আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ
বাকরখানি
ভাঙ্গা বাকরখানি
বাকরখানি পুরান ঢাকার ঐতিহ্য। আমরা ছোটকালে জানতাম এই জিনিস শুধু আমাদের পুরান ঢাকার অলিগলিতে মেলে। একটু বড় হয়ে দেখলাম পুরান ঢাকার ঐতিহ্য নতুন ঢাকার কনফেকশনারিতে প্লাস্টিকের প্যাকেটে পরিবেশিত হচ্ছে। যদিও আমি ঢাকাইয়্যা না তবে পুরো জীবনটাইকে কেটেছে পুরান ঢাকায়। পুরান ঢাকার অধিবাসিদের অনেকেই তাদের সকালের নাস্তা শুরু করেন মিস্টি বা মাংসের সাথে বাকরখনি দিয়ে।
অনেকে চায়ের সাথেও খান। পুরান ঢাকায় বড় হওয়ায় আমি জানতাম বাঙালি মাত্রই বাকরখানির সাথে পরিচিত। তবে ব্লগে এসে বুঝলাম আমার ধারণা ভুল।
বাকরখানি ময়দা, তেল, পানি ও খানিকটা সোডা দিয়ে তৈরি হয়। অনেকটা রুটি বানাবার মতই উপাদান গুলো মিশিয়ে ভাল মত মাখিয়ে খামির তৈরি করা হয়।
সেই খামির ছোট ছোট রুটির আকার মত বেলে, মাঝে দুইটা দাগ কাটা হয়। তারপর বিশেষ চুলার ভিতরে সেগুলোকে গরম করা হয়। গরম করার পরে বাকরখানি শক্ত হয় তবে অল্প চাপেই দিলেই ভেঙ্গে ঝুরঝুরা হয়ে যায়। প্রতিটার দাম এক থেকে দুইটাকা। অনেক ধরণের বাকরখানি পাওয়া যায়।
মিস্টি (চিনি দেওয়া), নোনতা, পনিরের, ঘিয়ের, মাংসের আরো অনেক অনেক রকম। ঘি, পনির, মাংস ইত্যাদির হলে দাম বেশি হয়।
বাকরখানির নামকরণের ইতিহাস একটু জটিল। একবার কোন এক টিভি চ্যানেলে শুনেছিলাম ইতিহাসটা। খুব সম্ভবত মুঘল আমলে মুর্শিদ কুলি খানের ছেলে আগা বাকর খান নর্তকি খানি বেগমের প্রেমে পড়ে।
খানি বেগমের জন্য আগা বাকর মুর্শিদ কুলি খানের উজিরের ছেলের সাথে যুদ্ধ করেন, বাঘের সাথে লড়াই করে। এই সব মারামারিতে একপর্যায়ে খানি বেগম নিহত হয়। আগা বাকর খান ও খানি বেগমের প্রেম কাহিনীর ইতি ঘটে তখনই। তবে পুরান ঢাকাবাসি তাদের নামকে ধারণ করেছে ঐতিহ্যবাহি খাবার “বাকরখানি”-র মাধ্যমে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।