওয়ার্ক এনড পেনশন্স সেক্রেটারী ক্রিস গরুলিং লেবার পার্টিও শাসনামলে সমালোচনা করে বুধবার বলেন, বৃটেন এখন গত দশ বছরের অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার পরিণতি ভোগ করছে।
তবে কোনো কোনো বিশ্লেষকের মতে, বর্তমান পরিস্থিতির জন্য লেবারকে একান্তভাবে দায়ী করাটা নিতান্ত রাজনৈতিক ফায়দা আদায়ের চেষ্টা ছাড়া আর কিছু নয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।