২১ জানুয়ারি, ২০১৩:
# বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসির রায় হয়েছে। এত আনন্দ রাখার জায়গা পাচ্ছি না। তাই ভাগ-বাটোয়ারা করে কিছুটা আনন্দ ফেসবুকে রেখে গেলাম। জয় বাংলা।
২২ জানুয়ারি, ২০১৩:
# ওই ফেসবুক সেলিব্রেটি ওইটা লিখছে, ওর পিছে লাগ।
ওই মানবতাবাদী এইটা ক্যান কইলো, ওরে ধরা দে। ওই ব্লগার ক্যান এটা নিয়ে কথা বলে, ওরে ছ্যাচা দে। ওই কবি ক্যান কবিতায় এই লাইন ঢুকাইলো, ওরে খা। ওই অ্যাক্টিভিস্ট ক্যান এইডা চায়, ওরে কুপা। ইয়ার্কি-ফাজলামি না, ফেসবুকে এটাই নিত্যদিনকার রুটিন হয়ে গেছে।
অনেকেই আছে তবে এখন মনে হয় একটা সংঘবদ্ধ গ্রুপ অনলাইন চর্চাকে বিশৃঙ্খল করতে পরিকল্পিত ভাবে এটা করছে। এক বন্ধুর সাথে এটা নিয়ে কথা হচ্ছিলো। ও বললো, 'রণি এসব নিয়ে চিন্তা করার দরকারই নেই। মেডিকেল সাইন্সের পড়াশুনার চাপে আমাদের অনলাইনে ব্লগার-অ্যাক্টিভিস্ট-কবি-মানবতাবাদী-নারীবাদীগিরি ফলানোর চান্স শূন্যের কোঠায়। সুতরাং এসব থেকে দূরে থাক।
খেলাধুলা নিয়ে আছিস, ওটা নিয়েই থাক। এসবে নাক গলাতে যাস না। ' দূরেই আছি। কিন্তু দিন শেষে কিছু সময়ের জন্য ফেসবুকে আসি অনেক প্রিয়জনের লেখা পড়তে, তখন এসব গ্যাঞ্জাম-ফ্যাসাদ-চুল টানাটানি দেখলে বড় অসহ্য লাগে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় একদিন এসব সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যাবে।
তখন একটা অনলাইন আন্দোলন হবে। অথবা সবকিছুই পুরোপুরি নষ্টদের অধিকারে চলে যাবে। এবং সেই দিন খুব দূরে বলে মনে হয় না।
২৩ জানুয়ারি, ২০১৩:
# ১। নিজেকে খুব ভিআইপি মনে হচ্ছে।
গত দু' দিনে ৩ টা ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পেয়েছি যাদের কারোরই বন্ধু সংখ্যা ৫ জনের উপরে না। একজনের তো আমিই প্রথম! অচেনা অজানা মানুষ আইডি খুলেই আমার খোঁজ করছে! আচ্ছা সামনে আমার নোবেল-টোবেল পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা আছে নাকি?
২। এককালে টাকার উপর অনেক কিছু যেমন মোবাইল নাম্বার, প্রেমিক-প্রেমিকার নাম, কবিতার লাইন আরো কত কী যে লেখা থাকতো। এগুলোর কিছু একসময় সংগ্রহেও রেখেছিলাম। অনেকদিন পর আজ একটা ২ টাকার নোটে টাকা সাহিত্য পেলাম।
লেখা, 'আনিস+লতা'।
৩। রবির 'বেসম্ভব ঠান্ডা' বিজ্ঞাপনটা বেশ ভাল লেগেছে। যতবার দেখি, ততবার হাসি।
৪।
একজনের স্ট্যাটাসের কমেন্টে পড়লাম সে ঘুমানোর জন্য রবীন্দ্রসঙ্গীত শোনে ঘুম আনার জন্যে আর জাস্টিন বিবার শোনে 'চিয়ার-আপ' হতে। একটা পেজ দেখেছিলাম অনেকটা এরকম, 'আল্লাহ তুলে নাও অথবা দড়ি ফ্যালাও, নিজেই বাইয়া উঠে যাই'; ওই পেজটার কথা মনে পড়ছে খুব।
৫। পরকালের ৭০ টা হুর, ১৪০ টা অস্পরী লাগবে না; আমি ইহজনমের একটা নারীতেই সন্তুষ্ট।
৬।
একজন বললো, খুলনা যদি কোনো বিদেশী না কিনে শুধু খুলনার হোম প্লেয়ারদেরই কিনতে পারতো তাহলে এই দলটাকে হারাতে যথেষ্ট কষ্টই হতো। সাকিব, আনামুল, ইমরুল কায়েস, মাশরাফি, রাজ্জাক, রুবেল, জিয়াউর রহমান; জাতীয় দলেরই ৭-৮ টা প্লেয়ার! অথচ তারা হেরেই যাচ্ছে একটার পর একটা ম্যাচ। আজ দর্শক ভর্তি হোম ম্যাচেও হারলো।
৭। সঞ্জীব চৌধুরী শুনি।
'পাগল কষ্ট চেপে চলে যাবে ফিরেও আসবেনা', কী দারুণ সব লিরিক লিখতো মানুষটা! আজকের রাত শুধুই সঞ্জীব আর অঞ্জন দত্তের। আর আমাকে মাঝরাত পর্যন্ত ঘুমাতে না দেওয়া এক দাড়িওয়ালা ঠাকুর মশাইয়ের।
২৪ জানুয়ারি, ২০১৩:
# অবশেষে প্রানের শহর খুলনা থেকে খুলনা রয়েল বেঙ্গলসের গর্জন শুনতে পেলাম। তিনটা ম্যাচ লেজে-গোবরে করে হারার পর আজ অনেক গুলো রেকর্ড নতুন করে লিখে 'রয়েল বেঙ্গলস' নামের সার্থকতা পূরণ করেই জিতলো। শাহরিয়ার নাফিসের ইনিংসটা বিপিএলে এখন পর্যন্ত কোনো বাংলাদেশীর সেরা ইনিংস হয়েই থাকলো।
এবং অবস্থাদৃষ্টে কাগজে-কলমে টুর্ণামেন্টের সবচেয়ে মিতব্যয়ী এবং দূর্বল দলটাকে এই মুহূর্তে খানিক শক্তিশালীই ঠেকছে। অনেকের কাছে অত্যুক্তি শোনাতে পারে, তবে দলটাকে আমি সেমিতেই দেখতে চাইবো।
২৫ জানুয়ারি, ২০১৩:
# ১। বিপিএল নাকি পাকিস্তানি ছাড়া জমবে না? প্রায় প্রত্যেকটা ম্যাচই যথেষ্ট প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হতে দেখছি। এইতো কানায় কানায় পূর্ণ শেখ আবু নাসের স্টেডিয়াম দেখলাম।
রাতের বেলায়ও খুলনার মত একটা রক্ষনশীল শহরের কত শত মেয়ে খেলা দেখছে মাঠে বসে। মাঝ বয়সীরা এসেছে দলকে সমর্থন দিতে। দেখতেই ভালো লাগছে।
২। রজার ফেদেরারকে শেষ সেটে এসে হেরে যেতে দেখলাম।
এক সময় রজার ফেদেরার বলতে ক্রেজি ছিলাম। এখন আর ওভাবে টেনিস দেখতে পারি না। সময় বদলেছে। তবু ফেদেরার হেরে গেছে শুনলে খারাপই লাগে!
৩। ঢাকা হেরেছে বিশ্বাস করতেও কষ্ট হচ্ছে।
টি২০ তে এরকম হতেই পারে বলায় ঢাকা গ্লাডিয়েটরস সাপোর্টার এক বন্ধু বলে বসলো, 'দিলশান, মালিঙ্গা, মেন্ডিস, পোলার্ড আসলে আর অঘটনও ঘটবে না'। এই কথা শোনার পর থেকে পূর্ণ শক্তি ঢাকার হারার প্রত্যাশা করছি। আজ মুশফিকের ইনিংসটা দারুণ ছিলো। কিছুদিন আগের আশরাফুলের ৭৩ বা নাসিরের ৮০ রানের ইনিংসটাও। গতবার বাংলাদেশীদের এই জাতীয় ইনিংস এবারের তুলনায় কম ছিলো।
এটাকেই পরিবর্তন বলে!
৪। গতরাতের বার্সেলোনা ম্যাচটা দেখা হয়নি। ইচ্ছে ছিলো। কিন্তু এলার্মের পরেও ঘুমটা ভাঙেনি। ইউসিএল ছাড়া বেশিরভাগ বার্সা ম্যাচই দেখতে পারি না।
লীগের আকর্ষণ মরে যাওয়ায় তো উৎসাহে আরও ভাটা পড়েছে। আর যারা খেললেই জেতে তাদের আর কত দেখবো! তবে কোপা ডেল রে'র প্রথম ম্যাচটা ন্যু ক্যাম্পে ড্র করাতেই মূলত গতকালের ম্যাচটা দেখতে চেয়েছিলাম। আমি না পারলেও বার্সেলোনা পেরেছে।
৫। ওয়ানডে তে একসময় র্যাংকিং এর নাম্বার ওয়ানের বাটনটা দীর্ঘদিন অস্ট্রেলিয়ার হাতে ছিলো।
দিন অনেক বদলেছে। এই যেমন গত দুই সপ্তাহে তিনটা দল, দক্ষিন আফ্রিকা, ইংল্যান্ড এবং ভারত র্যাংকিংয়ের নাম্বার ওয়ান হয়েছে। দিস ইজ ক্রিকেট অ্যাট ইটস বেস্ট।
৬। শাহরিয়ার নাফিসের স্পোর্টসম্যানশীপের ভালো এবং খারাপ দিক দুটোই দেখলাম।
ক্যামেরন ভোর্গাসের আউটটা নাফিসই দাবী করলো, যেটা উচিত হয়নি বলেই মনে হয়েছে আবার নাফিসই দিমিত্রি মাসকেরানাসের নিশ্চিত আউটটা নিতে পারার ক্ষমতা থাকা সত্তেও না নিয়ে ঠিক কাজটাই করলো। নাসির ভীষণ মজা দিলো। দারুণ সব স্ট্যান্স দেখালো। ওয়ান ম্যান আর্মির মত রংপুর রাইডার্সকে টেনে আনলো এতোদূর। দারুণ ইনিংস অবশ্যই।
যাই হোক, নক কামড়ানো ম্যাচটা শেষপর্যন্ত খুলনাই জিতলো। পরপর দুই ম্যাচে দুই জয়। ইশ, খুশিতে কবুতরের মত বাক-বাকুম ডাকতে পারতাম! ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।