আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাকস্বাধীনতার বিরুদ্ধে কথা বলার স্বাধীনতা

কাগু ক্যান স্টার্ট অ্যা ফায়ার ইউজিং জাস্ট টু আইস কিউবস

বিভিন্ন পরিসংখ্যান-ভিত্তিক পূর্বাভাস থেকে দেখা যায় আগামী ২০৫০ সালে ফ্রান্সে মোছলেমরা হবে সংখ্যাগরিষ্ট জাতি । তখন গণতান্ত্রিকভাবে ফ্রান্সের সংসদে এছলামি আইন পাশ হবে । দোররা আইন, হিল্লা আইন , বউ-পেটানো স্বাধীনতা আইন । যুগে-যুগে বিপ্লবীদের, মুক্তিকামীদের, প্রথাবিরোদীদের আশ্রয়স্থল বলে পরিচিত ফ্রান্সের এছলামি স্বর্ণযুগ কেমন হবে ? দেখতে ইচ্ছা করে । ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকার বিশাল অংশ জুড়ে প্রতিক্রিয়াশীল, বাকস্বাধীনতা বিরোদী মোছলেমরা ঘাটি বেঁধে বসেছে ।

হাস্যকর ভাবে ঐসমস্ত অঞ্চলের বাক-স্বাধীনতা, মুক্তবু্দ্ধি, মানবিকতা এইসবের সুযোগ গ্রহন করেই মধ্য-প্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার দরিদ্র দেশগুলোর জনগন ঐখানে অভিবাসন নিয়ে যায় । এখন তারা বিভিন্ন অজুহাতে তাদের হোস্ট দেশগুলার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমে যায় । নামার স্বাধীনতা তো তাদের আছেই । মুহাম্মদের-কার্টুন, সালমান-রুশদীর নাইটহুড, ডাচ সিনেমা ফিৎনা এইসবের বিরুদ্ধে আন্দোলন, এইগুলোকে প্রত্যাহারের দাবী , মানুষের ভাব-প্রকাশের পদ্ধতিসমূহ পত্রিকা, সাহিত্য, চলচ্চিত্র এইসবের কন্ঠরোধ করারই আন্দোলন । ইউরোপ-কানাডাও পড়েছে শাঁখের করাতে ।

বাকস্বাধীনতার বিরুদ্ধে কথা বলার স্বাধীনতাকে যদিও তারা প্রশ্রয় দিতে চায়না, কিন্তু যখন এ দাবী আসে সংখ্যাগরিষ্ট জনগনের কাছ থেকে, তখন তাদের আরেক মূলনীতি গনতন্ত্রকে রক্ষা করতে গিয়ে শেষে থুথু ফেলে সেটা চেটে খেতে হয় । একটা পোস্ট করেছিলাম 'ছহি এছলামিক যুক্তিবিদ্যা' নামে । আজ দুপুরে ঘুম থেকে উঠে দেখি নাই । একটা নোটিশ দেয়া হয়েছে যেটার মাথামুন্ড কিছুই বুঝতে পারলাম না, ফন্টের সমস্যার কারণে । প্রচুর মাইনাস পড়ছিল সেটা গতকালই দেখেছি, কিন্তু পোস্ট মুছে ফেলা হবে ভাবতে পারি নাই ।

প্যাঁচালী আর সামহোয়ারের পার্থক্য কি দিনদিন ঘুচে আসছে ? সামহোয়ারে কিছু বেহুদা নতুন ফিচার যোগ করা হয়েছে । পোস্ট রিপোর্ট করুনের লাল বোতামটা দেখেই একটা কু-ডাক ডাকল মনের ভিতর । টেস্ট করার জন্য একটা আখাম্বা ঘুড়া-গাধার সঙ্গম সংক্রান্ত পোস্টে করে দিলামও রিপোর্ট । তখনই বুঝেছি, টেস্ট করার জন্যও যেখানি রিপোর্ট করা যায়, সেখানে সংঘবদ্ধ প্রতিক্রিয়াশীলদের কাছে এ বাটনটি কতটা মোহনীয় হবে । দুএকটা পুস্টে বাটনটি নিয়ে কয়েকজনের আবেগ-ঘন শীৎকারও দেখলাম ।

বুঝলাম অরগ্যানাইজড্‌ কন্ঠরোধের দিন আবার ফিরে এসেছে । কয়েকজন তো স্পাজমের আতিশয্যে মন্তব্যের জন্যও রিপোর্ট বাটনের জন্য আবেদন করে ফেলল । আমার পোস্টে একটা মাত্র গালি ছিল । এই বাটন যুগের আগে আরো অনেক গালির পোস্টও দিব্যি বহাল-তবিয়তে আছে । আমার পরম-শ্রদ্ধেয় ব্লগার রাসেল ভাইয়ের লেখাতেও আমি এর চাইতে বেশি গালি দেখেছি ।

তবে কি দর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত করার জন্য । এতদিন তো সবাই দিব্যি, আস্তিক নাস্তিকের, নাস্তিক আস্তিকের অনুভূতিতে আঘাত করে এসেছে । এই বাটন বাবাজির উদ্ভবের পর থেকেই এ কি কারিশম । চোরকে তার অনুভূতিতে আঘাত করা ছাড়া চোর বলার কোনো উপায় আছে কি ? বাক-স্বাধীনতা কমপ্রোমাইজ করার জিনিস না । এমনকি গণতন্ত্রের দোহাই দিয়েও না ।

এই সত্য না বুঝলে মৌলবাদীদের বাঁশের আইট্যা কারো হোগাকেই অক্ষত রাখবে না । লাল-নীল রিপোর্ট বাটনের আবির্ভাবে তারাই শীৎকার দিয়ে উঠে যারা প্রতিবাদের কন্ঠকে সহ্য করতে পারে না । সামহয়ারের মডারেটবৃন্দ তাদের সাথে শৃঙ্গার পর্যন্ত গিয়েছেন ভালো কথা, আর যাবেন না দয়া করে ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.