যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে, ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
হতাশ হচ্ছি এই ভেবে যে, কর্তৃপক্ষ কি আমাদের কথার কোন মূল্য দেয়?
এত লোক এতভাবে বলছে রাশেদ -এস্কিমোর উপর অন্যায় ব্যানটা উঠাতে, কর্তৃপক্ষ কি সেটার মূল্য বুঝতে পারছে?
কর্তৃপক্ষ কি ভাবছে যে "বিনাপয়সায় ব্লগিং করতে দিচ্ছি, আবার এত কথা কিসের?" এরকম কিছু?
তারা আমাদের কোন মতামতেরই গুরুত্ব দেয়না, কখনও দেয়নি। এই যে আমরা লিখছি, এগুলোর কোন মূল্যই নেই ...
এমনই অথর্ব কর্তৃপক্ষ যে একটা পোস্টে এসে নিজেদের অবস্থান পরিস্কার করে বলার মতো সৎসাহসও তাদের নেই
আগেরবারও জানুয়ারীর শুরুতে যখন আট/দশজন রেগুলার ব্লগারদের ব্যান করেছিলো, তখনও তারা আমাদের কথায় কান দেয়নি; ঠিকই নিজেদের মত অনুযায়ী এক সপ্তা পর ব্যান উঠিয়েছে ...
তারপরও আমরা মেনে নিয়েছি, খুশী হবার ভান করেছি ... কিন্তু কেন? ব্লগটাকে বাঁচানোর জন্যই তো, তাইনা? ...
আমরা যারা কলমবিরতিতে গিয়েছিলাম, তাদের সবার কয়েকটা দূর্বলতা আছে; একটা হলো লিখতে চাওয়া, নিজের মনের কথাকে লিখে রাখার তাগিদ বোধ করা, সেজন্যই তো ব্লগার, তাইনা? ... আরেকটা দূর্বলতা হলো এই সামহোয়ার কর্তৃপক্ষ না হোক, এই হোমপেজটা, এখানে একত্র হওয়া অসংখ্য ব্লগার -- তারা একে অন্যের প্রতি একটা টান অনুভাব করে শুধু এই ব্লগের কারণে-- এ ব্যাপারটা। আমরা এখানে লিখতে চাই, সবার সাথে কানেক্টেড থাকতে চাই ... সেই দূর্বলতার সুযোগ কি কর্তৃপক্ষ বারবার নেবে?
এবারও কি শেষমেষ তাই করবে? ... এক সপ্তাহ পর রাশেদ আর এস্কিমোকে আনব্যান করবে ... প্রশ্ন হলো, আমরা কি এবারও খুশী হবার ভান করব? আরও যে প্রশ্নটা থেকে যায়, একসপ্তাহ পর যখন রাশেদ আর এস্কিমো লিখতে পারবে, তখন কি আমরা এত সহজেই আবার কদিন আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারবো?
নিজের ব্লগে নিজের ক্ষোভ প্রকাশের জন্য প্রতীকি প্রতিবাদ করতে গিয়ে ব্যান হয়েছে রাশেদ। এই সেই রাশেদ, যাকে এই ব্লগে একটা ব্লগারও নাই যে ভালোবাসেনা। আমি তো বলব, এই ছেলেটা একাই সামহোয়ারকে বাঁচিয়ে রাখতে সাহায্য করেছে।
খুব বেসিক একটা ব্যাপার, ব্লগাররা লিখে আনন্দ পায় তখনই যখন সে দেখে তার ব্লগে কমেন্ট পড়ছে। যখন সে দেখে রাশেদের মতো একজন মনোযোগী পাঠক (এবং সুলেখকও) তার লেখা পড়ছে, তখন সে পরবর্তী লেখাটা আরো ভালো করে লেখার উৎসাহ পায়। প্রশ্ন হলো, একসপ্তা পর রাশেদ যখন ব্যানমুক্ত হবে, তখন কি সে পারবে আগের মতো স্বতঃস্ফুর্তভাবে ব্লগে আসতে, সবার সাথে যোগাযোগ রাখতে কি সে আগের মতোই উৎসাহিত বোধ করবে? বিশেষ করে যে ব্লগ কর্তৃপক্ষ তার নিজের পোস্ট এডিট করার ক্ষমতা রহিত করেছে, তাদের রাজ্যে?
********************************************
জনাব/জনাবা কর্তৃপক্ষ, মনে রাখবেন, আপনারা শুধু প্ল্যাটফর্ম আর সফটওয়ারই দিয়েছেন। সেটা যে কেউ বানাতে পারে। সামহোয়ার ব্লগ এখন যে পরিচিতি অর্জন করেছে ইন্টারনেটে, সেটার পেছনে মূল অবদান ব্লগারদের।
ব্লগারদের মতামতকে বাদ দিয়ে নীতিমালার প্রয়োগ এই ব্লগকে আবারও সেই শুধু প্ল্যাটফর্ম আর সফটওয়ারেই পরিণত করবে।
এই পোস্টে কর্তৃপক্ষকে সরাসরি সংলাপে আসার আহবান জানাচ্ছি, সৎসাহস থাকলে আসুন এখানে। আমরা ব্লগাররা যারা রাশেদ এস্কিমোর আনব্যানের দাবী তুলছি, তাদের প্রশ্নগুলোর জবাব দিন, কথাগুলো শোনার চেষ্টা করুন।
********************************************
ব্লগারদের বলছি:
একসপ্তাহ পর যদি রাশেদ আর এস্কিমোর আনব্যান হয়, সেটা প্রমাণ করবে কর্তৃপক্ষ আমাদের মতামতকে গুরুত্ব দেননি। সেক্ষেত্রে আমরা কি করব সেটা নিয়ে আমরা আলোচনা শুরু করতে পারি।
সবাই মতামত দিন।
ব্যক্তিগতভাবে আমি এখানে ব্লগিং এই মুহূর্তেই বন্ধ করে দিতে পারি, কারণ আমি সচলায়তনেও ব্লগিং করি। আমার তো লেখার জায়গা আছেই, বন্ধুবান্ধবও সেখানে কম না।
কিন্তু কেন দিইনি? এই ব্লগটাকে ভালোবাসি বলেই, এখানে আসা অসংখ্য ব্লগারদের ইলেক্ট্রো-সখ্যতার টানেই বাদ দিইনি। হয়ত আমি তেমন উঁচুমানের ব্লগারনা, তারপরেও নিজের চিন্তা-ভাবনা দিয়ে ব্লগটাকে যতটুকু সমৃদ্ধ করা যায়, যতটুকু আনন্দের পরিবেশ তৈরী করা যায় সেটা সবসময়ই তৈরী করতে চেষ্টা করেছি।
সেটার কারণ ছিল, আমার এই সামান্য প্রচেষ্টা যদি সামহোয়ারকে সামান্য হলেও উপভোগ্য করে তোলে, বাঁচিয়ে রাখে, সেই প্রচেষ্টাতেই।
আমাদের এই ভালোবাসা যদি কর্তৃপক্ষকে না ছোঁয়, তবে সেটা ভীষন দুঃখজনক। তবে আমি নিশ্চিত কর্তৃপক্ষকে না ছুঁতে পারলেও, সামহোয়ারের জমিনকে সেই ভালোবাসা ঠিকই ছুঁতে পেরেছে। তাই কর্তৃপক্ষকে যদি না ছোঁয়, তাহলে তার মানে শুধু এটাই হতে পারে,
কর্তৃপক্ষ নিজেই সামহোয়ারের জমিনের সাথে সংযুক্ত না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।