গভীর কিছু শেখার আছে ....
আজ রাত ৯টা ৫ মিনিটে বাংলাভিশনে প্রচারিত হবে অনুসন্ধানী অনুষ্ঠান 'এক্স ক্রাইম'। অনুষ্ঠানটি গ্রন্থনা ও প্রযোজনা করেছেন রাহাত আহাম্মেদ। সম্প্রতি যায়যায়দিন চে কাফেতে এসেছিলেন তিনি। বলেছেন এক্স ক্রাইম নিয়ে তার ভাবনা ও অভিজ্ঞতার কথা। তার সঙ্গে বলা কথাগুলো শেয়ার করলাম এখানে-
এক্স ক্রাইম তৈরির আইডিয়া কিভাবে পেয়েছেন?
বাংলাভিশনের জন্য আমার প্রথম নিয়মিত প্রোগ্রাম ছিল ছোটদের অনুষ্ঠান ইচ্ছে ঘুড়ি।
এ অনুষ্ঠান তৈরির পাশাপাশি ভাবছিলাম আরো ক্রিয়েটিভ কোনো প্রোগ্রাম তৈরি করবো। এ সময় বিদেশি চ্যানেলগুলোর রিয়ালিটি শোগুলো দেখে মনে হলো সমাজের মানুষের উপকারে আসবে এমন কোনো অনুষ্ঠান তৈরি করা যায় কি না। এর পরই অপরাধ ও অনুসন্ধানীমূলক অনুষ্ঠান এক্স ক্রাইমের একটি প্রস্তুতি পর্ব নির্মাণ করি ও বাংলাভিশনের সিইও মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে জমা দিই। তিনি আমাকে যথাযথ পরামর্শ দিয়ে অনুষ্ঠানটি নিয়মিত তৈরি করতে উৎসাহিত করেন। আর আমার সহধর্মিণী ইউডার জার্নালিজমের টিচার সালমা আহমেদ এক্স ক্রাইমের স্ক্রিপ্ট তৈরিতে বেশ সহযোগিতা করে থাকেন।
এ পর্যন্ত এক্স ক্রাইমের ১৯টি পর্ব প্রচারিত হয়েছে। আজ প্রচারিত হবে এক্স ক্রাইমের ২০তম পর্ব।
এক্স ক্রাইমের লাইভ অ্যাকশন পর্বটি সম্পর্কে বলুন।
এক্স ক্রাইমের সবচেয়ে আকর্ষণীয় হলো লাইভ অ্যাকশন পর্ব। এতে সরাসরি র্যাবের সঙ্গে কোনো অপারেশনে অংশ নিয়ে সন্ত্রাসী বা অপরাধীকে গ্রেফতারের দৃশ্যটি ধারণ করে দেখানো হয়।
বেশ ঝুকিপূর্ণ বিধায় এ পর্বে শুটিং ইউনিটের কাউকে সঙ্গে না নিয়ে আমি একাই ক্যামেরা নিয়ে র্যাবের সঙ্গে অপারেশনে অংশ নিই। আর র্যাব সদস্যরাও আমাকে নিরাপত্তার জন্য তাদের বুলেট প্রুফ জ্যাকেট পরান।
লাইভ অ্যাকশন পর্ব ধারণ করতে গিয়ে স্মরণীয় কোনো অভিজ্ঞতার কথা বলুন।
অনেক দর্শক হয়তো ভাবতে পারেন, আমাদের লাইভ অ্যাকশন পর্বটি সাজানো। অথচ বাস্তবতা হলো, আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর অপরাধীদের ধরার যে কোনো অপারেশনের সরাসরি প্রতিচিত্র হলো এটি।
একবার নবীনগরে এডিসি শফীকের সঙ্গে একটি আর্মসের অপারেশনে আমি অংশ নিই। কিন্তু রাতের অন্ধকারে কিছুদূর যাওয়ার পরই সন্ত্রাসীরা আমাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে শুরু করে। আমি মাটিতে ড্রাইভ দিয়ে শুয়ে থাকি। কানের আশপাশ দিয়ে যে বৃষ্টির মতো গুলি যাচ্ছে এটাই শুধু বুঝতে পারছিলাম। মনে হচ্ছিল আজকেই বোধ হয় জীবনের শেষ দিন।
যাই হোক, সেখান থেকে একজন সন্ত্রাসীকে আর্মসসহ গ্রেফতার করা হয়েছিল।
এক্স ক্রাইম নিয়ে আপনার ভাবনা কি?
এক্স ক্রাইমকে আমি শুধু সচেতনতামূলক প্রোগ্রাম হিসেবেই নির্মাণ করতে চাইনি। বরং চেয়েছি এক্স ক্রাইমের মাধ্যমে মানুষ যেন উপকার পান। অপরাধীরা শুধু প্রশ্রয়ই পাবে, তাদের মুখোশ খোলার কেউ থাকবে না- এ ধারণা বদলে দেওয়ার জন্যই এক্স ক্রাইম এগিয়ে চলেছে।
এক্স ক্রাইম তৈরি করতে অন্যদের কেমন সাপোর্ট পাচ্ছেন?
এক্স ক্রাইম অনুষ্ঠানটি ইতিমধ্যে বেশ দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছে।
অনুষ্ঠানটি নির্মাণের জন্য র্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দা বাহিনীর বেশ সহযোগিতা পাই আমি। তবে অপরাধীদের কাছে হয়তো ইতিমধ্যেই বেশ খারাপ মানুষ হিসেবে আমার পরিচিতি ঘটেছে! কারণ সম্প্রতি এক্স ক্রাইমের নামে পাঠানো পার্সেলে বন্দুকের একটি কার্তুজ ও সঙ্গের চিরকুটে লেখা ছিল ‘একটা কার্তুজ পাঠালাম, তবে নেক্সট বুলেট তোর জন্য জমা রাখা আছে, তৈরি থাকিস!’ বলা বাহুল্য, বিষয়টি এটাই প্রমাণ করে যে অপরাধীদের কাছেও এক্স ক্রাইম মূর্তিমান আতঙ্ক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
এবার নিজের ব্যক্তিগত লাইফ সম্পর্কে বলুন। ডিরেকশনে এলেন কেন?
আসলে আমার ইচ্ছা ছিল একজন মিউজিশিয়ান হবো। বাংলাভিশনের নিয়মিত প্রোগ্রাম মিডিয়া ভুবনের টাইটেল সঙটি কিন্তু আমারই লেখা ও গাওয়া।
অর্থাৎ মিউজিকের প্রতি ভালোবাসা আমার সবচেয়ে বেশি। তবে ডকুমেন্টারি ও ক্যামেরার ওপর কয়েকটি কোর্স করায় নতুন কিছু সৃষ্টির প্রতি আগ্রহ আমাকে খুব টানতো। সে থেকেই মূলত ডিরেকশনে আসা। অথচ আমি কলকাতার নিউ পোর্ট ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ কমপ্লিট করেছি। এ ক্ষেত্রে মার্কেটিংয়ের চেয়ে সৃষ্টিশীল কিছু করার আগ্রহই বেশি টেনেছে।
আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে বলুন।
আগেই যেহেতু বলেছি মিউজিকের প্রতি আমার অপরিসীম ভালোবাসার কথা, সেহেতু মিউজিক নিয়ে কিছু কাজ করার ইচ্ছা রয়েছে। এ ছাড়া নাটকের ডিরেকশনেও আসার ইচ্ছা রয়েছে আমার।
[ ছবি : শরীফ সারওয়ার ]
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।