প্রকৌশল বিদ্যার সাথে সম্পর্কিত কিছু জিনিসের বেসিক ধারণা:
১) প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়: ইহা একটি বিশেষ জায়গা, যেখানে এইচ.এস.সি তে ভাল ফলাফল করার জন্য শাস্তি দেওয়া হয়।
২) হল: সারারাত জেগে সকাল ৬ টায় ঘুমানোর জন্য পারফেক্ট জায়গা।
৩) ডাইনিং: পুষ্টিকর আর স্বাস্থ্যকর হালকা হলুদ গরম পানির ডাল পাওয়ার একমাত্র জায়গা।
৪) ক্লাশরুম: ঘুমানোর জায়গা।
৫) মেডিকেল সেন্টার: যে কোন রোগের একই চিকিৎসা প্রদানের উপযুক্ত স্থান।
৬) লাইব্রেরী: কপোত-কপোতীর জন্য আদর্শ জায়গা। কপোত পড়া বুঝায় আর কপোতী ঘুমন্ত অবস্থায় মুগ্ধ হয়ে শুনে।
৭) অ্যাটেনডেন্স আর প্রক্সি: স্যার দয়াময় হলেও চলে না, বন্ধুদের দয়া ছাড়া ৮০% ক্লাশ উপস্থিতিও জুটেনা। এখানে স্যারের চেয়ে বন্ধুদের দয়ার উপর নির্ভর করে করতে হয় বেশি।
৮) অ্যাসাইনমেন্ট: একজনের দেখে অন্যজনের কপি-পেষ্ট করা।
৯) ক্লাশটেস্ট: সকালের ঘুম বিসর্জন দিয়া, হাতে শীট নিয়া পড়তে পড়তে যাওয়া।
১০) প্রভোষ্ট: যিনি স্টুডেন্টের নিরাপত্তার চেয়ে অতি গুরুত্ত্বের সাথে স্টুডেন্টের জরিমানা চেক করেন। অতি দয়ার সাথে তিনি কড়ায় গন্ডায় জরিমানা আদায় করেন।
১১) লেকচার: লেকচার মানেই ঘুমের মহাঔষুধ, সময়ের অপচয়, বাধ্যতামূলক ক্লাশে শারীরিক উপস্থিতি।
১২) লেকচারার বা প্রভাষক: যিনি শ্রেণীতে সাফল্যের সাথে ১ম হয়ে পাশ করে স্টুডেন্টের স্যার হন এবং পড়াতে পারুক আর না পারুক স্টুডেন্টেদের ঝাড়ি দিয়ে বিদেশী ডিগ্রীর স্বপ্ন পূরণে হাড়ভাঙা শ্রমে বিভোর থাকেন।
১৩) প্রফেসর: যিনি ক্লাশ নিলে ঘুম আসে। প্রাচীণ যুগের ঐতিহাসিক নোট নিয়ে ব্যাচের পর ব্যাচ পার করেন, জুনিয়র টিচারের পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে হস্তক্ষেপ করে স্টুডেন্টদের বাঁশ দেন।
১৪) ক্লাশ রিপ্রেজেন্টিভ বা সি.আর: স্যার আর লেডিস স্টুডেন্টদের সাথে যার ফটোকপি ও রিপোর্ট কেন্দ্রিক নিবিড় সম্পর্ক ।
১৫) সিসকো ল্যাব: যেখানে ১০টা পিসি চেক করার পর ১১ নং পিসিও চেক করতে হয় যে, নেট কানেকশন আছে কিনা, মাউস –কিবোর্ড ঠিকমত কাজ করছে কিনা। সম্প্রতি সতর্কামূলক বাণী হিসেবে ফেসবুক ব্যবহার নিষিদ্ধ লেখা থাকে।
১৬) ল্যাব: ঈদের নতুন জামার মত লুকিয়ে রাখা হয়, নতুন কেনা যন্ত্রপাতি। পুরাতন যন্ত্রপাতি দিয়ে ল্যাবের কাজ সম্পূর্ণ না হলেও সম্পূর্ণ করতে বাধ্য করা হয়। কবে সেই ল্যাবে ঈদ আসবে, আর নতুন যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হবে, এটা স্বয়ং উপরওয়ালা ছাড়া কেউ জানেনা।
১৭) সেশোনাল ক্লাশ: ক্লাশে ১ থেকে আড়াই ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকা। মেয়েরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখবে ছেলেরা কি কাজ করছে, পরবর্তীতে সেটা তারা কপি-পেষ্ট করবে।
স্যার প্রতিটি সেশোনাল ক্লাশ পূর্ববতী স্টুডেন্টদের দোষারোপ দিয়ে শুরু করবেন।
১৮) সেশোনাল রিপোর্ট: ক্যামেরাযুক্ত মোবাইল ফোনের উপযুক্ত ব্যবহার। সেশোনাল ক্লাশ শুরুর ৩০ মিনিট পূর্বে যেটা সম্পূর্ণ করা হয়, যেটার সম্পূর্ণ কৃতিত্ব পুরো সেমিষ্টার ধরে একজনেরই।
১৯) কুইজ: সেশোনাল শিট পুরা মুখস্থ করেও পরীক্ষার সময় বুঝা যায় না শীটের কোন কোণা থেকে প্রশ্ন তুলে দেওয়া হয়েছে বা আসছে। উত্তর প্রদান পুরাই বেসিকের উপর নির্ভর করে।
২০) ভাইভা: স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলার উপযুক্ত সময়। যার জন্য একজন স্টুডেন্টকে ২ জায়গায় ২বার প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। একবার স্যারের সামনে আর আরেকবার সহপাঠী বন্ধুদের সামনে- “দোস্ত তোরে কি জিগাইছে? এর উত্তর কোনটা?”
২১) Preparatory Leave বা P.L: পকেটের টাকা উজাড় করে সকল পড়ুয়া বন্ধুদের নোট ফটিকপি করে নিশ্চিন্তে মুভি দেখা আর ঘুমিয়ে পার করার জন্য পারফেক্ট সময়।
২২) পরীক্ষা: মাথা চুলকানোর বিশেষ জায়গা। যেখানে প্রত্যেক স্টুডেন্ট মাথা চুলকায়ে নতুন নতুন তত্ত্ব আবিষ্কার করে।
যা পরীক্ষকের বোধগম্যের বাইরে। কারণ তিনি এই বিষয়ে কোন ডিগ্রী নেন নাই। ১ম দেড় ঘন্টা ভাবা হয় প্রশ্ন কোন গ্রহ থেকে দিয়েছে। দেড় ঘণ্টা পর মাথা চুলকায়া গ্রহের সন্ধান পাইলে লেখা শুরু হয়। পরীক্ষা শেষের ৩০ মিনিট হাতের লেখার স্পিড কেমন করে যেন বেড়ে যায়।
২৩) লেডিস হল: ছেলেদের জন্য নিষিদ্ধ জায়গা। যেটার ভিতরে যাওয়ার এবং দেখার প্রত্যেক ছেলের বুকের ভিতর একটি লালিত স্বপ্ন।
২৪) হতাশার মোড়: নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি মানুষের কৌতুহুলের কমতি থাকেনা, তাকে জানার জন্য লেডিস হলের কাছে যে মোড়ের সৃষ্টি হয়, সেটাই হতাশার মোড়। শত শত হাজার হাজার ছেলে সেখান থেকে শূণ্য হাতে ফিরে আসে।
২৫) টিউশনি: যা স্টুডেন্টদের একমাত্র বাঁচিবার উপায়।
২৬) ক্যান্টিন: ২০ টাকার নাস্তা করেও ১০ টাকা দেওয়ার একমাত্র জায়গা।
২৭) ফটোকপির দোকান: ফটিকপি মেশিন একজন স্টুডেন্টের সবচেয়ে ভাল বন্ধু। বন্ধু বলেন আর আত্নায় বলুন, একজন স্টুডেন্টের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা এই ফটোকপির দোকান। সারাবছরে ২০০টাকার বই না কিনলেও চলে কিন্তু ২হাজার টাকার ফটোকপি না করলে চলে না।
বলা যায়, স্টুডেন্ট লাইফ পুরোটায় ফটোকপির উপর নির্ভরশীল।
২৮) ক্যাম্পাস বাস: একমাত্র লেডিস হলে সুসম্পর্ক থাকলে যেখানে সিট পাওয়ার সম্ভবনা থাকে।
২৯) সিনিয়র: সিনিয়র হচ্ছেন সেই ব্যক্তি, যিনি জুনিয়র অবস্থায় র্যা গ খেয়েছেন এবং সিনিয়র হয়ে সেটা সুদে-আসলে তুলে নিচ্ছেন। প্রজেক্ট বা থেসিসের ভবিষ্যৎ নিয়ে যিনি সর্বদায় চিন্তিত থাকেন।
৩০) জুনিয়র: যে রাস্তা ঘাটে, ঘরের সামনে, ডাইনিং এ, ক্যান্টিনে, বাথরুমের সামনে, ডিপার্টমেন্টের সামনে যে কাউকে সালাম দেয়।
৩১) ক্যাম্পাস প্রেম: সন্ধ্যাকালীন খাদ্যের বিনিময়ে (সাধারণত লেডিস হল থেকে আসে ) প্রত্যেক ছেলের আত্নবিসর্জন।
ছেলেদের জন্য বউ সেবার পূর্ব প্রস্তুতি। একই ডিপার্টমেন্টের হলে পূর্বশর্ত হিসেবে থাকে রিপোর্ট যেন প্রেমিকার চেয়ে সুন্দর না হয়।
৩২)অডিটোরিয়াম: যেখানে ভিসি আর প্রশাসনিক কর্মকর্তারা রাজনৈতিক নেতার মত স্টুডেন্ট উন্নয়নের মিথ্যা আশ্বাস দেন। পাশাপাশি এখানে স্টুডেন্টের নিজস্ব গুণ প্রদর্শনের সুব্যবস্থা থাকে ।
৩৩) শিক্ষক: একমাত্র তিনিই স্টুডেন্টদের মনের কথা বুঝেন এবং স্টুডেন্টের সার্বিক উন্নয়নে নিজের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন।
উনার হাত ধরেই একজন স্টুডেন্ট ভবিষ্যতের আলোর পথ দেখতে পায়।
৩৪)
৩৫)
…………………………………(চলবে…)
বি:দ্র: কারো দ্বিমত থাকলে, জানানোর জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে। দ্বিমত সংশোধন করা হবে। এবং নতুন কোন ধারণা থাকলে, সেটাও যুক্ত করা হবে।
সবশেষে, আরেকটা অনুরোধ লেখার কথাগুলিকে কেউ সিরিয়াসলি নিবেন না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।