অতি দক্ষ মিথ্যুক না হলে সত্যবাদিতা উৎকৃষ্ট পন্থা
টিভিতে জিল্লুর রহমানের উল্লসিত আনন্দে ঝিলমিল মুখ দেখে একটা কথাই মনে পড়লো, বৃত্তের পরিধি বরাবর ছুটে লাভ নেই, শেষ পর্যন্ত আবারও সুচনায় পৌঁছাতে হয়।
এত আশা নিয়ে শুরু করা দুর্নীতিবিরোধী অভিযান, দরকষাকষি, ব্ল্যাকমেইলিং এবং মাইনাস টু ফর্মুলার অবসান হয়ে গেলো আজকে। অবশেষে তারেক জিয়া জামিনে মুক্তি পেয়েছে, তার জামিনের শেষ অনুমতিপত্র আজ আদালত থেকে পৌঁছেছে জেলহাজতের মহাপরিচালকের হাতে।
বাংলাদেশে বসে অনেক কুৎসিত দৃশ্যই দেখতে হয়েছে এত দিন, তবে তারেক পড়ে গিয়ে কোমড়ে ব্যাথা পাওয়ার পর বিএনপি মহিলা দলের কুমারী অকুমারী মেয়েদের চোখের পানি দেখে অশালীন একটা ভাবনা মনে এসেছিলো। আসলেই তো তারেকের মাজা ভেঙে গেলে মহিলা দলের কর্মীনিদের কি হবে?
খালেদা জিয়া এখন সমঝোতায় সম্মত, গতকাল সাখাওয়াৎ হোসেন, এবং নির্বাচন কমিশনের অন্যান্য সদস্যরাও ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন বিএনপির সাথে অতীত আচরণের জন্য।
বাংলাদেশে টিকে থাকতে হলে সবাইকে আসলে বিএনপি আর আওয়ামীলীগের নেতাদের মন জুগিয়ে চলতে হয়। সে আর্মি মেজর আর বিগ্রেডিয়ার, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত অধ্যাপক, সবাই একে একে রাজনৈতিক নেতাদের গোয়া চেটে যায়, আমাদের এই চাটাচাটিতেই আনন্দ।
তবুও জিল্লুর রহমানের আনন্দে ঝলমল মুখ দেখে নিজের বিষাদ লুকাতে পারি না। টিভিতে সংবাদ দেখে মা যখন বলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার একদম পঁচে গেছে তখন পঁচনের গন্ধটা নাকে লাগে না, আমি অনেক আগে থেকেই অনুমাণ করেছিলাম এমনটাই ঘটবে, শেষ পর্যন্ত পায়ে ধরে সেধেই বিএনপিকে নির্বাচনে রাজী করতে হবে এই সরকারকে। নিরাপদ এক্সিট কিংবা পলায়নের রাস্তা নির্মাণের জন্য হলেও এই মুক্তি আর জামিনের ছলের প্রয়োজন ছিলো।
আমার মা কোনো রাজনীতি সচেতন মানুষ না, বরং সরকারের নিয়মনীতি মেনে চলতে চান, এমন কি আমার এখনও ভোটার না হওয়ায় আমার উপরে খুব বিরক্ত মা বোধ হয় এবার আমার অনাগ্রহের কারণটা বুঝতে পারবে।
আমি আশাহত হই নি মোটেও তবে আমার মা আশাহত ,তার আশা ছিলো হয়তো অনেক দিন পরে দেশের দুর্নীতিবাজদের উচিত শিক্ষা হবে, তবে এমনটা যে বাংলাদেশের বাস্তবতা নয় তা প্রতি ৫ বছর পর পর ভোট দিয়ে নাগরিক কর্তব্য পালন করা মাকে বুঝানো যাবে না। বুঝানো যাবে না নির্দিষ্ট একটা দলের প্রতি আনুগত্য এবং অন্ধ ভক্তি সব সময়ই আমাদের আতঙ্কিত করে রাখে, একদল অমানুষকে আমাদের নেতা হিসেবে মেনে নিতে হয়, তাদের তাবেদারী হয়ে দাঁড়ায় আমাদের অন্যতম বিনোদন।
তারেক জিয়ার মাজার হাড় ভেঙে যাওয়ায় ক্রন্দসী বিএনপি মহিলা দলের কর্মীদের কান্না দেখে যেমন অশালীন লেগেছিলো আর কালো চশমা পড়া জিল্লুর হোসেনের হাসি মুখ দেখে তেমনও অশালীন অনুভুতি হলো।
জিল্লুর হোসেন কি চেটে আসলেন?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।