আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শাহিনা শুধু মাত্র রানা প্লাজায় প্রান হারানো অজস্র মৃত মানুষের মুখ নয়, শাহিনার জীবন দিয়ে বাংলার মুখকে দেখা যায় ।

এইটা আমার ব্লগ। শাহিনা শুধু মাত্র রানা প্লাজায় প্রান হারানো অজস্র মৃত মানুষের মুখ নয়, শাহিনার জীবন দিয়ে বাংলার মুখ কে দেখে যায় । শাহীনার গল্প আমাদের বাংলার গল্প। যেখান আছে ১৬ কোটি সাধারণ মানুষ যারা অদম্য প্রাণ শক্তি এবং পরিশ্রম দিয়ে তার পরিবার এর জন্যে দু মুঠো ভাত যোগাড় করতে দিবা রাত্রি পরিশ্রম করে যাচ্ছে। তবুও সে তার নিজের এবং নিজের পরিবার এর জন্যে একটা সিকিউরড জীবন নিশ্চিত করতে পারেনা।

শাহিনার গল্প জাতি হিসেবে আমাদের বার বার জিততে জিততে হেরে যাওয়ার গল্প । এর থেকে কিছু বাস্তব চিত্র উঠে আসে । ১.শাহিনার প্রধান কন্সারন ছিল তার ছেলে। এখনো মায়ের দুধ খাওয়া শিশু টি। শাহিনা একটা বর্ণ ফাইটার।

তার ছেলের কথা চিন্তা করে, তার ছোট্ট অকিঞ্চিৎকর প্রাণটা কে সে টিকায় রাখছিল ১১০ ঘণ্টা। সে জানতো সে বেচে না থাকলে তার ছেলে আফ্রিকার জঙ্গলে দল থেকে বিচ্যুত হরিণ শাবক এর মত বিপর্যস্ত। ২.অর্থনৈতিক এবং নৈতিক ভাবে চরম বিপর্যস্ত ঐ সমাজে, নিজের পরিবার বাদে কে এখন কারটা দেখে ?হয়তো মেডিয়ার সামনে সারা দেশের মানুষের চোখের পানি ঝরানো মৃত্যুর কারণে, কোন ধনী ব্যাক্তি শাহিনার সন্তান এর দায়িত্ব নেবে। কিন্তূ সারা দেশের পথে ঘাটে যে অজস্র শাহিনা এমনকি রানা প্লাজার হত্যা কান্ডে আরো যারা মারা গেছে, সেই সব শাহিনা দের সন্তানদের কে দেখবে। ৩.বাংলাদেশ নামের এই ভগ্ন রাস্ট্রে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ব্যবসায়ী আর ধর্ম বিবসায়ীদের দের সেট করা আত্মঘাতী একটা আইডিয়লজিকাল ডিবেট এর কারনে হারিয়ে গেছে আমাদের মানুষের গল্প।

লক্ষ লক্ষ শাহিনা, সালাম বা সামাদের গল্প। কেউ জানেনা, স্বল্প আয় কিন্তু বেশী খরচ এবং কোন ধরনের সামাজিক নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি হীন চাকুরিতে প্রতি দিন লড়ে যাওয়া নিম্নবিত্তের বা নিম্ন মধ্যবিত্তের ঘরে ঘরে প্রতি নিয়ত একটা বিশাল মানবিক বিপর্যয় ঘটে চলছে। কেও তাদের দেখেনা, কেও তাদের খবর নেয় না । তাদের ভাগ্য উন্নয়নের কোন প্রচেষ্টা রাজনীতিবিদ দের নাই এবং বর্তমানে সাধারন জনতাও সেই ভাগ্য উন্নয়নের সংগ্রাম এর জন্যে রাজিনিতিবিদদের প্রেশার দেয়ার বদলে, আস্তিক নাস্তিক আর মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ বিপক্ষ শক্তি হিসেবে নিজেদের মধ্যে বিভাজিত হয়ে পরেছে। যাতে শাহিনা দের ভাগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা ক্রমেই দূর থেকে সুদূর পরাহত হচ্ছে।

৪. বাংলাদেশের ঐ পোড়া মাটিতে আমাদের ন্যুনতম রুটি রুজি যোগার করার সংগ্রামে দৈব বলে কিছু নাই, ভাগ্য বলে কিছু নাই। আমাদের কাজ, আমাদের চয়েস আমাদের, সিদ্ধান্ত আমাদের নিয়তি কে নির্ধারণ করে। ঐ সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হারামজাদারে মানব হত্যার দায়ে লটকানো উচিত। ৫. ভলানটিয়ার এবং নিয়মিত বাহিনী কি অসাধারণ মমতায় নিজের জীবনের রিস্ক নিয়ে এই উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে। রিয়াল হিরো।

মাঝে মাঝে মনে হয়, একটা ভূমিকম্পে যদি ঐ শহরের প্রতিটা স্ট্রাকচার ধ্বসে সব মরে যেত, তারপর যারা যারা বেচে থাকতো তারা এই রাষ্ট্রের ভুল গুলো শুধরে নিয়ে একটা নতুন সভ্য রাষ্ট্র গড়তো। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ২১ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.