আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছোট্ট গোল রুটি



ছোটোবেলায় রাশিয়ান উপকথার একটা বই খুব পড়তাম। ওখানে প্রথম গল্পটার নাম ছিল 'ছোট্ট গোল রুটি'। গল্পের কাহিনীটা এরকমঃ এক বুড়ি তার বুড়োর জন্য একটা ছোট্ট গোল রুটি বানিয়ে ভেজে জানালার পাশে ঠান্ডা হতে দেয়। রুটিটা জানালা দিয়ে লাফিয়ে বের হয়ে যায়। নিজের মত গান গেতে পথ চলতে থাকে।

রাস্তায় তার দেখা হয় খরগোশের সাথে। খরগোশ তাকে খেতে চাইলে সে তাকে চোখ বন্ধ করতে বলে গান গায় - ছোট্ট গোল রুটি চলছি গুটি গুটি ময়ান দিয়ে মেখে ঘি দিয়ে ভেজে জুড়োতে দিলো যেই পালিয়ে এলাম সেই বুড়ি পেলোনা বুড়ো পেলোনা ওরে খরগোশ তুইও পাবিনা। তারপর সে ওখান থেকে পালিয়ে আবার সামনে যেতে থাকে। পথে তার দেখা হয় সজারু, ভালুক এরকম আরও অনেকের সাথে। সবাইকেই সে একই ভাবে চোখ বন্ধ করিয়ে গান শুনিয়ে বুদ্ধু বানিয়ে পালিয়ে যায়।

এবার তার দেখা হয় শেয়াল মামার সাথে। শেয়াল কে একবার গান শুনানোর পর সে আবার শুনতে চায়। বলে, 'আমার তো বয়স হয়েছে, কানে শুনিনা ভালো, তুমি কি একটু আমার মুখে বসে গান গাবে? তাহলে শুনতে পেতাম!' রুটি তখন শেয়ালের জিভের ওপর আয়েশ করে বসে গান শোনায়। গান শেষ হতে না হতেই শেয়াল তাকে গপ করে গিলে ফেলে। আমাদের সামাজিক চিত্রটাও এখন অনেকটাই এমন।

সমাজের সাধারণ মানুষগুলোর অবস্থা গোল রুটির মতই। যাই করুক, যাই বলুক, শেষ পর্যন্ত শেয়াল রূপী প্রশাসনের পেটেই যেতে হয়। না হলে সমাজে এত অনাচার, এত বিশৃঙ্খলা, এত দূর্নীতি......এত কিছু হওয়াড় অবকাশ আসে কোথা থেকে?? শিক্ষকেরা মেয়ের বয়েসী ছাত্রীদের নিপীড়ন করে 'সন্দেহাতীত ভাবে' রেহাই পেয়ে যায়। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্মারক বিক্রি করে দেওয়া হয়। আমরা যে বাঙ্গালি জাতি, লালন সংস্কৃতির জাতি তা মাথা নামাতে বাধ্য হয় ধর্মীয় অসুস্থ গোঁড়ামির কাছে।

সাম্প্রতিক বিষয়গুলিই মাথায় খেলছে। কিন্তু এরকম উদাহরন আরো আছে। লক্ষ লক্ষ আছে। অনেক ঘটনা জানা হয়না, অনেক ঘটনা আলোর মুখ দেখতে দেখতে আবার অন্ধকারে চলে যায়। কিন্তু এরকম হতেই থাকে।

গোল রুটি বারবারই শেয়ালের ধূর্ততার কাছে বলি হয়।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.