event: Click This Link
আমরা গত ২৪ জানুয়ারী রাতে ঢাকা থেকে কাপ্তাইয়ে উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেই। ২৫ তারিখে কাপ্তাই পৌছে ইন্ঝিন বোটে যাত্রা শুরু করি কিছুক্ষণের মধ্যে পৌছে যাই রাইক্ষং খালের শেষ বিন্দু পুরাতন রাইঝং বাজারে(এখন বাজার নেই),এখন কেবল রাইক্ষং ধরে উজানে চলা। বিলাইছড়ি হয়ে বোট চলে ফারুয়ার উদ্দেশ্যে খালে পানি কম থাকায় বোট থেমে যায় ফারুয়ার একটু নিচে শুরু হল পথ চলা......রাতে ক্যাম্প করি রাইক্ষং খালের কিনারে — at 22°20'39.10"N 92°25'59.79"E.
২৫ জানুয়রি খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠবে হবে পরিকল্পনা করা হল,কিন্ত ঘনকুয়াশা ও প্রচন্ড ঠান্ডার করনে তাবু হতে বের হতে হতে সকাল ৭ টা বেজে গেল। ক্যাম্প গুটিয়ে বানরকুপ পাড়া, যমুনাছড়া পাড়া হয়ে রাইক্ষং খাল উপরের দিকে এগিয়ে চলতে থাকলাম, আজকের গন্তব্য রাইক্ষং ধরে এগিয়ে চলতে চলতে যেখানে রাত হয়। খালের পাশেই পড়ল শুক্কুরছড়া পাড়া, বগাচর পাড়া, গোবরা ছড়ি পাড়া, পাংখু পাড়া, ছাড়বা তলী পাড়া,ওশীহাল গাই ওকনী পাড়া, ছোট আড় পাড়া, মাইন্না মুখ পাড়া।
মাইন্না মুখ পাড়া পৌছার পর পাড়ার লোকজন জানাল রাইক্ষং ধরে আর সামনে এগোনো যাবে না কারণ সামনে আছে বড় আড়। তখনও আমাদের দল আড় ব্যাপারটা বুঝতে পারেনি.......কয়েক জনের সাথে কথা বলে বুঝতে পারলাম সামনে রাইক্ষং ধরে যাওয়া কষ্ট সাধ্য তবে অসম্ভব নয়। সিদ্ধান্ত নিলাম এগিয়ে যাবার। একটু পরেই বুঝতে পারলাম আড় আসলে খুম/কুপ। আর GPS সাহায্যে জানতে পারলাম এ আড় ১.৩৭ কি:মি: দীর্ঘ।
আড়ের গভীরতা ও অনেক খানি।
অনেক কষ্টে আড় পার হয়েই সকলের মুখে হাসি ২টা করনে প্রথমত আমরা ঠিক মত পার হতে পেরেছি আর দ্বিতীয়ত আগেই আমরা জানতে পেরেছি আড়ের এ পাশে আছে এক পরিত্যক্ত পাড়া অর্থাৎ আজ রাতের জন্য আমরা এ পাড়ার মালিক,পাড়ায় চলবে আমাদের রাজত্ব। মাইন্না মুখ পাড়া থেকে জেনেছি আড়ের কারনে যাতায়াতের অসুবিধায় লোকজন এ পাড়া ছেড়ে চলে গেছে। পাড়ায় ৮ থেকে ১০টা ঘর আছে ৩টা ভাল বাকিগুলো ভেঙ্গে গেছে। সবচেয়ে সুন্দর ঘরে আমরা উঠলাম।
ঘরটার আবার দরজা নাই। আমরা অতি আনন্দে আড়ে পাতার জন্য সাথে করে আনা মাছ ধরার জাল ঠিক করতে লাগলাম সন্ধ্যা হওয়ার আগেই জাল পাততে হবে। আমরা জাল নিয়ে ব্যস্ত অন্ধকার নেমে এল বলে এমন সময় আমাদের ঘর হতে ২০০ ফুট দূরের পাহাড় হতে বিকট শব্দ শুনতে পেলাম সকলে। প্রথম ডাকে মনে করলাম কুকুর ব্যাথা পেয়ে চিৎকার করছে পরক্ষণে মনে হল কুকুরের ডাক তো এমন হয়না আর ঐদিকে তো কোন পাড়া নাই। পরপর কয়েকটা ডাক শুনতে পেলাম ।
রুহি জানাল এটা ভাল্লুকের শব্দ ও দেখল কালো রঙ্গের ৩ থেকে ৪ ফুট উচ্চতার প্রাণী ডাকতে ডাকতে জঙ্গলের ভিতরে চলে যাচ্ছে। এরমধ্যে অন্ধকার নেমে আসল এখান থেকে সরে যাব সে উপায় নাই। দ্রুত সিদ্ধান্ত নিলাম আগুন জালাতে হবে এবং সারা রাত আগুন জ্বালিয়ে রাখতে হবে। .........
ঘরের সামনে অনেক বড় করে আগুন জ্বালানো হল। সবাই এক সাথে থাকব সাথে করে নেয়া দা গুলো ব্যাগ থেকে বের করে হাতের কাছে রাখলাম।
ঘরের ভিতরের চুলায় আগুন জ্বালানো হল, রান্নার আয়োজন চলছে। যেহেতু ঘরের দরজা ছিলনা তাই সিদ্ধান্ত নিলাম মাছ ধরার জাল দিয়ে সব দরজা জানালা ঘিরে দেবার। ভাগ্য ক্রমে জালটা অনিক বড় ছিল বলে সব গুলো দরজা জানালা ঘেরা গেছে। জাল দিয়ে দরজা জানালা বন্ধ করার উদ্দেশ্য ছিল যদি ভাল্লুক বা কোন প্রাণী আসে তবে সেটা জালে পেচিয়ে যাবে আর একবার পেচাইলে ছুটতে পারবে না অথবা ভয়ে পালিয়ে যাবে। আমরা ঘুমাবার জন্য একবারে ভিতরের কুঠুরিটা বেছে নিলাম,দা মাথার কাছে।
সকাল হতে সব গুছিয়ে দে দৌড় রাইক্ষং ধরে উজানের দিকে। ....................চলতে চলতে রাইক্ষং খালের উপর দেখতে পেলাম ভয়ঙ্কর সুন্দর আন্ধার মানিক( 22°12'17.02"N 92°31'56.05"E) , ছালং ছড়ি ( 22°12'1.84"N, 92°32'18.57"E),আগাইচ্ছা মানিক ( 22°11'57.40"N 92°32'8.74"E)................ আরাকান বিচ্ছতা বিদীদের চোখ এড়িয়ে চলা বর্ণনা ও পরবতী দিনগুলোর বিবরন ছবি ও ভিডিও upload করা হবে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।