ফেলানী খাতুন হত্যা মামলায় অভিযুক্ত বিএসএফ জওয়ান অমিয় ঘোষকে নির্দোষ ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর নিজস্ব আদালত। রায়ের কপিটি অনুমোদনের জন্য বিএসএফ মহাপরিচালকের কাছে পাঠানো হয়েছে। তবে এ রায়কে ইতোমধ্যে প্রত্যাখ্যান করেছে ফেলানীর পরিবার। ভারতের মানবাধিকার সংস্থাগুলোও রায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেছে। বিএসএফ বা ভারত সরকারের পক্ষ থেকে এ রায় সম্পর্কে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশকে কিছু জানানো হয়নি। ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন বলেছে, বিচার প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত রায় এখনো হয়নি। তারা চূড়ান্ত রায়ের জন্য অপেক্ষা করার কথা বলেছেন। স্মর্তব্য, ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের কুচবিহার সীমান্তে ফেলানী খাতুন নামের এক কিশোরী ভারত থেকে বাংলাদেশে আসার সময় বিএসএফের গুলিতে প্রাণ হারায়। তার মরদেহ কাঁটাতারের বেড়ার ওপর কয়েক ঘণ্টা ঝুলে থাকে। সে অমানবিক দৃশ্যের ছবি গণমাধ্যমে ছাপা হলে দেশে-বিদেশে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। ভারতীয় মানবাধিকার সংস্থাগুলোও সোচ্চার হয়ে ওঠে এই নৃশংস সীমান্ত হত্যার ঘটনায়। এ ব্যাপারে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। গত ১৩ আগস্ট কুচবিহার শহরের ছয় কিলোমিটার দূরে গোহাটি ফ্রন্টিয়ারের ডিআইজি সিপি ত্রিবেদীর নেতৃত্বে পাঁচ বিচারক অভিযুক্ত বিএসএফ জওয়ানের বিচার শুরু করেন। তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধি ৩০৪ ধারা (অনিচ্ছাকৃত খুন) এবং বিএসএফ আইনের ১৪৬ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। গত শুক্রবার বিএসএফ আদালতের রায়ে অমিয় ঘোষকে হত্যার দায় থেকে রেহাই দেওয়া হয়। পশ্চিমবঙ্গের মানবাধিকার সংগঠন মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ এ রায়কে বিচারের নামে প্রহসন বলে অভিহিত করেছে। তাদের মতে, ঘর বন্ধ করে গোপনে যে বিচার হয় তা কখনো বিচার হতে পারে না। মানবাধিকার সংগঠনটির পরিচালক এ রায়কে ভারতীয় সংবিধানের অবমাননা বলেও অভিহিত করেছেন। ফেলানী হত্যা নিঃসন্দেহে মানবাধিকার লংঘনের সুস্পষ্ট ঘটনা। এর দায় থেকে অভিযুক্তকে রেহাই দেওয়ার অর্থই হবে বিএসএফকে মানবাধিকার লংঘনকারী বাহিনী হিসেবে প্রমাণ করা। রায় চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে বিএসএফ সে অপমান থেকে নিজেদের রেহাই দেওয়ার বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্ত নেবে আমরা তেমনটিই দেখতে চাই।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।