আহসান জামান
স্টেশনে দাঁড়িয়ে দেখেছি ট্রেনগুলো
উদর-ভরা যাত্রী নিয়ে কর্কষ হুইসেলে
চলে গেছে কতদূরে মুহূ্র্তেই; শুধু ভেবেছি
যাবো; একদিন কোনোদিকে -
চোখের পাতা নড়লেই মা বোঝেন আমাকে;
মাথার রাশ করা চুলে আঙ্গুল ঢুকিয়ে দিয়ে
বলেছেন - যা, না হয় তোর নানাবাড়ীতে;
মামাকে চিঠি লিখে দিই; কিশোর-আহ্লাদী চোখে
তাঁর দিকে তাকাতেই কেমন অক্ষম পাথর হয়ে গেছি আমি।
কলেজ বন্ধু, ফরেস্টরিতে চাকরীরত; আকস্মিক
চিঠিতে আমন্ত্রন; আয় না তুই,
ক'দিন থাকবি - তোর তো আর কোনো পিছুটান নেই;
অমনি আমিও বলেছি - আসবো; তোর বনের প্রত্যেকটি
গাছে গাছে লিখে দিবো জোস্নার কবিতা।
দেখবি কত খুশী হয় তারা; অথচ আমার চারিপাশে
কেবল কৃষ্ণপক্ষ কাল।
এয়ারপোর্টে ভাইবোনদের বিদয় দিতে এসে
প্রবেশসংরক্ষিত দরজায় দাঁড়িয়ে তারা
মিনতি স্বরে বলেছে - আমেরিকায় আয়,
ব্যস্ত জীবনের ব্যস্ততায় নিঃসঙ্গতা তোর কেটে যাবে।
আমিও প্রসন্ন সুরে বলেছি - আসবো; আর ক'টা দিন
সময় দে, একটু গুছিয়ে নিই।
কে গুছিয়ে দেবে আমার এক পাহাড় না-পারা-দুঃখগুলো !
কী অবহেলায় পার হয়ে গেছি নিয়মিত বন্ধুর আড্ডা
আর উল্লাস-মদের অফার। এইতো সেদিন টেলিফোনে
আদিত্য জানালো, জীবননান্দের বনলতা এখন আমার ঘরে,
একদিন বিকালে আয়, আড্ডা দিয়ে জয়ার হাতে চা খাবি।
সমুদ্রের উচুঁ ঢেউ আচঁড়ানো কন্ঠে বলেছিলাম আসবো; কাল বা পরশু।
অথচ আমার হলো না কোথাও যাওয়া
পাখির মতো উড়া অথবা কোনো আনন্দযাত্রা
কেবল থমকে গেছি আমি; আমার ভিতর বৃক্ষ হলো কী!
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।