আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইন্টেলের বেআক্কল প্রচারণাঃ অবাক হয়ে দেখি



দুম করে জ্বর তাই সারাদিন বিছানায় চিতপাত। আশা করি এট্টু রেস্ট করলেই বডি ফের ফিট হইয়া যাইব। আজকাল কয় জ্বর বলে কুনো অসুখ না এইটা অসুখের উপসর্গ। তাই অসুখ সারাও জ্বর যাইবোগা। প্রযুক্তির বাজারে বিগ ড্যাডিদের মধ্যে ইন্টেল একটি।

ইন্টেলের সহপ্রতিষ্ঠাতা মাইকেল মূরের সূত্রকে এখনো বাঁচিয়ে রেখেছে ইন্টেল। প্রথমে বলা হয়েছিল প্রতি দুবছরে বিজ্ঞানের অগ্রগতির কারণে দেখা গেল বিজ্ঞান সূত্রের আগে দৌড়ায়। তাই আইন বদলানো হল প্রতি দেড় বছরে মাইক্রোপ্রোসেসরের ক্ষমতা দ্বিগুণ হবে। এখন পর্যন্ত সেই সূত্র মোটামুটি মেনে এবং সত্য বলে প্রমাণ করছে ইন্টেল। সামনে আর কতদিন পারবে সেটিই প্রযুক্তিবিদদের আগ্রহের বিষয়।

শখ করে কটলার পড়ার পরে থেকেই বিজ্ঞাপনের ওপর আমার বেশ আগ্রহ। কিভাবে বৃহত কর্পোরেট পৃথিবীতে কোটির ঘরের অংক খরচ করা হয় একটি বিজ্ঞাপনের জন্য সেটি বেশ মজার বিষয়। তাই আমি বেশ মজা করেই দেখি সেমি সাজেসটিভ টনে কিভাবে গ্রাহককে আস্তে আস্তে টোপের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তুক মাঝেমধ্যে যে ব্যাকফায়ার হয়না তা না। গত বছরদুয়েকে ইন্টেল এমনি দৌড়ের ওপর রেখেছে প্রযুক্তি বিশ্বকে, দ্বিতীয় বৃহত্তম চিপ প্রস্তুতকারী এএমডি একেবারেই বেড়ালের মিউমিউ অবস্থা।

সমস্যা হল, খুব শিগগিরি এই অবস্থা বদলানোর কোন লক্ষণ পর্যন্ত নেই। ভায়া আর এনভিডিয়া চেষ্টা করছে চিপ বাজারে ঢুকার, কিন্তু ইন্টেল আবার এটম প্রোসেসর বের করে আবার খেলা ফাইনাল অবস্থা। আশা করি এই হাড্ডাহাড্ডির লড়াইয়ে ভোক্তারা উপকৃত হবেন। যদিও আশা করেছিলাম এটম রেঞ্জের ল্যাপিগুলো আরো অনেক স্বল্পমূল্যের হবে। তারপরেও ইন্টেলের মত কোম্পানী মাঝেমধ্যে এমন সব বেকুবী করে, শুধু তাকিয়ে দেখা ছাড়া কিছু করার থাকেনা।

যেমন ইন্টেলের বর্তমান রেঞ্জের কনজুমার প্রসেসর কোর টু ডুয়ো। আমি আমার জীবনে এইরকম আহাম্মক নাম দেখিনি। প্রথমত প্রসেসরের ভবিষ্যত যখন স্পিডি সিঙ্গেল কোরের বদলে স্লো মাল্টিকোর, তখন নাম দেয়ার সময়ে একটু হুঁশের সাথে দিলেই হয়। প্রথম জেনারেশন ডুয়েল কোর প্রোসেসর এক চিপের ভেতরে নাম কোর ডুয়ো চমৎকার নাম। সেই সাথে যেগুলোর একটা কোর ভেজাইল্যা সেগুলোরে কোর সলো ব্র্যান্ডিং করে বিক্কিরি, তাও ঠিক আছে।

কাহিনী প্যাচ খেয়ে গেল তার পরের প্রজন্মে। ইন্টেলের বিজ্ঞানীরা কোর ডুয়োর ওপরে গবেষণা করে আরেকটু এগিয়ে নিয়ে গেলেন। তখন মার্কেটিং টীম মনে করল এটা বিরাট মার্কেটিং এর সুযোগ। তাই দিব্যে এক টেকনলজীর একই প্রোসেসর (ক্যাশ, বাস স্পীড হ্যানত্যান আপগ্রেড করে) নাম দিয়ে দিল কোর টু ডূয়ো। আমি নিজেই অনেকদিন পর্যন্ত এই ধারণায় ছিলাম যে, কোর ডুয়ো দুই প্রোসেসরের, সেইটারে যদি ডাবল করা হয় তাহলে তো চার প্রসেসর হয়।

অতএব কোর টু ডুয়ো আসলে কোয়াড কোর। যখন আবিষ্কার করলাম যে আসলে ফাঁকিবাজি , হালি প্রসেসরের সম্পুর্ণ আলাদা একটি প্রসেসর পরিবার আছে যেগুলো কোয়াড কোর নামেই বিক্কিরি হয়, তখন মেজাজ এমন খারাপ হয়েছিল, যে বলার না। ইন্টেলের এইরকমই কান্ডজ্ঞানহীন আরেকটি প্রচারণা রীতিমত জনরোষে পরিণত হয়েছিল, পরবর্তীতে ইন্টেল বাধ্য হয় সেই বিজ্ঞাপনটি সরিয়ে নিতে। বিজ্ঞাপনের ছবিটি ব্লগেই সংযুক্ত করে দিলাম। বিজ্ঞাপনের মূল থীম ছিল, মাল্টিকোর প্রসেসরের সাহায্যে একসাথে বেশী কাজ একবারে করিয়ে নেয়া সম্ভব।

কিন্তু তার জন্য যে ছবিটি ব্যাবহার করার হয়েছে তাতে বহু চায়ের কাপেই ঝড় ওঠে। বলা হয় এই বিজ্ঞাপনে এক শ্বেতাঙ্গের অধীনে আধা ডজন কৃষ্ণাঙ্গ কাজ করছে এই ছবিটি আপত্তিকর, একই সাথে কৃষ্ণাঙ্গ দৌড়বিদগণ সকলেই কুর্ণিশের ভঙ্গিতে মাথা নিচু করে আছে। ইন্টেল চালু মাল, জলদি করে বিজ্ঞাপনচিত্র বাতিল করে দিয়ে জনরোষের থেকে সরে আসে। আশা করি সামনে বিজ্ঞাপনের বিষয়ে বা ব্র্যান্ডিং এর ব্যাপারে আরেকটু সচেতন হবে

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.