আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাজশাহীর ডিসির বিরুদ্ধে বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের নির্দেশ উপেক্ষার অভিযোগ



জাহাঙ্গীর আলম আকাশ, রাজশাহী রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্র“পের নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের দফায় দফায় নির্দেশ উপেক্ষিত হয়েছে। সড়ক পরিবহন গ্র“পের নির্বাচন বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রনালয় রাজশাহীর জেলা প্রশাসকের প্রতি বার বার নির্দশনা প্রদান করার পরও তা আজও কার্যকর হয়নি। বিশেষ প্রভাবশালী মহলের চাপে সড়ক পরিবহন গ্র“পের কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশ করে নির্বাচনকে বিলম্বিত করে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের সর্বশেষ গত ২০ আগষ্টের চিঠিতে রাজশাহী জেলা প্রশাসনকে আগামি ১২০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে দীর্ঘ সাত বছর ধরে সড়ক পরিবহন গ্র“পের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি।

দীর্ঘদিন যাবত অনির্বাচিত কমিটি দ্বারা গ্র“প পরিচালিত হওয়ায় পরিবহন মালিকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে। সড়ক পরিবহন গ্র“প সূত্রে জানা গেছে, গ্র“পে মোট সদস্য সংখ্যা ৫৩০ জন। রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্র“পের সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় বিগত ২০০০ সালে। দুই বছর মেয়াদী গ্র“পের কার্যনির্বাহী কমিটির মেয়াদপূর্তির আগেই বিগত ২০০১ সালে জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন আন্নুকে বিতাড়িত করে সরকার সমর্থরা। এরপর থেকে আর কোন নির্বাচন হয়নি সড়ক পরিবহন গ্র“পের।

সূত্র জানায়, রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্র“পের সদস্য সাধারণ পরিবহন মালিকরা ২০০৭ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর বাণিজ্য মন্তনালয়ে একটি আবেদন করেন। এরই প্রেক্ষিতে বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব নন্দিতা সরকারের সই করা (স্মারক নং-বাম/টিও-১/টিটিজি-২/৯০ (অংশ-১)/৩০ তারিখ ৫/২/০৮) এক পত্রে কার্যনির্বাহী কমিটির সময়সীমা তিন মাস বাড়ানো হয়। একই চিঠিতে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে তিন মাসের মধ্যে গ্র“পের নির্বাচন সম্পন্ন করার জন্য সাধারণ সম্পাদক মনজুর রহমান পিটারকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছিল। বাণিজ্য মন্ত্রনালয় থেকে সাধারণ সম্পাদককে পূর্বের দেয়া চিঠির অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চেয়ে গত ২৭ ফেব্র“য়ারি আবারও একটি পত্র দেয়া হয়। সূত্র মতে, রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্র“পের ৯৮ জন সদস্যের যৌথ অভিযোগের প্রেক্ষিতে বাণিজ্য মন্ত্রনালয় রাজশাহীর জেলা প্রশাসককে (ডিসি) অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দেয়।

কিন্তু তা কার্যকর না হওয়ায় বাণিজ্য মন্ত্রনালয় (স্মারক নং-বাম/টিও-১/টিজি-২/৯০ (অংশ-১)/১০১ তারিখ-১৮/৩/০৮) রাজশাহীর ডিসির কাছে গত ২৪ মার্চের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ প্রদান করে। কিন্তু জেলা প্রশাসক তার তোয়াক্কা না করায় বাণিজ্য মন্ত্রনালয় গত ১৭ এপ্রিল পুনরায় এক পত্রে (স্মারক নং-বাম/টিও-১/টিজি-২/৯০ (অংশ-২)/১৫১, তারিখ-১৭/৪/০৮) জেলা প্রশাসককে রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্র“পে প্রশাসক নিয়োগের বিষয়ে পুলিশ প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা করে বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে সুষ্পষ্ট মতামত প্রদানের জন্য নির্দেশ দেয়। কিন্তু ডিসি কোন মতামত প্রদান না করায় বাণিজ্য মন্ত্রনালয় গত ২০ মে অতি জরুরি এক পত্রে রাজশাহীর ডিসিকে অতি জরুরি ভিত্তিতে মতামত প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের গত ৩ জুনের পত্রে রাজশাহীর ডিসির দায়িত্বে অবহেলার বিষয়টি ষ্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। মন্ত্রনালয়ের চিঠিতে (স্মারক নং-বাম/টিও-১/টিজি-২/৯০ (অংশ-২)/২২৯, তারিখ-৩/৬/০৮) ডিসিকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়, ‘আপনি ইতিপূর্বে প্রশাসক নিয়োগের ক্ষেত্রে নেতিবাচক মতামত ব্যক্ত করলেও কি কারণে অবস্থার উন্নতি হচ্ছে না তার কোন বর্ণনা দেননি।

গঠনতন্ত্র পরিপন্থি কোন কার্য ব্যবস্থা দীর্ঘকাল চলতে দেয়া যুক্তিযুক্ত নয়। একজন প্রশাসক নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত কমিটির নিকট কেন দায়িত্ব হস্তান্তর করতে পারবে না তা বোধগম্য নয়। ইতোমধ্যে এফবিসিসিআই বায়রা নামক সংগঠনের নির্বাচন প্রশাসকের মাধ্যমে যেভাবে পরিচালিত হয়ে সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব হস্তান্তর সম্ভব হয়েছে তা রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্র“পের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হতে পারে। পুলিশি তদন্তের বিলম্বের কারণে যাতে নির্বাচন কার্যে বিলম্ব না ঘটে তা দেখার দায়িত্ব জেলা প্রশাসকের। বিভাগীয় কুমিশনারের সাথে আলোচনাক্রমে ৩০ জুনের মধ্যে প্রশাসক নিয়োগ করে মন্ত্রনালয়কে অবহিত করুন।

’ রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্র“পের সাধারণ সদস্যরা গত ১ জুলাই বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের সচিব বরাবর আবারও একটি লিখিত অভিযোগ প্রেরণ করেন। এরই প্রেক্ষিতে মন্ত্রনালয় সরাসরি রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিককে গ্র“পের প্রশাসক নিয়োগ করে (স্মারক নং-বাম/টিও-১/টিজি-২/৯০/(অংশ-১)/৩৪৯, তারিখ-২০/৮/০৮)। এব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইব্রাহিম খলিল’র সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি এখন আমার আয়ত্বে নেই। আপনি এডিসি জেনারেলের সাথে যোগাযোগ করুন। ’ রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আবদুল বারীক এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘জেলা প্রশাসক মহোদয় এবিষয়ে এখন পর্যন্ত আমাকে কোন নির্দেশনা প্রদান করেননি।

ফলে আমি এখনও প্রশাসক হিসেবে যোগদান করতে পারিনি। ’ অবিলম্বে সুষ্ঠু একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নির্বাচিত প্রতিনিধির কাছে গ্র“পের দায়িত্ব হস্তান্তর করার দাবি জানিয়েছেন রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্র“পের সাধারণ সদস্যরা। রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্র“পের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন আন্নু অভিযোগ করে বলেন, ‘বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের নির্দেশ বারবার উপেক্ষিত হচ্ছে। এজন্য মূলত জেলা প্রশাসকই দায়ি। বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা চাই অবিলম্বে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.