ভালো আছি
(র্পূবের অংশের পর)
ভাই এক ডজন কলা ও দুইটা ফুল পাইন্ড রুটি দেন তো, বলে একশ টাকার একটি নোট দোকানদারকে এগিয়ে ধরলাম। । প্রচন্ড ভীড় সবাই যে যা পারছে কিনে খাচ্ছে,রুটি,কলা,মুড়ি,চানাচুর,কেক,প্যাটিস ইত্যাদি। এমন একটা জাইগাতে র্দুঘটনা ঘটল যেখানে একটি মাত্র হোটেল,তাও আবার বন্ধ হয়ে গেছে। বুঝলাম বিপদ যখন আসে তখন চারপাশ থেকে আসে।
কলা ও রুটি নিয়ে মোট ৪৮ টাকা বিল হয়েছে। দোকানদার টাকা তুলে নিয়েছে বেশ আগেই কিন' ভীড়ের জন্য বাকী টাকা এখনও ফেরত দিতে পারেনি। বাকী টাকা ফেরতে চাইলাম, দিতাছি ভাইজান বলে পাঁচ বারের বার ফেরত দিল । ৫২ টাকা ফেরত দেবার কথা কিন' দোকাদার ৫২ টাকা তো দিলই সাথে ১০০ টাকার চারটি নোটও দিল । বললাম ভাইজান কি করছেন কত টাকা দিচ্ছেন।
বলল কেন আপনার ৪৮ টাকা বিল হয়েছে আপনি ৪৫২ টাকা ফেরত পাবেন না। না ভাই ৫০০ টাকার নোট দেয়নি তো আমি ১০০ টাকার নোট দিয়েছি। দোকানদার ক্যাশ খুলে বলল ভাই মষ্করা কইরেন না ৫০০ টাকার নোট ক্যাশে একটায় আছে ঐডা আপনি দিছেন আমি ভাই ঈমানদারি ব্যাবসা করি কথা বাড়ায়েন না যানগা। মনে মনে বললাম বাহ দুনিয়ায় সত্য কথার কোন দাম নাই দুনিয়া বদলাইয়া গ্যাছে,একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ছাড়তে ছাড়তে টাকাটা নিয়ে বেড়িয়ে আসলাম।
আন্টি এইযে আপনার কলা ও রুটি বলে ৪৫২ টাকা দিতে গিয়ে পূর্বের ঘটনার কথা মনে পড়ায় শুধু ৫২ টাকা ফেরত দিলাম আর বাকী টাকাটা পকেটে রেখেদিলাম।
ইতমধ্যে আন্টির সাথে সম্পর্কটা বেশ ঘনিষ্ট হয়েছে। সম্পর্ক ঘনিষ্ট হওয়ার পেছনে ট্রনের টয়লেটটা বেশ অবদান রেখেছিল। উথলী আসার পুর্বে আন্টির মেয়ের হঠাৎ টয়লেট চাপে। ট্রেনে এমনিতেই ঝাকুনির জন্য চলাফেরা করা বেশ একটু কষ্টসাধ্য ব্যাপার তার উপর টয়লেট তো আরেক বিষয়। তো মেয়েকে নিয়ে উনি অনেক ঝামেলার মধ্যে দিয়ে টয়লেটে নিয়ে গেলেন।
কিন' কিছুক্ষণ এর মধ্যেই দেখি বেশ ব্যস- হয়ে উনি ফিরে আসছেন । বাবা টনি তাড়াতাড়ি আমার সাথে একটু আসতো । যেভাবে হন-দন- হয়ে উনি আসলেন তাতে কোন কিছু বলার অপেক্ষা রাখে না । তাড়াতাড়ি উনার সাথে ছুটলাম, গিয়ে দেখি টয়লেটের দরজার সামনে মেয়েটি দাড়িয়ে আছে। কি ব্যাপার ভুরু জোড়া কুঁচকে তাকাতে যাব তখনই আন্টি বললেন বাবা সুমি কিছুতেই টয়লেটে বসতে পারছে না আমাকে ধরে দাড়িয়ে থাকতে বলছে কিন' আমি নিজেই ঠিকমত দাড়াতে পারছিনা ওকে কি ধরব।
তাই আমি সুমিকে যখন ধরব তুমি একটু আমাকে ধরে দাড়াবে বাবা।
আমি কিছু বলার আগে উনি আবার বললেন তুমি আমার ছেলের মত (হয়ত উনি জামাই এর মত বলতে চেয়েছিলেন) এইটুকু উপকার করবে না বাবা। কি আর করা মেয়ে টয়লেটে বসে আছে মেয়ের হাত ধরে মা দরজার কাছে দাড়িয়ে আর আমি মার হাত ধরে দরজার বাইরে দাড়িয়ে আছি। দৃশ্যটা কল্পনা করলে এখনও আমার গায়ের লোম দাড়িয়ে যায়।
দোকান পাট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গ্রামের অনেকে বড় বড় হাড়িতে করে বিক্রয়ের জন্য খিচুড়ী রান্না করে ষ্টেশনে নিয়ে এসেছে।
ট্রেনের ৮০০ জন যাত্রী ও কর্মচারীর মধ্যে অনেকেই কিনে খাচ্ছে তো আমি ও কয়েকজন মিলে গেলাম খিচুড়ী খেতে কিন' কি র্দুভাগ্য গিয়ে দেখি খিচুড়ী শেষ। শুধু খিচুড়ী তার উপর আবার খাবার পানির ব্যাবস'া নেই তাতে কি এত জন ক্ষুর্ধাত মানুষের মধ্যে অল্প সংখ্যক খাবার কি করে থাকে। ক্ষুধার জ্বালা যে কি অনেকেই মনে হয় তা আজ প্রথম বারের মত বুঝতে পারল। (চলবে)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।