শুধু স্বপ্নগুলোকে ছুতে চাই
দক্ষিন আফ্রিকা ক্রিকেট দল যখন বাংলাদেশে সিরিজ খেলছে ঠিক তখন আমরা ৬ জন উড়াল দিলাম দ: আফ্রিকার উদ্দেশ্যে। প্রজেক্টের কাজে ওখানে থাকতে হবে ৩ মাসের মত। দুবাই হয়ে জোহানেসবার্গ প্রায় ১৪ ঘন্টার জার্নি। যখন অবশেষে জোহানেসবার্গ পৌছুলাম তখন প্রায় রাত প্রায় ৯ টা। অ্যামিরেটস এর বিখ্যাত খাওয়া দাওয়া আর ইন্টারটেইনমেন্ট সত্ত্বেও সবার অবস্থা কাহিল।
তারপর আবার ব্যাগেজ এর জন্য অপেক্ষা। বেল্ট সংক্রান্ত কি গোলযোগের কারণে ব্যাগেজ পেতে পেতে আরও দেড় ঘন্টা কেটে গেল। কাস্টমস পেরিয়ে বাইরে এলাম পুরো বিধ্বস্ত অবস্থায়। আমরা থাকব প্রিটোরিয়ায়। বাইরে সহকর্মী ইয়ান আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিল।
কপাল আর কাকে বলে, বের হতে গিয়ে দেখা গেল ইয়ান পার্কিং টিকিট হারিয়ে ফেলেছে। এবার জরিমানা থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য ছুটাছুটি শুরু করল। আমরা গাড়িতে অপেক্ষা করছি। অবশেষে আরও ২০ মিনিট পর আমরা প্রিটোরিয়ার দিকে রওনা দিলাম।
জোহানসবার্গ থেকে প্রিটোরিয়া প্রায় এক ঘন্টার রাস্তা।
রাতের অন্ধকার আর ক্লান্তি মিলিয়ে বাইরের দৃশ্য দেখার আর তেমন ইচ্ছা ছিলনা তখন। পথে ম্যাকডোনাল্ডে থামলাম রাতের খাবার খাওয়ার জন্য। সেখানে দুটো জিনিস ভালভাবে টের পেলাম। একটা হল সংস্কৃতির ভিন্নতা, কিউতে সামনে দাড়ানো এক কাপল আমাদের রীতিমত অস্বস্তিতে ফেলে দিল; অন্যটি হল খাবারের স্বাদ, এরা লবণ বেশি খায়। এরপর সোজা ফ্ল্যাটে।
ছোট একটা ডুপ্লেক্স ফ্লাটে আমাদের থাকার ব্যবস্থা হয়েছে। নিচতলায় রান্নাঘর আর বসার ঘর, উপরতলায় দুটি শোবার ঘর, বাথরুম আর টয়লেট। তিনজন থাকব এখানে আর অন্য তিনজন আরেকটা ফ্ল্যাটে। তবে আজ রাতে সবাই এখানে থাকব। ইয়ান বাসা বুঝিয়ে দিয়ে চলে গেল, আমরা লাগেজ ছড়িয়ে বসে পড়লাম।
রাত দেড়টা বেজে গেছে, সবাই মোটামুটি বিধ্বস্ত। এর মাঝেই আমাদের মধ্যে সবচেয়ে ধার্মিক মহি ভয়াবহ একটা আবিস্কার করল- টয়লেটে ফ্লাশ ছাড়া পানির কোন ব্যবস্থা নাই, এমনকি কোন পাত্রও নাই। আমাদের জন্য মহা সমস্যা বৈকি। উপায়ান্তর না দেখে সমাধানটা মহিই বের করল- এক বোতল পানি নিয়ে টয়লেটে ঢুকে গেল। আমরা টিভি ছেড়ে সোফায় গা এলিয়ে দিলাম।
কিন্তু টিভিতে ছবি আসার সাথে সাথে আবার সোজা হয়ে গেলাম। রাহেদ ভাই অন্যদিকে মুখ ঘুরালো, আর অন্যরা চোখ বড় বড় করে ফেলল। টিভিতে তখন স্যাটারডে নাইট চলছে। চ্যানেল ঘুরিয়ে একটা স্পোর্টস চ্যানেলে এসে থামলাম। কিছুক্ষন পর ফ্রেশ হয়ে ঘুমাতে গেলাম।
(চলবে)
পরের পর্ব
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।