তি তি আমি বাঙালি। আমার আর অন্য কোনো পরিচয় নেই। আমি বাঙালি হিসেবে গর্বিত। আবার আরেকটিবার জন্মালে এই বাঙলার মাটিতে জন্মাবো, আরেকবার মরলে, এই মাটিতেই মরবো।
আমি বাঙালি।
আমার ভাষা বাঙলা। অপ্রয়োজনে বাঙলার মধ্যে বিদেশী শব্দ ঢুকানো পছন্দ করি না। আমি বাঙলা ভাষা বাঙলা হরফেই লিখতে পছন্দ করি। ইংরেজি হরফে কিংবা অন্য হরফে বাঙলা ভাষা লেখা যাবে না। সেটি ভাষাকে অপমান করা হবে।
কারণ ভাষার সাথে নিজস্ব হরফের প্রাণের সম্পর্ক। মানুষের যেমন মনুষ্যত্ব না থাকলে মানুষ হতে পারে না, ঠিক তেমন বাঙলা ভাষা যদি বাঙলা হরফে লেখা না হয়, তা কখনোই বাঙলা ভাষা হতে পারে না। শুনেছিলাম, পাকিস্তানিরা উর্দু হরফে বাঙলা লিখতে বলেছিলো। কিন্তু বাঙালিরা সেটিও মেনে নেয় নি। এই বাঙলা ভাষার জন্যই বাঙালিরা প্রাণ দিয়েছে।
এখন আধুনিক যুগ। যে কোনো মোবাইল ফোন, কম্পিউটার থেকে বাঙলা দেখা ও লেখা যায়। অনেকের মোবাইল ফোনে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাঙলা লেখা যায় না। তাই তারা ইংরেজি অক্ষরে বাঙলা লেখে। কিন্তু বাঙলা ভাষাকে এভাবে ইংরেজির কাছে বিসর্জন না দিয়ে ইংরেজি লিখলে হয়।
ভালো ইংরেজি জানা না থাকলে ভুল ইংরেজি লিখতে হবে এবং বাঙলাদেশ সরকারের উচিত, বাঙলাদেশে যে মোবাইল ফোনগুলো আসবে, প্রতিটি মোবাইল ফোনে বাঙলা স্বয়ংক্রিয়ভাবে লেখা যায়, এমন সিস্টেম করা। এটি অতীব প্রয়োজনীয় একটি বিষয়।
আমি এদেশের মানুষকে বর্তমান রাজনীতি করতে নিষেধ করবো। বাঙলাদেশের রাজনীতি প্রকৃত অর্থে রাজনীতি নয়, এটি কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি বানানোর একটি ব্যবসা। তাই বাঙলাদেশের মানুষকে বলছি, তোমরা এ রাজনীতি করো না, এ রাজনীতিকে ঘৃণা করো, রাজনীতি বিষয়ে সচেতন হও, যোগ্য নেতা বেছে নাও, যে সবার কথা ভেবে দেশ পরিচালনা করবে।
বাঙলাদেশের মানুষ খারাপ। সেই সমস্ত খারাপ মানুষেরা সত্যিকারের বাঙালি নয়। বাঙলাদেশে জন্মগ্রহণ করলে বাঙালি হওয়া যায় না। বাঙালি হতে গেলে মন থাকা লাগে, দেশ ও মানুষের জন্য মনে সত্যিকারের ভালোবাসা থাকা লাগে। যদি বাঙলাদেশে জন্মালে বাঙালি হওয়া যেতো, তবে যারা বাঙলাদেশে জন্মেও বাঙলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করেছে, তারাও বাঙালি হতো।
বাঙলাদেশের কথা আমি আগে ভাবি। পরে অন্য দেশের কথা। আমি যেমন আমার নিজের পরিবারের আগে খোঁজ নেবো, তেমন এই বাঙলাদেশের প্রতিটি পরিবার আমার এবং আমি এই বাঙালিদেরই আগে খোঁজ নেবো। আমার বাঙলাদেশে যত অন্যায়, দুর্নীতি থাকুক, এটিই আমার দেশ, এটিই আমার মা। যদি বাঙলাদেশে কারোর থাকতে সমস্যা হয়, তবে অন্য দেশে চলে যাওয়া উচিত।
এ দেশের ভিক্ষুক থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রীও দুর্নীতির মধ্যে। সেই হিসেব করলে কোনো সন্তান তাঁর বাবার টাকায় লেখাপড়া করতো না, বাবার টাকা দিয়ে দিন চালাতো না; ভালোভাবে বাঁচার স্বপ্ন দেখতো না। তাই আমাদের এই সোনার বাঙলা যতই খারাপ হোক, এটিই আমাদের দেশ। এ দেশের বিপদের সময় আমাদেরকে আগে এগিয়ে আসতে হবে।
আমার কোনো ধর্ম নেই।
ধর্ম মানুষের জন্য। অমানুষের জন্য ধর্ম নয়। আমি মানুষ হওয়ার চেষ্টা করছি। যদি ধর্ম অমানুষ মানতো, তবে ধর্মাপ্রাণ মানুষেরা ধর্ষণ, খুন করতো না। তাই ধর্ম মানার আগে মানুষকে মানুষ হতে হবে।
ইসলাম ধর্ম কিছু দিক থেকে আমার একদম অপছন্দ। একজন মানুষ কী পোশাক পরবে, একজন মানুষ বাহিরে যেতে পারবে কি না, এ বিষয়ে কারোর হস্তক্ষেপ আমার পছন্দ হয় না। ইসলাম ধর্ম নারীর সব অধিকার সঠিকভাবে দেয় নি। একজনের কল্লা কেটে না দিয়ে ভালোভাবে ভাবলে বোঝা যাবে, নিজে, নিজের মা-বোন, আত্মীয়-স্বজনও ধর্ম মানে না, নিজের এবং নিজের মা-বোন, আত্মীয়-স্বজনেরও ধর্মের সবদিক ভালো লাগে না। তাই কল্লা যদি কাটতেই হয়, তবে অন্যের কল্লা কাটা বাদ দিয়ে, আগে নিজের এবং নিজের পরিবারের মানুষের কল্লা কাটতে হবে।
কোনো ধর্মে মানবতা নেই। ইশ্বর এবং পাপের দোহাই দিয়ে অন্যায় বন্ধ করা যায় না। তাই-ই যদি হতো, তবে ধর্মপ্রাণ মানুষেরা অসহায় মানুষদের দিকে তাকালে তাঁর পাশে দাঁড়াতো, সব মানুষকে আপন ভাবতো। মানুষ হতে পারলেই মানবতাকে খুঁজে পাওয়া যাবে।
আমি মানুষ আকৃতির সবাইকে একটি কথা বলবো, তোমরা আগে মানুষ হও।
দেখবে, মারামারি, হানাহানি আর নেই। অমানুষের মতো প্রয়োজনে ক্ষেপে উঠো না, সব সময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে ক্ষেপে ওঠো।
আগের বাঙালিদের মাঝে এত বৈষম্য ছিলো না। আজ বাঙালিরা দলে-দলে, শ্রেণীতে-শ্রেণীতে, ধর্মে-ধর্মে বিভক্ত। এক দলের মানুষেরা, এক শ্রেণীর মানুষেরা, এক ধর্মের মানুষেরা, আরেক দলের মানুষদের, আরেক শ্রেণীর মানুষদের, আরেক ধর্মের মানুষদেরকে শত্রু ভাবে, ঘৃণা করে।
এরা বাঙালি নয়। এরাও প্রয়োজনে ঐ যুদ্ধাপরাধীদের মতো হবে, হতেই হবে। কারণ এদের মনে দেশ ও মানুষের জন্য সত্যিকারের ভালোবাসা নেই।
১৯৭১ সালের মানুষেরা ঐক্যবদ্ধ ছিলো। এখন বাঙলাদেশের মানুষ বিভক্ত।
তাই এই ঐক্যবদ্ধতার অভাবের সুযোগ নিয়ে অন্যরা অত্যাচার করছে। একজনের মাধ্যমে দেশ পরিবর্তন করা সম্ভব না। সবাইকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুঁখে দাঁড়াতে হবে। শুধু রুঁখে দাঁড়ালেই হবে না, দেশ ও মানুষকে ভালোবাসতে হবে, আপন ভাবতে হবে।
তোমরা আমাকে একটি খাঁটি বাঙালি জাতি দাও, আমি তোমাদেরকে একটি সুন্দর বাঙলাদেশ উপহার দেবো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।