ইহা একটি তেলাপোকা ব্লগ, ম্যালাদিন ধইরা টিকা আছে, তেলাপোকার মত।
আমার কয়েকটা সহপাঠীর সাথে কথা বলার পর এই পোস্টটা না দিয়ে থাকতে পারলাম না।
তাদের মুখ থেকে শোনা কিছু কথা শুনে আমি স্তব্ধ হয়ে গেলাম।
ওদের সাথে গল্প করতে করতে এক পর্যায়ে ওরা বলছে, বাংলাদেশে ৩৬ বছর ধরে রাজাকারদের বিচার হয় নি, তাহলে এতদিন পরে কেন হবে?
আবার বলছে, বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের পর যত জন পাকিস্তানী সৈন্য আত্মসমর্পণ করেছিল, তাদের যদি বিচার না করে দেশে ফেরত পাঠানো হয়, তাহলে রাজাকার দের কেন বিচার করা হবে?
আবার আরেকটা কথা, শান্তি কমিটি নাকি বানানো হয়েছিল এদেশের মানুষকে শান্তিতে রাখার জন্য।
আরো একটা কথা বলল, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখন নাকি একটা পলিটিক্যাল ইস্যু।
বারবার পুরানো কাহিনী ঘেঁটে জামাতকে হেনস্তা করার জন্য বারবার রাজাকার, আলবদর দের বিচার চাওয়া হচ্ছে।
লজ্জায় আমার মাথা নত হয়ে আসছে।
বর্তমান প্রজন্মের ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া মেধাবী ছাত্র কি করে মনে এই ধারণা নিয়ে চলতে পারে? আবার সেটা জনসম্মুখে প্রকাশ করার ও সাহস পায়?
লজ্জায় আমার মাথা হেঁট হয়ে যায়, যখন দেখি ১৪ই ডিসেম্বরে রাজাকাররা বুদ্ধিজীবিদের শহীদ মিনারে ফুল দেয়, মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ (!) বানায়, আবার তারই ব্যানারে মুক্তিযোদ্ধাদের ডেকে এনে লাঞ্ছিত করে।
আমার একটা ধারণা ছিল, সামনে সুদিন আসছে। যত রাজাকার, আলবদর, শান্তিকমিটি আছে, সবগুলা বুইড়া রাজাকার কিছুদিনের মধ্যেই মরে ভুত হয়ে যাবে।
সত্যিকারের একটা ভাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলাম। স্বপ্ন বুঝি স্বপ্নই রয়ে যায়।
আন্তর্জাতিক একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুবাদে আমার কয়েকজন পাকিস্তানী ক্লাসমেটের সাথে আমার এবিষয়ে কথা হয় প্রায়ই। তারা গোপনে হলেও স্বীকার করেছে যে, ১৯৭১ সালের ঘটনার জন্য তারা নিজেদের দোষী মনে করে। এবং পাকিস্তানের বর্তমান প্রজন্ম ১৯৭১ সালের গণহত্যার পক্ষে কখনোই নয়।
যদিও তারা জনসম্মুখে সেটা স্বীকার করতে নারাজ।
সেখানে আমাদের দেশের ছেলেরা কি করে এই রকম মেন্টালিটি নিয়ে বসবাস করে?
আমি বাংলাদেশের বর্তমান প্রজন্মকে দোষ দিই না, কারণ, ওদের ব্রেইন ওয়াশের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে অনেক আগে থেকেই। তখন আমরা কেউ ওদের মাঝে পরিবর্তনটা লক্ষ্য করলেও কেন এই পরিবর্তন তা নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামাই নি। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীরা তাদের অশুভ বীজ বপন করে চলেছে নতুন প্রজন্মের মাঝে। হয়তো দেখবেন আপনারই কর্মক্ষেত্রে কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে নানান নামে নানান ঢঙে চলছে এদের গোপন কর্মযজ্ঞের অশুভ ষড়যন্ত্র।
এদের বিরুদ্ধে এখন থেকেই রুখে না দাঁড়ালে ৩০ লক্ষ শহীদের আত্মা আমাদের ক্ষমা করবে না।
এবার একটু আশার কথা শোনাই।
আমারই আরেকজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু আরিফুল হোসেন তুহিন মুক্তিযুদ্ধের দলিল সংগ্রহের একটি বেশ ভাল উদ্যোগ নিয়েছে।
লিংক এখানে
Click This Link
ওর মত কিছু দেশপ্রেমিক ছেলের জন্যই আমরা আবার স্বপ্ন দেখতে পারছি। হোসেন, দোস্ত, তুই কি জানিস তোকে নিয়ে আমার গর্ব হচ্ছে?
লেখাটা মনে হয় খাপছাড়া হয়ে গেল।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।