ক্ষেপাইতে চাইলে akayes@yahoo.com মেইল করেন :)
গল্পটি আমার মায়ের কাছ থেকে শোনা।
মুক্তিযোদ্ধ চলাকালীন সময়ে মা তাঁর গ্রামের বাড়ীতে ছিলেন। একদিন সকালে হঠাৎ সবার দৌড়াদৌড়ি, ছুটাছুটি লেগে গেল। যে যেদিকে পারছে পালাচ্ছে, কেউ ঘর-বাড়ী ছেড়ে গরু,ছাগল, মুরগী আর পুটলা-পাটলি নিয়ে ছুটছে। সবার চোখে-মুখে ভীত-সন্ত্রস্ত ভাব সবাই চিৎকার করে বলছে "নদীর ঘাটে পান্জাবী আইয়া পড়ছে যে যেখানে পার তাড়াতাড়ি পালাও, ধরতে পারলে রক্ষা নাই।
" উল্লেখ্য যে, তখন সেই এলাকায় পাকসেনাদেরকে পান্জাবী বলে ডাকা হত। এদিকে আমার এক মামা এই অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হওয়ায় যে কোন বিপদ আসলে আগে এই গ্রামের উপর দিয়েই যাবে এই কারণে ভয়টা আরো বেশী ছিল। তাই যে কোন পরিস্থিতিতে কয়েক মুহুর্তের মধ্যে বাড়ী খালি করার বন্দোবস্তো আগেই করা থাকত। এদিকে সবাই যে যার মত নিরাপদ আশ্রয়ে লুকিয়ে আছে। সম্পূর্ণ গ্রাম নীরব, জনমানব শূন্য।
এদিকে সকাল গড়িয়ে দুপুর হল, দুপুরের পর বিকাল কিন্তু পাঞ্জাবী তো আর আসে না। ভয়ে যারা এতক্ষণ বের হয়নি তারাও উকি-ঝুকি দিচ্ছে। দু'চারজন সাহস করে বের হল, আশে-পাশে খুঁজে দেখল কিন্তু পান্জাবী আসার কোন লক্ষণ ধরা পড়ল না। তারপর দু'একজন সাহস করে নদীর পাড় পর্যন্ত ঘুরে এস সংবাদ দিল পান্জাবী আসার কোন লক্ষণই সেখানে নাই। তাই সবাই আস্তে আস্তে যে যার ঘরে ফিরতে শুরু করল।
কয়েকজন বসল এই ঘটনা রহস্য উদঘাটন এর জন্য। পরবর্তীতে যা জানা গেল এই ঘটনার কারণ ছিল- পাশের বাড়ীর এক লোক সকালে গোসল করতে গিয়ে ভুলে তার গায়ে দেয়ার পান্জাবী নদীর ঘাটে ফেলে এসেছে। বাড়ীতে এসে সে তার ছেলেকে ডেকে বলছিল যে, নদীর ঘাটে পান্জাবী রাইখা আইছি তারাতারি লয়া আয়। তার এই উচ্চস্বরের আওয়াজ পাশের বাড়ীর লোক শুনে ভাবল এই লোক বোধহয় রাজাকার তাই পান্জাবীদের কে এই গ্রামে আনার ব্যবস্থা করেছে, ফলে তারা এমন ভাবে হাক-ডাক শুরু করল যে কিছুক্ষণের মধ্যে তা সারা গ্রামে ছড়িয়ে পড়লো। এই ঘটনা মনে করে এখনো এই গ্রামের লোক হাসা-হাসি করে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।