আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমরা কি আসলেই ভদ্র??

সত্য একদিন প্রকাশ পাবেই, আমি না করলে আপনি করবেন, না হলে আরেকজন করবে। প্রকাশ হবেই বিগত ২৩তারিখে ঢাকা গিয়েছিলাম কিছু ব্যক্তিগত কাজে। সেখানে কিছু অভিজ্ঞতা অর্জন করলাম। সেগুলো শেয়ার না করে পারলাম না; ঘটনা ১ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের দিত্বীয় গেটে বসে আছি। এম্ন সময় এক ভদ্রলোক (শিক্ষক বলে মনে হল) রিক্সা করে আসলেন।

রিক্সা থেকে নেমেই ঐ ভদ্রলোক( !!!) তার বাবার বয়সী রিক্সা চালক কে বললেন, এই ধর ভাড়া। রিক্সাচালক অত্যন্ত বিনয়ের সাথে বললেন, স্যার আমার কাছে ভাংতি নাই। ভাংতি নাই শুনেই ভদ্রলোক তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলেন। বললেন। ভাংতি নাই মানে? ভাংতি নিয়ে বের হতে পারিস না।

ভাড়া বেশি নেবার ধান্দা। আরও অনেক শ্রাব্য-অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার করলেন। আর ঐ রিক্সাচালক মলিন মুখে সব কথা সহ্য করলেন। শেষে বললেন, স্যার আপনে ১০টাকাই দেন। পরে ১০টাকা নিয়ে চলে যাওয়ার উদ্যেগী হতেই তাকে ডাকলাম, জিজ্ঞেস করলাম , চাচা কত টাকা ভাড়া ঠিক করেছিলেন?, উত্তরে বললেন ১২টাকা।

আর ঐ ভদ্রলোক ১৫টাকা দিয়ে ৩টাকা ভাংতি না পেয়ে ঐ কথাগুলো শুনালেন। অবাক হয়ে গেলাম ঐ ভদ্রলোকের আচরন দেখে। ৩টাকার জন্য এত কথা বললেন সেই তিনিই রিক্সাচালকের প্রাপ্ত ২টাকা না দিয়ে চলে গেলেন!!!! শিক্ষা মনুষত্ব্য বিকাশের অন্যতম মাধ্যম, এতে কোন সন্দেহ নেই। শিক্ষিত মানুষের আচরন হয় অন্যদের জন্য আদর্শ, তারা হন সকলের কাছে পরম পূজনীয়। কিন্তু বাস্তবে শিক্ষিত মানুষের কার্যকলাপে তা বুঝার উপায় নেই যে তারা আদৌ মনুষত্ব্যবান বা বিবেকবান।

তাহলে কি লাভ এত এত ডিগ্রী অর্জন করে? ঘটনা ২ পান্থপথের ফুটপাথে হাটতেছি উদ্দেশ্য বসুন্ধরা সিটি। এক গারমেন্টস কর্মী দ্রুতবেগে হেটে যাওয়ার সময় ধাক্কা খেলাম। দোষ আমারই, কারন আমিই অন্যমনস্ক হয়ে হাটার দরুন এই অনাকাংক্ষিত ঘটনার জন্ম। তারপরও সেই ব্যক্তি ক্ষনিকের জন্য দাঁড়িয়ে বলল, ভাই সরি, কাজে লেট হইছে তাই জলদি করতে গিয়ে ধাক্কা লাইগা গেল। আমি লোকটির ভদ্রতায় খানিকটা অবাক হয়ে বললাম, ভাই দোষ আমারই, আমি অন্যদিকে না তাকালে হয়ত ধাক্কা লাগত না।

আপনি চলে যান, আপনার লেট হচ্ছে। লোকটি আবারও সরি বলে দে ছুট ভংগিতে হেটে চলে গেলেন। এরপর সাবধানেই হাটা শুরু করলাম যাতে অন্যকারো কাজে বাধার কারন না হই। কিন্তু কোথা থেকে যেন এক ভদ্রলোকের আবির্ভাব হল। কিছু বুঝে উঠার আগেই উনার ধাক্কার আঘাতে ভারসম্য হারিয়ে পাশের একজনের সাথে ধাক্কা খেলাম।

তারপর নিজেকে সামলে নিলাম আর ভাগ্যকে দোষারোপ করলাম কারন আরেকজনের কাজে যেতে বাধার কারন হলাম। যাই হোক ভদ্রলোক কে আমিই সরি বললাম, যদিও আমার দোষ ছিলনা। ভদ্রলোকের ভদ্রতার লেশমাত্র নেই। উলটো আমাকে বলা শুরু করলেনঃ দেখে চলতে পারেন না, এভাবে মানুষকে ধাক্কা দেন, অন্ধ নাকি? Stupid কোথাকার ……। আমি এক চিলতে হাসি দিলাম যাতে উনি উনার ভুল বুঝতে পারেন।

কিন্তু হিতে বিপরীতে হল। আমাকে আরো কিছু কথা শুনতে হল যা না লেখাই শ্রেয় মনে করলাম। এমন সময় পাশের ঐ ব্যক্তি বললেন, ঐ মিয়া পোলাডারতো দোষ নাই। আপনেইতো তারে ধাক্কা দিলেন। আবার তারেই কথা হুনাইতাছেন।

যান মিয়া। সব শেষে আমি বললাম, আংকেল। বয়স অনেক হয়েছে। মানুষিকতা একটু বড় করেন। দোষ আপনার ছিল।

দেখে ভদ্রলোক মনে হলেই সে ভদ্র নয় তা আর একবার আপনাকে দেখে বুঝলাম। আর নিজে পথ দেখে চলুন তাহলে অন্তত কাউকে ধাক্কা দিবেন না। এই তিক্ত অভিজ্ঞতা সত্যি অসাধারন। ভদ্রতার লেবাশ পরে আছে কিন্তু ভদ্রতার লেশমাত্র নেই। আজব মানুষ!!আসলেই কি আমরা ভদ্র হতে পেরেছি? আমার মনে যথেষ্ট সন্দেহ আছে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।