..
কলাবাগান মাটের পাশ দিয়ে যে গলিটা ধানমন্ডির ভেতরে চলে গেছে তার কিছুদূর গেলেই হাতের বামপাশে পড়বে একটা কমিনিটি সেন্টার আর ডানপাে ধানমন্ডিলেকের একাংশ। লেকের পাড়ে বড় বড় গাছ, গাছের নীচে সিমেন্ট দিয়ে বাধানো বসার চমৎকার ব্যবস্হা। আমরা বন্ধুরা সময় সুযোগ পেলেই ঐখানে বসে আড্ডা দিতাম। আড্ডার আরেক আকর্ষন ছিল মামুর চা। বিশাল সাইজের দুইটা ফ্লাস্ক নিয়ে ফেরি করে চা বিক্রি করত মামু।
অসাধারণ সেই চায়ের স্বাদ আজো মনের মধ্যে গেথে আছে।
যাইহোক আসল ঘঠনায় আসি। বৎসর কয়েক আগে কোন এক সন্ধায় আমরা যেখানে বসে আড্ডা দিতাম তার খানিকটাদূরে রাস্তার পাশে হঠাৎ হৈচৈ শব্দ। লোকজনের জটলা। খেয়াল করার পর বুঝলাম একটা মেয়ে মনের ঝাল মিটিয়ে কাউকে অনবরত গালি দিয়ে যাচ্ছে।
হারামীর বাচ্চা থেকে শুরু করে শুয়োর, কুত্তা, রামছাগল কোনকিছু বাদ যাচ্ছেনা।
ফাহিম( সব বিষয়ে যে অতিরিক্ত কৌতহলী ) কাউকে কিছু না বলে একদৌড়ে ঘটনাস্হলে চলে গেল। আমরা বাকীরা ঘটনাস্হলে যাবার ব্যাপারে আগ্রহী না হলেও অপেক্ষায় ছিলাম কখন ফাহিম আসবে আর জানতে পারব আসলে কি ঘটেছিল সেখানে।
বেশকিছুক্ষন পর ফাহিম ফিরে এসে বলল মেয়েটি তার বন্ধুকে নিয়ে লেকে বেড়াতে এসেছিল। ফেরার পথে সিনজি না পেয়ে হেটে হেটে ধানমন্ডি মেইন রাস্তায় যাবার সময় পাশদিয়ে যাওয়া একটা ছেলে মেয়েটিকে খামচি দেয়।
মেয়েটি সাথে সাথে ছেলেটিকে ধরে ফেলে। চড়,থাপ্পর আর সেই সাথে গালি বর্ষন।
আমরা শুনে বলি ঠিকই আছে, হারামযাদার শিক্ষা হওয়া উচিত। শালার পোরে কাইট্যা ছিল্লা লবণ লাগ্যাইয়া দেয়া উচিত ছিল। আরো কি কি উপায়ে তাকে শিক্ষা দেয়া যেতো এই নিয়ে যখন আমরা গবেষনা শুরু করব ফাহিম আমদের থামিয়ে দিয়ে বলল কাহিনী কিন্তু এখানেই শেষ নয়।
আরো আছে।
মেয়েটির সাথে আসা তার বন্ধুটি ছিল একদম নির্বিকার। সে ঐ ছেলেটিকে কিছু না বলে উল্টো মেয়েটিকে থামানোর চেষ্টা করছিল। একসময় সে জোর করে মেয়েটিকে ভীড় থেকে সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। তখন মেয়েটি ঝাড়ি দিয়ে বলে তুই আমার হাত ছাড়।
তোর মতো কাপুরুষের সাথে আমি আর নাই। তোর সামনে এরকম হলো অথচ তুই কিছু বললিনা। তুই বরং বাসায় গিয়ে চুড়ি পড়ে বসে থাক।
সবকিছু শুনে সবাই স্বীকার করতে বাধ্য হলাম, মেয়েটি আসলেই সাহসী।
-------------------------------------------------------------------
[ মাঝে মাঝে অবসরে, অলস মস্তিষ্কে যখন এই ঘটনা মনে পড়ে খুব জানতে ইচ্ছে করে মেয়েটি কি তার বন্ধুটিকে শেষ পর্যন্ত ক্ষমা করতে পেরেছিল? ]
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।