প্রান্তিক জনগোষ্ঠিগুলোর ভাষা ও জাতিগত অস্তিত্বের সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও সমমর্যাদা দাবী করছি
এই না হলে সাংবাদিকতা! ডেইলি স্টার লিখেছে - "In tea gardens, the Monipuri labourers listen to puthi with musical instruments like dhol, mridanga, korotaal and harmonium." সাইমন জাকারিয়াকে উদ্ধৃত করে লেখা রিপোর্টে ডেইলি স্টার চা-শ্রমিক এবং মণিপুরী দুটি আলাদা জাতিসত্তাকে গুলিয়ে ফেলেছে। মণিপুরীরা চা বাগানে থাকে না, চা বাগানের শ্রমিকরা ভিন্ন জাতি, তাদের নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি রয়েছে। কথা হলো পুঁথিপাঠের মতো গুরুগম্ভীর বিষয় কিভাবে ঢোল, মৃদংগ, করতাল বা হারমোনিয়ামের সাথে পরিবেশিত হয় বোধগম্য নয়। আর দেশের প্রথম সারির একটি জাতীয় ইংরেজী দৈনিকে বহুল প্রচলিত "Manipuri" শব্দটিকে এভাবে ভুল বানানে "Monipuri" লেখার হেতু কি?
মণিপুরীদের পুঁথিপাঠের ঐতিহ্য সহস্রাধিক বছরের। কার্তিক মাসে মহারাস উৎসবের আগে মাসব্যাপী পুঁথিপাঠ ও শ্রবন মণিপুরী লোকঐতিহ্যের একটি গুরুত্বপুর্ণ অংশ।
পর্বটি "নিয়মপালি" বা "নিয়মসেবা" নামে পরিচিত। নিয়মপালিতে ভক্ত শ্রোতাদের সম্মুখে মহাভারত, রামায়ন, ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ ইত্যাদি পৌরাণিক ও ধর্মীয় গ্রন্থের পাঠ ও ব্যাখ্যা করা হয়। একজন বা দু'জন বিদ্বান ও পন্ডিতশ্রেণীর ব্যক্তি এই দ্বায়িত্ব পান। যিনি পাঠ করেন তাকে বলা হয় "থিপা" আর যিনি ব্যাখ্যাদান করেন তাকে বলা হয় "য়ারিলিপা"। পুঁথিপাঠ শেষ হলে ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্র সহযোগে বৈষ্ণব পদাবলী গাওয়া হয়।
এরপর ভক্তদের মধ্যে প্রসাদ বিতরন করা হয়। নিয়মপালি মুলত মণিপুরীদের লোকশিক্ষার একটি অংশ। এখানে ধর্মীয় গ্রন্থের অমৃতবাণীর আড়ালে সততা, মুল্যবোধ ও নৈতিকতার সামাজিক শিক্ষা দেয়া হয়।
* ইংরেজী ব্লগে মণিপুরীদের কার্তিকা ও নিয়মপালি সংক্রান্ত আরেকটি লেখা
* ইউ টিউবে দেখুন মণিপুরী পুঁথিপাঠের ভিডিও
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।