শুরুতেই বলে রাখি - ইদানীং নাস্তিকেরা "ব্লগে ধর্ম প্রচার করতে জামাতিরা এসেছেন ! জামাতিদের জন্য ব্লগে আসা বন্ধ করতে হবে -ইত্যাদি ইত্যাদি খিস্তি-খেউড় সমান তালে আওড়ে চলেছেন ! আমি যেহেতু এইসব অযৌক্তিক প্যাচালে কান পচাই না (যেহেতু আমি জামাতি না, জামাতিরা মিটিং-মিছিল ফেলে ব্লগে নাস্তিকদের সাথে গল্প করতে নিশ্চয়ই আসবেন না !) কাজেই 'স্টিফেন হকিং, নাস্তিকতা ও ইসলাম' বইটির পরবর্তী চ্যাপ্টার তুলে ধরলাম আজকে :
লেখক : মুহাম্মাদ সিদ্দিক
প্রকাশক : মদীনা পাবলিকেশন্স
৩৮/২ বাংলাবাজার, ঢাকা।
প্রকাশকাল : ২০০০ সাল
এখন ড. হকিং প্রসঙ্গে আসা যাক। ড. হকিং তার "এ ব্রিফ হিস্ট্রি অব টাইম" বইয়ে স্বীকার করেছেন যে, তাঁর এই দুশো পৃষ্ঠার বইটি তার ছাত্র ব্রিয়ান হুইট সংশোধন করতে সাহায্য করেন। তাছাড়া বহু পন্ডিত ব্যক্তি তাকে সাহায্য করেছেন এই বইটির উৎকর্ষ সাধনে। মাইকেল হোয়াইট ও জন গ্রিবিন নিউইয়র্কের "রাইটার্স হাউস"-এর সভাপতি আল-জাকারম্যান এবং আমেরিকার বান্টাম বুকস- প্রকাশনী সংস্থার সম্পাদক গুজার্ডি'র সূত্রে লেখেন :
(অনুবাদ : জুকারম্যান সম্পাদক পিটার গুজারদির সম্পর্কে প্রচেষ্টা সম্পর্কে বলেন : আমি মনে করি হকিং-এর প্রতি পৃষ্ঠার ব্যাপারে সম্পাদক পিটার গুজারদি দু থেকে তিন পৃষ্ঠার সম্পাদকীয় পত্র হকিংকে লেখেন।
যে যে বিষয়ের উপর মনে হয়েছে যে, তার আরো বর্ণনা প্রয়োজন, কারণ অন্য পাঠক গণের নিকট তা বোধগম্য হব না গুজারদি তা হকিংকে জানান। পৃষ্ঠা :২২৯/ )
মাইকেল হোয়াইট ও জন গ্রিবিন লেখেন : ( অনুবাদ : ১৯৮৪ সালের যীশুখ্রিস্টের জন্মদিনের ভেতর পান্ডুলিপির প্রথম খসড়া লেখা হয় এবং পুনর্বার লেখা শুরু হয় নববর্ষে অর্থাৎ ১৯৮৫ সালে (পৃষ্ঠা-২৩১) । এদিকে বইটির সম্পাদক পিটার গুজারদি সম্পাদনার কাজ করে যেতে লাগলেন। হকিং-এর ভিতর পিটার গুজারদি ও অন্যান্য পাঠকগণের পরামর্শ অনুযায়ী পান্ডুলিপির কয়েকটি অংশ পরিত্যাগ করলেনও কয়েকটি অংশ নতুন করে লিখরেন। হকিং বেশ কয়েকটি অঙ্ক ও সমীকরণ পরিশিষ্টে দিতে চান যাতে সম্পাদক প্রবল বাধা প্রদান করেন।
কারণ, পাঠকগণ এসব পছন্দ করবে না। (সূত্র : হোয়াইট ও গ্রিবিন, পৃষ্ঠা-২৩৭)।
যাই হোক, হকিং বেশ কয়েকটি প্রাথমিক 'ভার্সন' লেখেন এই বইটির মুসাবিদায়। বান্টাম বুকস লাইব্রেরীর পক্ষে সম্পাদক পিটার গুজারদি পাতার পর পাতা সমালোচনা, মন্তব্য ও প্রশ্ন পাঠান ড. হকিং এর নিকট এমন বিষয় সম্পর্কে যা হকিং বইটিতে ঠিকভাবে প্রাথমিক খসড়াতে প্রতিফলিত করেননি। ড. হকিং বলেন (অনুবাদ : পরিবর্তন করার জন্য আমি একটি বড় তালিকা পাই সম্পাদক থেকে)।
হকিং তার পুস্তকের 'স্বীকৃতি' অংশে এসব উল্লেখ করেছেন। ড. হকিং-এর দুশো পৃষ্ঠার পদার্থবিদ্যার বইটি বের করতে কতজনের সাহায্য-সহযোগিতা, সংশোধনী, পরিবর্তন গ্রহণ করতে হয়েছে তা প্রণিধানযোগ্য। হযরত মুহাম্মাদ (স) এর মুখনিঃসৃত কোরআন মাজীদ যা সাধারণ ছাপাতে প্রায় ৫০০ পৃষ্ঠার ন্যায়, তা তিনি কতবার খসড়া করেন, কতবার কাটাকাটি করেন, কতজনের সংশোধনী অন্তর্ভুক্ত করেন ? একবারও না। লেখাপড়া না জানা একজন ধর্ম প্রচারক একবার যা 'ডিক্টেট' করেছেন তাঁর লেখকদের কাছে (অবশ্য আল্লাহর নির্দেশে) তাই আজ আমাদের সামনে রয়েছে। হকিংদের বইয়ের মতো হযরত (স) কোরআন মাজীদের খসড়া বারে বারে বদলান নাই।
তবু কি হযরতের বাণীকে পদার্থবিদদের নীচে দিতে হবে ? হকিং-এর অদ্যকার মন্তব্য আগামীকাল নতুন বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারে অচল হয়ে যেতে পারে। কোরআন মাজীদ মূলত: ধর্মীয় গ্রন্থ হলেও বিজ্ঞান সম্পর্কে এতে যে-সব তথ্য ও তত্ত্ব এসেছে তার কোনো পরিবর্তন হবে না। নতুন নতুন বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারে কোরআনের বৈজ্ঞানিক বক্তব্যসমূহ কোনভাবে পরিবর্তন করা যাবে না। কারণ, কোরআন হলো বিজ্ঞানের স্রষ্টা, বিশ্বের স্রষ্টা কর্তৃক প্রণীত যদিও তা হযরত (স) এর মুখ দিয়ে প্রকাশিত। কোন কোন আয়াত আপাতত দৃষ্টিতে অবৈজ্ঞানিক মনে হলেও , নবতর বৈজ্ঞানিক।
গবেষণায় কোরআনের বৈজ্ঞানিক তথ্য ও তত্ত্ব সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে, হবেই হবে। সত্য একই, সত্য বহু নয়। তাই কোরআনে যা সত্য তাই বিধৃত হয়েছে।
-------------------------(চলবে : পরবর্তী চ্যাপ্টারের জন্য অপেক্ষা করুন)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।