আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

‘তামাশা’, প্রতিক্রিয়া মিজানুর রহমানের

ফেলানী হত্যাকাণ্ডে বিএএফের আদালতে বিচারের রায়ে বাহিনীর অভিযুক্ত একমাত্র সদস্য অমিয় ঘোষকে খালাস দেয়ার পরদিন শনিবার এক প্রত্রিক্রিয়ায় তিনি একথা বলেন।
এদিকে আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ বলেছেন, ভারতের আইনে সুযোগ থাকলে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা যেতে পারে।
‘ন্যায়বিচার’ হয়নি মন্তব্য করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর বলেছেন, বিচারের বিষয়ে বিস্তারিত জেনে সরকার এই বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।
মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান দুপুরে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বলেন, “এর (বিচার) মাধ্যমে শুধু ফেলানীর আত্মার সঙ্গে নয়, তার পরিবারের সঙ্গে নয়, আমাদের পুরো জাতির সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। ”
এই রায়ের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিচারটি যেহেতু ভারতের অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়ায় হয়েছিল, সেহেতু পরবর্তী কোনো পদক্ষেপ নিতে হলে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কিছু করার সুযোগ কম।


“এরপরেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সরকারি পর্যায়ে বিষয়টি উত্থাপন করতে পারে। এটি যে ন্যায়বিচার হয়নি, তা ভারতকে জানানো প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। ”
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কিশোরী ফেলানী ভারত থেকে বাবার সঙ্গে কুড়িগ্রামে ফেরার পথে অনন্তপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়ে কাঁটাতারের বেড়ায় পাঁচ ঘণ্টা ঝুলেছিল।
এনিয়ে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর চাপ এবং বাংলাদেশের বারবার আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারের উদ্যোগ নেয় ভারতের সীমান্ত রক্ষা বাহিনী।
গত ১৩ অগাস্ট কুচবিহারে বিএসএফের বিশেষ আদালতে শুরু হওয়া ওই বিচারের সাক্ষ্য দিতে যান ফেলানীর বাবা ও মামা।

রায়ে তারা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
সকালে ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে আইনমন্ত্রী বলেন, “প্রত্যাশা ছিল, বিচারটি এমনভাবে হবে যেন ফেলানী হত্যার মাধ্যমে যে অবিচার হয়েছে, তার প্রতিবিধান হবে। সেটা সুষ্ঠুভাবে হয়নি। ”
সরকারের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী হিসেবে তা জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়ে তিনি বলেন, “সরকারের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দিতে হলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় দিতে পারে। এক্ষেত্রে বিজিবি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে, আর বিষয়টা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সীমানা।


স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর শনিবার কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী থানা উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বলেন, “রায় সংক্রান্ত বিস্তারিত বিবরণ এখনো পাওয়া যায়নি। বিস্তারিত বিবরণ পেলে সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হবে। ”
রায় প্রত্যাশিত হয়নি মন্তব্য করে তিনি বলেন, “ফেলানীর ব্যাপারে আমরা যে সুবিচার আশা করেছিলাম, সে সুবিচার এখনো পাওয়া যায়নি। ”
আইনজীবী হিসেবে মতামত জানিয়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি শফিক বলেন, “তাদের (শফিক) ওই আইনে আপিল করার বিধান থাকলে সেখাবেই যাওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। ”
তবে বিএসএফের আইন ও বিচার প্রক্রিয়ার বিষয়ে তা জানার কথা স্বীকার করে ব্যারিস্টার শফিক বলেন, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে হবে।


মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেছেন, তারা এ নিয়ে ভারতীয় মানবাধিকার কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।
“আমরা তাদের সহযোগিতা কামনা করব, যেন তারা নিজেরা উদ্যোগী হয়ে আপিল সংক্রান্ত কর্মকাণ্ডে নিজেদের সংশ্লিষ্ট করতে পারেন। ”
বিএনপির প্রতিক্রিয়া
ফেলানী হত্যার প্রত্যাশিত রা না হওয়ার জন্য সরকারের ভূমিকাকে দায়ী করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি শনিবার এক ঢাকায় এক সভায় বলেছেন, “ভারতের আদালত এমনটি করবে, এটাই স্বাভাবিক।
“কিন্তু দূঃখজনক হল আমাদের সরকারের ভূমিকা।

সরকারের যেভাবে প্রতিবাদ ও ক্ষোভ জানানোর জোরালো ভূমিকা রাখার কথা ছিলো, তা তারা রাখেনি। ”
ফখরুল বলেন, “ইসরাইল-প্যালেস্টাইন সীমান্ত ছাড়া বিশ্বের কোথাও বাংলাদেশের মতো প্রতিনিয়ত সীমান্ত হত্যার ঘটনা ঘটে না।
“বর্তমান সরকারের নতজানু পররাষ্ট্র নীতির কারণে সীমান্ত হত্যার কোনো জোরালো প্রতিবাদ বাংলাদেশের তরফ থেকে হচ্ছে না। ”

সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।