আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার নাস্তিক ভাবনা(৪): ভোগবাদী নাস্তিক

নিউক্লিয়ার সন্ত্রাস মুক্ত বিশ্ব চাই

আমার দৃস্টিতে নাস্তিকতার প্রকারভেদে এটাই শেষ প্রকার যাদের আমি বলি ভোগবাদী নাস্তিক। মানুশ মাত্রই ভোগী - কেউ কম কেউ বেশী, কেউ নিয়ম-কানুন হালাল-হারাম মেনে ভোগ করে আবার কেউ এ'সবের তোয়াক্কা করে না। মানুষ যখন মানবিক দুর্বলতার কারনে কোন অন্যায় ভোগ করে ফেলে তখন আপাতত আনন্দিত হলেও পরে অনুতপ্ত হয়। মনে হয় দুনিয়ার কেউ না দেখলেও শ্রস্ঠা তো সবই দেখেছেন, দুনিয়ার কোন পুলিশ না ধরলেও মৃত্যুর পরে তো ঠিকই জবাবদিহী করতে হবে। তখন মানুষের মনে এক ধরনের দন্দ্ব তৈরী হয় - একদিকে ভোগের আনন্দ -যৌবনে মেয়েদের টিজ করা বা পতিতালয়ে গমন, মদ-গাজা-হিরোইনসহ যেকোন ধরনের নেশা, অবৈধ উপায়ে বিশাল সম্পদের মালিক হওয়া এমনকি প্রতিপক্ষকে আচ্ছামত গালিগালাজ করে মনের ঝাল মিটান(বিশেষ করে ব্লগারদের ক্ষেত্রে) সবই উপভোগ্য, তাই না? - অন্যদিকে পরকালিন শাস্তির ভয়।

এই দন্দ্ব থেকে বাঁচার জন্য মানুষ তিন রকম আচরন করে থাকে - এক. অনুশোচনা এবং তওবা করে অন্যায় থেকে ফিরে আসার চেস্টা করে এবং পরবর্তীতে আর অন্যায় ভোগের পথে পাবাড়ায় না - এরা ভাল মানুষ। দুই. কিছু লোকদেখান দানখয়রাত করে, মাজারে বা ভন্ড পিরের আস্তানায় টাকা পয়সা খরচ করে - মনে করে পীর বাবা বা মাজার তাকে পরকালিন আজাব থেকে বাঁচাবে। এরা নি:সন্দেহে ভন্ড এবং এই শ্রেনীর মানুশের কাছ থেকে টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয়ার জন্যই মাজারপুজারী-ভন্ডপীরসহ সবধরনের ধর্ম ব্যাবসায়ীরা ওৎপেতে থাকে। তিন. এরা দ্বীতিয় শ্রেনীর চেয়েও এক ধাপ এগিয়ে। এরা এদের ভোগ-বিলাশে কাউকে ভাগ দিতে রাজি নয়।

এরাই কথিত ভোগী নাস্তিক যারা সরাসরি শ্রস্ঠাকেই অস্বীকার করে। যদি আল্লাহই না থাকে, পরকালের বিচার, বেহেস্ত-দোজখ কিছুই না থাকে, এই দুনিয়াই যদি সব হয় তাহলে আর দুনিয়ার মজা লুটতে বাধা কোথায়? নাস্তিকতার আড়ালে তারা তাদের সব অপকর্মের বৈধতা দিয়ে ফেলে। জীবন যখন একটাই আর দুনিয়ার বাইরে যখন কিছুই নাই তখন জীবনের সব সখ আহ্লাদ এখানেই মিটিয়ে নেয়া উচিৎ নয় কি? এদের মনোভাব সুন্দর ভাবে ব্যাক্ত হয়েছে এখানে- দুনিয়াটা মস্ত বড়, খাও দাও ফুর্তি কর, আগামী কাল বাঁচবে কি না বলতে পার। অথবা নগদ যা পাও হাত পেতে নাও বাকির খাতায় শুন্য থাক দুরের বাদ্য কি লাভ শুনে, মাঝখানে যে বেজায় ফাক অথবা এই বেলা ভাই মদ খেয়ে নাও কাল নিশিথের ভরসা কই চাঁদনি জাগিবে যুগ যুগ ধরি আমরা তো আর রব না সই সব সমাজেই কিছু অপরাধ প্রবন মানুষ থাকে। তাদের অপরাধ প্রবনতা নিয়ন্ত্রনে রাখার জন্যই প্রতিটি দেশে আইন কানুন তৈরী করা হয়, পুলিশসহ বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা থাকে এদের দৃস্টান্তমুলক স্বাস্তির ব্যাবস্থা করে অন্যদেরও সতর্ক করে দেয়ার জন্য।

কিন্তু শুধুমাত্র পুলিশি ব্যাবস্থার মাধ্যমে কি অপরাধ প্রবনতা সম্পুর্ন নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব? আমাদের বাস্তব অভিজ্ঞতা কিন্তু তা সমর্থন করে না। এজন্যই ইসলামসহ সকল ধর্মই বিশ্বাসের দিক থেকে এদের নিয়ন্ত্রনের জন্য পরকালিন স্বাস্তি-পুরোষ্কারের ব্যাপারে জোর দিয়ে থাকে-তা বেহেস্ত-দোজোখ, স্বর্গ-নরক বা পুর্নজন্ম যেভাবেই হোক না কেন। এই অপরাধপ্রবন মানুষেরা যদি নাস্তিকতার রোগে আক্রান্ত হয় তাহলে এদের অপরাধ প্রবনাতা মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। এক জন চিন্তা করতেই পারে - "এই জীবনই তো সব, এখানে মদ-গাজা-হিরোয়ীনের স্বাদ না নিলে তো জীবনই বৃথা। জীবনে যদি একটা বাড়িই করতে না পারলাম, মার্সিডিজ বা বি.এম.ডব্লিউ যদি না চালাতে পারলাম তাহলে আর বেঁচে থেকে লাভ কি।

" ফলে তার কাছে বৈধ-অবৈধতার সংগাই পাল্টে যাবে - যা তার জন্য আনন্দের-সুখের তাই বৈধ এরকম চিন্তা চলে আসতে পারে। এধরনের চিন্তা যে ব্যাক্তির নিজের এবং সমাজের জন্য খতিকর তা নিশ্চয়ই বুঝিয়ে বলতে হবে না। আমার প্রথমদিকের একটা পোস্টের শিরনাম ছিল : নাস্তিকতা: স্বল্পবিদ্যার ভয়ঙ্কর পরিনতি। উম্মনা রহমান সেই পোস্টে প্রশ্ন করেছিলেন আমি নাস্তিকদের ভয়্ঙ্কর কেন বলেছি। এবার আশা করি বিষয়টা পরিস্কার হয়েছে - আমি এই ভোগী নাস্তিকদের অথবা নাস্তিকদের এই দুনিয়াকেই সব ভবে যথা সম্ভব মজা লুটবার মানসিকতাকেই ভয়ঙ্কর বলেছি।

কোন সমাজে যদি নাস্তিকতা ব্যাপকহারে চর্চা করাহয় তাহলে সেই সমাজে ভোগবিলাসের প্রতিযোগিতা তৈরী হতেই পারে যা সমাজকে ক্রমান্নয়ে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাবে। এজন্যই সত্যিকারের ধর্মচর্চা একটা সুস্থ সমাজ গঠনের জন্য অপরিহার্য।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.