আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইউরো রিভিউ: গ্রুপ অভ ডেথ (ফ্রান্স ০-রোমানিয়া ০,হল্যান্ড ৩- ইটালি ০)



ফুটবল অঘটনের খেলা হলেও একটা অঘটন কখনো ঘটেনা কেন যেন,গ্রুপ অভ ডেথ কখনোই সোজা বা নিশ্চিত কিছু হয়না। এবারের ইউরোর গ্রুপ অভ ডেথেও ঘটনা জিলাপির প্যাঁচ খেয়ে গেছে,শুরুতে মোটামুটি মহা বিরক্তিকর খেলায় ফ্রান্স ড্র করলো গোলশূন্য রোমানিয়ার সাথে,একটা ব্যাপার বুঝিয়ে দিয়ে যে জিদানের জায়গাটা আরো কয়েকজন মিলেও পূরণ করা যাবেনা,আর ইটালি বেশ একটা ভূটানসুলভ (এখন বাংলাদেশসুলভও বলা যায়,দুঃখের সাথে) ফুটবল খেলে জিলাপির প্যাঁচটাকে বোম্বাই সাইজ করে দিল। প্রথম ম্যাচটার কথায় যদি আসা যায়,নিশ্চিতভাবেই এটা নিয়ে কথা বলা সময় নষ্ট,এবারের ইউরোর সবচেয়ে ঘুমঘুম ম্যাচ বলা যায় এটাকে। হেনরি ছিল না ফ্রান্সের,কিন্তু নতুন সেনসেশন বলে রব ওঠা বেনজিমার খেলা দেখে মনে হল মাঝে মাঝেই মিডিয়া একটু ওভারএস্টিমেট করে ফেলে,দুর্বল কয়েকটা শট নেয়া ছাড়া আর তেমন কিছু তাকে করতে দেখা গেল না। রিবেরী বিশ্বকাপে যতটা ভাল খেলেছেন ইউরোতে শুরুটা তার কিছুই হয়নি,রোমানিয়াও আহামরি কিছু দেখাতে না পারায় ফলাফল মনে হয় গোলশূন্যটাই ঠিক আছে।

দ্বিতীয় ম্যাচটা দেখার মতই ছিল,যদি আপনি ইটালির সমর্থক না হয়ে থাকেন। শেষ কবে ইটালিকে এমন ছন্নছাড়া উদ্দেশ্যহীন ফুটবল খেলতে দেখেছি মনে করতে পারছি না। এমনকি যদি হল্যান্ডের প্রথম অফসাইড গোলটা বাদও দেয়া যায়,আজকে যা খেলেছে ইটালি,তাতে তাদের হার অলৌকিক কিছু না হলে নিশ্চিতই ছিল। ক্যানাভারো না থাকলেও ইটালির ডিফেন্স এতটা ফাঁকা হয়ে যাবার কথা নয় কিন্তু বাস্তবে তাই ঘটলো,হল্যান্ড বারবারই মাঝখান দিয়ে ঢুকে গেল। ৩টা গোল খাওয়া দেখলেও বোঝা যায় আজকে ইটালির রক্ষণ কেমন ছিল,সাথে যদি হল্যান্ডের মিস গুলো যোগ করা যায়,বলা লাগবে ডোনাডুনির আবার হিসাব কষতে হবে দল নিয়ে।

আক্রমণভাগ খেলেছে তার চেয়েও খারাপ,সোজা বল নিয়ে হল্যান্ডের ডিফেন্স ফুঁড়ে বের হয়ে যাবার চেষ্টা করেছে তাদের ফরোয়ার্ডরা,ফলাফল হল মোটামুটি ভীতি জাগানোর মত একটাও আক্রমণ হয়নি। লুকা টনির কাছে বলই পৌঁছাতে দেয়নি হল্যান্ডের ডিফেন্ডাররা,শুরুতে নামানো ডি নাটালিও কি খেললেন সেটা তিনিই ভাল জানেন,সব মিলে ফন ডার সার আজকে বেশ আরামেই ছিলেন। হল্যান্ডের প্রশংসা অবশ্য মুক্তকণ্ঠে করতে হয়,পর্তুগাল আর গতকাল জার্মানির পর,আজ হল্যান্ডও দেখার মত ফুটবল খেলেছে। নিসলরয় আর স্নাইডার তাদের দারুণ ফর্মটাকে প্রথম ম্যাচেই প্রমাণ করেছেন,আক্রমণে গেছে দারুণ গোছালোভাবে,বিশেষ করে প্রচণ্ড গতিতে তিন ফরোয়ার্ড একসাথে কাউন্টার অ্যাটাকে উঠে গিয়ে কোণাকুণি থ্রু থেকে দেয়া স্নাইডারের দ্বিতীয় গোলটাকে বলা যায় ইটালির ওষুধ ইটালিকেই খাওয়ানো। আরো কিছু মিসও হয়েছে,কিন্তু হল্যান্ডের প্রায় সবক'টা আক্রমণই ছিল ভীতি জাগানো,ইটালিয়ান ডিফেন্সকে অসহায়ই মনে হয়েছে,বড় রকমের অঘটন না হলে,গ্রুপ অভ ডেথ থেকে,হল্যান্ডের সবার আগে ওঠাটাই স্বাভাবিক মনে হচ্ছে।

ইটালির সমর্থকরাও অবশ্য আশা করতে পারেন,কারণ ইটালির ঐতিহ্যই হল অত্যন্ত জঘন্যভাবে কোন টুর্নামেন্ট শুরু করে শেষমেশ দারুণ কিছু করে ফেলা। আশা করে থাকবে ফ্রান্স আর রোমানিয়াও,কারণ তাদের ১টা পয়েন্ট তো আছে। সব মিলে,এই বোম্বাই জিলাপীর প্যাঁচ খুলতে গ্রুপ পর্বের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলেই মনে হয়,ততদিন,সংবাদ চ্যানেলগুলোর ভাষায় বলি,সাথে থাকুন,ফুটবল দেখুন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।