বঞ্চনার শক্ত হাত আজন্ম বেধে রেখে আমাকে করেছে দুঃখী । । দেশের একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় বলে ক্ষ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় । তাছাড়া এটি দেশের অন্যতম নয়নাভিরাম বিশ্ববিদ্যালয় । কিন্তু এই বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন কারণে পত্রিকায় শিরোনাম হয় ।
আজ আমি আমার এই পোস্টে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাগ ও অসামাজিক কার্যকলাপের কিছু উদাহরণ তুলে ধরবো ।
র্যাগের ১ম উদাহরণ :
"ভাই, আপনার কাছে একটা হেল্প চাই। জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটিতে আমার এক বোন (কাজিন) আজ প্রথম ক্লাস করতে গেছে, আইটি ডিপার্টমেন্টে, ফার্স্ট ইয়ার। ভাই! বোনটা আমার সারাদিন কাঁদল, কাঁদল আমার
খালা... কিছুই করতে পারলাম না ভাই !
ও জাহানারা হলে থাকে। ওর ডিপার্টমেন্টের বড় আপুরা ওকে ডেকে শারিরীক
এবং মানসিকভাবে লাঞ্চিত করে আধমরা করে দিয়েছে ।
ওর বড় আপুরা ওকে বলেছে ক্লাসের বড় ভাইদের কাছে গিয়ে তোমার ব্রেস্টের মাপ দিয়ে আসো...ভাই ! সব বলতে পারছিনা।
কাল ঐ বড় আপুরা সবাইকেই হলে থাকতে বলেছে, হল ছাড়া যাবেনা। আজ নাকি ওরা কেবল মাংস "ধুইছে", কাল "কশাবে"! ভাই, আমাদের প্রভাবশালী কোনো মামা/খালু নেই। আপনি তো ব্লগে লিখেন আপনি চাইলে হয়ত কিছু করতেও পারেন। আপনার ও বোন আছে, দয়া করে একজন ভাই হিসাবে একটু
হেল্প করেন ভাই..."
ক্লাসের প্রথমদিন নতুনদের উপর র্যার্গিং নতুন কিছু নয়।
প্রথমে র্যার্গিং দিয়ে শুরু হলেও পরে ভার্সিটির বড় ভাই/নেতাদের মনোরঞ্জনে শরীরটাও বিকিয়ে দিতে হয় টিকে থাকতে হলে।
খবরের কাগজে/ব্লগে এগুলো নিয়ে পড়তে পড়তে অনেকের কাছে হয়ত ডাল-ভাতের মত হয়ে গেছে ব্যাপার টা। কিন্তু মনে রাখুন-
আজ অন্য কারো বোন লাঞ্ছিত হচ্ছে, কাল হতে পারে আপনার বোন/আত্নীয় টিও। ফ্রেন্ডলিস্টের সবার কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি,যে যেভাবে পারেন প্লীজ হেল্প করেন! আপনাদের ফ্রেন্ডলিস্টে জাহানীরনগরইউনিভার্সিটির কেউ থাকলে প্লীজ এগিয়ে আসুন। আগামীকাল ঐ বোনটির লাঞ্ছিত হওয়া যেভাবে পারেন
বন্ধ করেন।
আর একটি মেয়েও যেন লাঞ্ছিত না হয়, আর একটি মেয়ের
স্বপ্ন যেন অঙ্কুরেই শেষ না হয়ে যায়।
২য় উদাহরণ :
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে একজন শিক্ষার্থী একটি আবাসিক হলে অবস্থান করছিল। গত শুক্রবার রাত ১১টার দিকে ওই ছাত্রের কক্ষে ঢোকে হলের ছয়জন শিক্ষার্থী। জিজ্ঞেস করে, ‘কিরে মুরগি, ভর্তি পরীক্ষা দিবি। ’ এরপর তাঁর শার্টের ভেতরে বালিশ দিয়ে গর্ভবতী মহিলার মতো বানিয়ে বিভিন্ন ধরনের অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করতে বাধ্য করা হয়।
এক পায়ে দাঁড় করিয়ে রাখা হয় প্রায় এক ঘণ্টা। চোখে জল না আসা পর্যন্ত চলে এ ধরনের মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন।
র্যাগিংয়ের নামে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীসহ অতি উৎসাহী সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের এভাবেই নির্যাতন চালায়। গত ৩ ফেব্রুয়ারি ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা ভর্তি-ইচ্ছুকেরা থাকার জায়গা হিসেবে হলের পরিচিত বড় ভাইদের কক্ষ বেছে নেয়।
পরীক্ষার প্রথম দিন থেকেই বিভিন্ন ছাত্রহলে ভর্তি-ইচ্ছুকেরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। তবে মীর মশাররফ হোসেন ও শহীদ সালাম-বরকত হলে এই প্রবণতা সবচেয়ে বেশি।
নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীদের অনেকেই ভর্তির সুযোগ হলেও এখানে পড়বে না বলে প্রথম আলোকে জানিয়েছে। গত বছর এ ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়ে পঞ্চগড়ের সিরাজুল ইসলাম, জাকির হোসেন, মজিবুর রহমানসহ অনেকে পরীক্ষা না দিয়েই ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে গিয়েছিল।
গত শনিবার নির্যাতনের শিকার এক ছাত্র বলেন, তাঁকে গর্ভবতী মহিলার অভিনয় করতে হয়েছে।
অভিনয় ভুল হলে করা হয়েছে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ। অ্যাজমার রোগী হওয়া সত্ত্বেও খালি গায়ে প্রায় এক ঘণ্টা এক পায়ে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। তিনি বলেন, ‘ভেবেছিলাম সকালে ঘুম থেকে উঠেই বাড়ি চলে যাব। কিন্তু আমার সঙ্গে ছোট বোন পরীক্ষা দিচ্ছে, তাই বাধ্য হয়েই থাকতে হচ্ছে। তবে চান্স পেলেও আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ব না।
’ আরেক শিক্ষার্থী জানান, তাঁকে মোট পাঁচবার নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। কখনো গরু, কখনো কুকুরের মতো আচরণ করতে হয়েছে।
ভর্তি-ইচ্ছুকদের নির্যাতনে অংশ নেওয়া একজন ছাত্র বলেন, ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা ছাত্রদের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সময় একটু মজা করা হয় মাত্র। র্যাগিংয়ের মাধ্যমে তাদের সঙ্গে দ্রুত সম্পর্কের উন্নতি করা যায় বলে তিনি মন্তব্য করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর মো. নাসির উদ্দিন বলেন, হলে র্যাগিং বন্ধ করতে প্রতিটি হলের প্রাধ্যক্ষকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বলা হবে।
ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সুহেল পারভেজ বলেন, সাধারণত শিক্ষার্থীরা মজা করার জন্য এটা করে। তবে এটি নির্যাতনের পর্যায়ে যাওয়া ঠিক নয়। হলের নেতা-কর্মীদের এ ব্যাপারে সতর্ক করা হবে।
নতুন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার নামে নির্যাতনের নিন্দা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক গালিব ইমতিয়াজ নাহিদ দাবি করেন, এ ধরনের নির্যাতনের সঙ্গে ছাত্রদলের কেউ জড়িত নয়।
খবর: দৈনিক প্রথম আলো, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ র্যাগিংয়ের নামে নির্যাতন ,
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
৩য় উদাহরণ :
ভর্তি পরীক্ষার আগে, ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সময় এবং ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার পর waiting list এ থাকার সুবাদে বেশ কয়েক মাস ভাসানী হলে থাকার ভাগ্য (সৌভাগ্য নাকি দুর্ভাগ্য জানি না) হয়েছিল।
থাকতাম এলাকার বড় ভাই খোকন ভাই এর রুমে। তিনি সম্ভবত থাকতেন ২৩৪ নম্বর রুমে যেটি ছাত্রদলের মার্কামারা রুম ছিল। রুমের ভিতর বিভিন্ন নায়িকাদের পোস্টার শোভা পেত। কি হলিউড কি বলিউড সব নায়িকাদের ই উপস্থিতি ছিল। কেবল বাংলা সিনামার নায়িকাদের উপস্থিতি ছিল না।
এর কারন কি হতে পারে তা গবেষণা করেও বের করতে পারি নি। সম্ভবত আমরা দেশীয় পণ্যে আকৃষ্ট হতে পছন্দ করি না। ওই যে দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা বোঝা যায় না ওই জাতীয় আর কি। Human psychology আসলেও গবেষণার দাবি রাখে।
ক্যাম্পাসে র্যাগ দেওয়ার রেওয়াজ কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম চালু হয়েছিল তা আমার জানা নেই।
অনেকেই বলেন জাহাঙ্গীরনগরে আবার অনেকেই বলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে। সঠিক তথ্যটা কেউ জানালে উপকৃত হব। এই র্যাগ দেওয়া হয় সাধারনত ১ম বর্ষের ক্লাশ শুরু হবার ঠিক পরপরই। ডাল বিষয়ক যেই কাহিনী আপনাদের এখন শোনাব তার সাথে এই র্যাগের কিছুটা সম্পর্ক আছে।
ফার্মাসি ডিপার্টমেন্টে waiting list এ ছিলাম।
যেহেতু ক্লাশ শুরু হবার পরেও অনেকে medical বা buet এ সুযোগ পেয়ে চলে যেত তাই waiting list থেকে ভর্তি হবার সম্ভাবনা থাকত। ক্লাশ শুরু হয়ে গেলে waiting list এর অনেকেই চান্স পাবার আশা ছেড়ে দিয়ে চলে যেত। তাই লিস্ট এর অনেক পেছনের জনও চান্স পেয়ে যেত। সেই ধান্দায় ক্যাম্পাসে থেকে গিয়েছিলাম। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় একটি আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হওয়াতে ১ম বর্ষেই সিট পাওয়া যেত।
তাই ভর্তির পরেই সবাই হলে উঠে যেত।
ভর্তি পরিক্ষার আগে থেকেই হলে ছিলাম। তাই হলের বেশিরভাগ ছাত্রই ভুলে গিয়েছিল যে আমি আসলে আবাসিক ছাত্র নই। আর খোকন ভাই এর রুমে ছিলাম তাই অন্যরা কেউ নতুন হিসাবে জ্বালাতন করত না। তিনি আমাকে তার ছোট ভাই হিসাবে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন।
যেদিনের ঘটনা সেদিন রাতে খাবার পর রুমে বসে আছি। পাশের বিছানায় আসাদ ভাই বসে ছিলেন। হঠাৎ করেই তার ফোন বেজে উঠল। কার সাথে যেন কথা বললেন। তারপর তাড়াহুড়া করে রুম ত্যাগ করার প্রস্তুতি নিলেন।
কি মনে করে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, আমার সাথে চল। একটা মুরগি ধরা পরসে। দেরি করলে মজা মিস হয়ে যাবে। কথার মাথামুণ্ডু কিছুই বুঝলাম না কিন্তু বড় ভাই বলছেন তাই আমিও ঝটপট তৈরি হয়ে নিলাম।
আমরা দুইজন মিলে তিন তলার একটা রুমে ঢুকলাম (রুম নাম্বার এই মুহরতে মনে পড়ছে না)।
ঢুকে দেখি তিনজন সিনিওর ভাই এর সামনে একটা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। চেহারা এবং ভাবভঙ্গি দেখেই বুঝলাম 1st year এবং নতুন হলে উঠেছে। এও বুঝলাম এই হচ্ছে সেই মুরগি। এটাও বোঝার বাকি থাকল না যে এই মুরগিকে এখন ছিলা হবে মানে র্যাগ দেওয়া হবে। বেচারার জন্য খারাপ লাগছিল কারন আমিও তো নতুন।
কিন্তু চুপচাপ দেখা ছাড়া কিছু করার ছিল না।
বিভিন্ন ভাবে ছেলেটাকে সাইজ করা হল। ডালের অংশটুকুতে আসি। কথোপকথন নিম্নরুপঃ
বড় ভাই- “এই মুরগি, তোর মাথার চুল এত নোংরা কেন? শ্যাম্পু করিস না?”
ছেলেটা (কাঁদো কাঁদো মুখ নিয়ে)- “ভাই করি তো কিন্তু আজ করা হয় নাই। “
বড় ভাই- “কেন করা হয় নাই?”
ছেলেটা (অপরাধী মুখ করে)- “আজ ঠাণ্ডা পরসে বেশি, তাই গোসলই করি নাই।
“
বড় ভাই- “খুব খারাপ, আমদের হলে থাকবি আর রেগুলার গোসল করবি না তা হয় না (প্রসঙ্গত তিনি নিজেও সাতদিনে একদিন গোসল করেন)”।
ছেলেটা (কাঁচুমাচু মুখ করে)- “আর হবে না ভাই। “
বড় ভাই- “ঠিক আছে, কিন্তু তোর চুল থেকে গন্ধ বের হচ্ছে। এখনই তোর চুলে শ্যাম্পু করতে হবে। “
ছেলেটা (অল্পের উপর দিয়ে বেঁচে গেছে এইরকম ভাব করে)- “জী ভাই, এখনই করছি।
”
বড় ভাই- “আরে দ্বারা, অস্থির হচ্ছিস কেন? এই রুমেই তোর চুলে শ্যাম্পু করতে হবে। আর আমাদের হলের পানি দিয়ে শ্যাম্পু করলে তোর চুলের ময়লা পরিষ্কার হবে না। হলের ডালের পানি দিয়ে তোর চুল শ্যাম্পু করতে হবে। ওই পিন্টু (হলের ডাইনিং বয়), ছোট গামলা দিয়ে এক গামলা ডাল নিয়ে আয় তো। “
বলাই বাহুল্য, বেচারাকে এই ডাল দিয়েই সেই রাতে চুল শ্যাম্পু করতে হয়েছিল।
ডালের এই চমৎকার ব্যবহার প্রথম দেখলাম। আমাদের দেশের বিজ্ঞানীরা এই নিয়ে গবেষণা করতে পারেন।
৪র্থ উদাহরণ :
তখন ২০০০-২০০১ শিক্ষাবর্ষ। জাবিতে সাবজেক্ট ভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষা হয়ে থাকে। নানারকম অভিজ্ঞতা ও প্রতিকূলতার মধ্যে বেশ কয়েকটি বিষয়ে আমি ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিলেও চান্স পেলাম সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের একটি সাবজেক্টে।
ভর্তি হওয়ার পরে আমার কপালে জুটল বিশ্ববিদ্যালয়ে মেন্টাল হসপিটাল নামে পরিচিত মীর মশাররফ হোসেন হল ( সংক্ষেপে এম, এইচ হল)। বিখ্যাত স্থপতি মাযহারুল ইসলাম সাহেবের অসাধারণ এক নকশার মূর্ত প্রতীক এশিয়া মহাদেশের কথিত বৃহত্তম ছাত্রাবাসটি। প্রজাপ্রতি আকৃতির এই হলটির সৌন্দর্য নিজ চোখে না দেখলে বুঝা সম্ভব নয়। ছাত্রাবাসটির চতুর্দিকে একবার ঘুরে আসতে প্রায় ১ ঘন্টা সময় দরকার। হলটির স্থাপত্য শৈলীর কারনে সবগুলো কক্ষেই প্রকৃতির বাতাস প্রবেশ করে।
( এমনকি বাথরুম ও টয়লেটেও)। হল/ভবনটির অভ্যন্তরে বিশাল আকৃতির দু'টি পুষ্পসজ্জিত মাঠ রয়েছে। প্রথমদিন হলের কিছু অফিসিয়াল কাজ ও সিটের সন্ধান করতে গিয়ে আমরা নবাগত সবাই ভয়াবহ রকমের কিছু বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হই। আমরা যারা ভর্তি পরীক্ষার সময় হলে অবস্থান করেছিলাম তাদের তুলনায় যারা হলে একেবারেই নবীন তাদের বিপদ হয়েছিল অনেক বেশি। কারন ছাত্রাবাসটিতে নতুন কেউ প্রবেশ করলে কয়েক ঘন্টা ঘুরাঘুরি করলেও হল থেকে বের হওয়ার পথ /সিড়ি হয়তো শেষ হবে না।
এমনকি পরবর্তীতে দেখেছিলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সালাম-বরকত হলের ৪র্থ বর্ষের এক ছাএ এমএইচ হলের এ ব্লকের আমার রুম থেকে বের হওয়ার পর ঘন্টাখানেক ঘুরাঘুরির করে আবার আমার রুমে এসে লজ্জা ভেঙ্গে বলেছিলেন ছোট ভাই আমার সাথে একটু আসতে হবে , কারন আমি হল থেকে বের হওয়ার পথ খুঁজে পাচ্ছিনা। তাই - নিশ্চয় বুঝতেই পারছেন একজন নতুন ছাত্রের অবস্থা কি হতে পারে। সিট প্রাপ্তির আশা ও অফিসিয়াল কাজে হলের গেটে আসতেই আমাদের কে বিভিন্ন গ্রুপে ১/২/৩ জনকে হলের হাউস টিউটর পরিচয়ে বিভিন্ন বড় ভাইদের কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নিয়ে যাওয়ার আমাদের সাথে যে আচরণ করা হয়, সেটা ভর্তি পরীক্ষা দিতে এসে যে ঘটনার মুখোমুখি হওয়ার কথা ২য় পর্বে লিখেছিলাম তার চেয়ে বহুগুন ভয়াবহ। এসব আচরণ এতটাই বিব্রতকর ছিল যে , তার একটাও ব্লগে লেখার উপযোগী নয়।
কারো কারো ভাগ্যে ৫ থেকে ১০ বার পর্যন্ত এসব বিব্রতকর ঘটনা কপালে জোটেছিল।
নবাগতদেরকে দিয়ে যা যা সাধারনত করানো হয়-
১. জীবনে কখনো কোনোভাবে সেক্স করেছে কিনা কথার মার-প্যাচে বিব্রত করা
২. পিতা-মাতা ও পরিবারের অন্যদের জড়িয়ে অশ্লীল ভাষা ব্যবহার
৩. সবার সামনে পুরোপুরি নগ্ন করে নাচানো
৪. সবার সম্মুখে চরম অশ্লীল চটি তথা খারাপ বই পড়তে বাধ্য করা
৫. সবার সম্মুখে বীর্যপাত করতে বাধ্য করা
৬. জোর করে প্রমান করানোর চেষ্টা করা যে নবাগত ছাত্রটি শিবিরের রাজনীতি করে। (এটা করতে পারলে পিটিয়ে মেরে ফেলার রেকর্ড আছে)।
৭. সবার সম্মুখে ২/৩ জনকে সমকামীতা বা গ্রুপ সেক্সে বাধ্য করা।
৮. দাত মাজার পেস্ট খাইতে বাধ্য করা।
৯. সবার সম্মুখে পর্ণো দৃশ্য দেখতে বাধ্য করা .....ইত্যাদি।
হলে প্রবেশের সময় দোতলা থেকে নবাগত কয়েকজন ছাত্রের উপর বোতল থেকে গরম পানি নিক্ষেপ করে উষ্ণ সম্বর্ধনা জানান তত্কালীন ক্ষমতাসীন দলের দুর্দর্ষ ক্যাডার পদার্থ বিজ্ঞানের ২৬ ব্যাচের মিঠু দা ( দাদা হিন্দু হলেও অজানা প্রায়ই কারনে খালি গায়ে হাফপ্যান্ট ও টুপি পরে থাকতেন)। আর এ উষ্ণ সম্বর্ধনার গরম পানি ছিল দাদার প্রস্রাব।
- এসব ঘটনার ফলে কয়েকজন বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে চলে গিয়েছেন, আর ফিরেননি কোনোদিন।
- প্রচন্ড শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার পরিসংখ্যান বিভাগে ভর্তি হওয়া সিরাজগন্জের সরল ছেলে সজল যন্ত্রনায় ছটফট করতে করতে নির্যাতনের কয়েকদিনের মাথায় দুনিয়া ছেড়ে চলে যায়।
- গভীর রাতে প্রচন্ড শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার অনেককেই সেন্সলেস্ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল সহ বিভিন্ন মেডিকেলে ভর্তি করা হতো। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকেছে নীরব।
(ছাত্রী হলের লোমহর্ষক ঘটনা)
ভর্তি হওয়া নতুন মেয়েদের সাথে করা আচরণ এতটাই বিব্রতকর ছিল যে , তার একটাও ব্লগে লেখার উপযোগী নয়। তার পরেও বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে বিভিন্ন সময়ে বন্ধুদের কাছ থেকে তাদের নির্যাতীত বান্ধবীদের বলা কিছু নির্যাতনের ঘটনার ধরণ ব্লগার বন্ধুদের ধারনার জন্য পেশ করছি। নামগুলো কল্পিত
কেস-১
জাহানারা ইমাম হলের নৃবিজ্ঞান বিজ্ঞান বিভাগের সিনিয়র ছাত্রী গাঁজা সম্রাজ্ঞী নামে পরিচিত সূচি (তার গাঁজা সেবন ও হলে রুমের সামনে টবে গাঁজা চাষের বিষয়টি ক্যাম্পাসের প্রায় সকলেরই জানা) হলের নামাজরুমে অবস্থানরত ( উল্লেখ্য সিট সংকটের কারনে নামাজরুমে থাকতে হতো) একজন নবাগত ছাত্রী লুপাকে তার রুমে ডেকে নিয়ে যায়।
সেখানে গাঁজা সম্রাজ্ঞী সূচির সাথে আরো ৩জন সিনিয়র ছাত্রী যোগ দেয়। উত্তরবঙ্গের অজো পাড়া গাঁ থেকে আসা লুপাকে সূচির রুমে নিয়েই কক্ষের দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়। সূচি গাঁজা সম্বলিত একটি সিগারেট ধরায়। ঘটনার আকস্মিকতায় লুপা একেবারে থতমত খেয়ে যায়। এরপর লুপাকে বলা হয় আপুরা যা বলবে তাই করতে হবে, তা নাহলে তোমার (লুপার) ভর্তি বাতিল হয়ে যাবে।
আর এটাই নাকি জাবির নিয়ম। লুপাকে সিগারেট খেতে বললে সে অপারগতা প্রকাশ করে। এরপর লুপাকে একটি ম্যাচের কাঠি দিয়ে সূচির রুমের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ মাপতে দিয়ে তারা গাঁজা সেবন ও ড্রিংকস্ করতে থাকে। এরপর শুরু হয় আসল পর্ব। লুপাকে জোর করে স্বীকার করানো চেষ্টা করা হয় সে এ পর্যন্ত কতজনের সাথে সেক্স করেছে ? কি কি খারাপ অভ্যাস রয়েছে? আর এসব প্রশ্ন করা হয় চরম অকথ্য ও নোংরা ভাষায়।
তারা এসব প্রশ্নের স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য বলে তারা সবাই এসব করেছে , সে কেন করেনি? সূচি ও সঙ্গীরা লুপাকে প্রায় বিবস্র করে জোরপূর্বক। লুপার দেহের গঠন নিয়ে অত্যন্ত অশালীন ও আপত্তিকর মন্তব্য করে। লুপাকে তাদের সামনেই চরম বিকৃত কাজের জন্য চাপ দেওয়া হয়। চলে বর্ণনাতীত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। এরপর সূচি তার সঙ্গীর সাথে বিকৃত কাজ করে লুপাকে শিখানোর চেষ্টা করে, কিন্তু ততত্ক্ষনে লুপা সেন্সলেস।
পরে লুপা বিশ্ববিদ্যালয় না ছাড়লেও এরকম চরম বিকৃত ও ভয়াবহ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের কারনে কেউ কেউ জাবিতে পড়াশুনার ইতি টেনে চলে যায়।
কেস- ২
সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের সামনে চত্তরে। অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্র পথিক একজন নবাগত ছাত্র সজীবকে তার বন্ধুদের মাঝ থেকে ডেকে নিয়ে আসল মুন্নি, কাজল, দিপা, বাধন ও মুনের কাছে। শুরুতেই মুন গ্রামের কলেজ থেকে পড়াশোনা করে আসা শান্ত ও নিরীহ প্রকৃতির ছেলে সজীব কে একটা গালি দিয়ে প্রশ্ন করল তোর নাম নাম কি? সজীব কাঁপতে কাঁপতে তার নাম বলে। এবার মুন্নির প্রশ্ন কখনো কোন মেয়ের বুকের দুধ খেয়েছিস? ধরেছিস? সজীব উত্তর দেয় না।
এরপর ওরা সবাই সজীবকে মিথ্যাবাদী বলতে থাকে এবং সজীবকে স্বীকার করানোর চেষ্টা করতে থাকে। সজীব কোনো অবস্থাতেই রাজী না হলে বাধন বলে , তোর মায়ের দুধ খাসনি? ধরিসনি? তোর চিন্তা এত খারাপ কেন? ইত্যাদি,,। নিরীহ ও সরল ছেলে সজীব ভ্যাবাচ্যাকা খায়। এরপর মুন সজীবের প্যান্টের চেইনের দিকে ইশারা করে বলে ওটা উঁচু কেন? খোল ত? বন্ধুক রেখেছিস কিনা? এরপর যা ঘটে তা বর্ণনাতীত। এসবের মাঝে পথিক, কমল , পলাশ থাকে নিরব দর্শক।
মেয়েদের হলে নবাগত মেয়েদেরকে দিয়ে সাধারনত যা যা করানো হয়-
১. জীবনে কখনো কোনোভাবে সেক্স করেছে কিনা কথার মার-প্যাচে বিব্রত করা
২. পিতা-মাতা ও পরিবারের অন্যদের জড়িয়ে অশ্লীল ভাষা ব্যবহার
৩. সবার সামনে পুরোপুরি নগ্ন করে নাচানো
৪. সবার সম্মুখে চরম অশ্লীল চটি তথা খারাপ বই পড়তে বাধ্য করা
৫. সবার সম্মুখে বীর্যপাত করতে বাধ্য করা
৬. জোর করে প্রমান করানোর চেষ্টা করা যে নবাগতা ছাত্রীটি শিবিরের রাজনীতি করে।
৭. সবার সম্মুখে ২/৩ জনকে সমকামীতা বা গ্রুপ সেক্সে বাধ্য করা।
৮. দাত মাজার পেস্ট খাইতে বাধ্য করা।
৯. ম্যাচের কাঠি দিয়ে রুমের মেঝে মাপানো।
১০. সবার সম্মুখে পর্ণো দৃশ্য দেখতে বাধ্য করা .....ইত্যাদি।
মেয়েদের নিয়ে রয়েছে আরো অনেক বিচিত্র ও লোমহর্ষক ঘটনা।
৫ম উদাহরণ :
বিভিন্ন হলের ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হলের তুলনায় ছাত্রী হলগুলোতে র্যাগিংয়ের ঘটনা বেশি ঘটে। কিন্তু ছাত্রীরা ভয়ে অভিযোগ করেন না। সাধারণত প্রথমবর্ষে ভর্তি হওয়া ছাত্রীরাই র্যাগিংয়ের শিকার হয়। তাই অধিকাংশ ছাত্রীর ক্যাম্পাস জীবনের প্রথম দিনগুলো থাকে আতঙ্কের।
প্রথমবর্ষে ভর্তি হয়ে মা বাবাকে ছেড়ে হলে আসা নতুন শিক্ষার্থীদেরকে হলের বয়োজ্যেষ্ঠ শিক্ষার্থীরা যেখানে স্নেহ-ভালোবাসা দিয়ে অভিভাবকের ভূমিকা পালন করবেন। সেখানে তাদের কুরুচিপূর্ণ ব্যবহার প্রথমবর্ষের ছাত্রীদের কাছে আতঙ্ক হয়ে দেখা দিয়েছে।
হলের সিনিয়র ছাত্রীদের র্যাগিংয়ের ভয়ে অনেকে হল ছেড়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে সব সিনিয়র ছাত্রীই খারাপ না বলে জানান র্যাগিংয়ের শিকার হওয়া প্রথম বর্ষেরে একজন ছাত্রী।
গত শনিবার গভীর রাতে তিন ঘণ্টাব্যাপী প্রীতিলতা হলের লোক প্রশাসন বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী উমাইয়া তাসনীম তনুজাকে একই হলের দ্বিতীয় বর্ষের ইংরেজি বিভাগের ছাত্রী সোহানা সুলতানা তিথি, অর্থনীতি বিভাগের আয়েশা সিদ্দিকা তামান্নাসহ একই ব্যাচের পিংকি, রুম্পা, মিশু ও তুলি র্যাগ দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় রোববার উমাইয়া তাসনীম তনুজা দোষীদের বিচার ও তার সার্বিক নিরাপত্তা চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, তনুজাকে অশ্রাব্য ভাষায় মা বাবা তুলে গালাগাল ও হল থেকে বের করে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। এক পর্যায়ে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়লে ঘণ্টা তিনেক পর ছেড়ে দেয়া হয়।
৬ষ্ঠ উদাহরণ :
২১ ডিসেম্বর ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হলে র্যাগের প্রকোপ বেড়ে যায়। গত বৃহস্পতিবার ফার্মাসি বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী ওই বিভাগের তৃতীয় বর্ষের কিছু শিক্ষার্থীদের দ্বারা র্যাগিংয়ের শিকার হন।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রোভিসি’র ছেলে র্যাগিংয়ের শিকার হলে সে তার বাবাকে অবহিত করলে প্রশাসন বিষয়টি আমলে নেয়। শনিবার দুপুরে চারজনকে তিন মাসের জন্য সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
ফার্মেসি বিভাগের বহিষ্কৃতরা হলেন- আশিকুর রহমান রুপা (তৃতীয় বর্ষ), মহিদুর রহমান (তৃতীয় বর্ষ), মুদাচ্ছির হাসান আবিব (তৃতীয় বর্ষ) ও রুহুল মাহবুব (দ্বিতীয় বর্ষ)। রেজিস্টার আবু বকর সিদ্দিক এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
৭ম উদাহরণ :
অসমাজিক কার্যকলাপ :
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হল দেশের সর্ব্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ।
এগুলোকে মানুষ গড়ার প্রতিষ্ঠান বা কারখানা হিসেবে আখ্যায়িত করে থাকেন অনেকেই। যাদের সন্তান এখানে পড়াশুনা করে সে সকল অভিভাবক যে কোন পরিবেশে নিজের সন্তানের কথা স্বরণ করে গর্বিত বুকে পরিচয় দিতে কুন্ঠিত হন না। কিন্তু এ সকল প্রতিষ্ঠানে আসলেই কি সত্যিকার মানুষ তৈরী হচ্ছে বা বের হচ্ছে। আসুন এখন বাস্তব চিত্র দেখে নিই:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রণী ব্যাংকের পিছনে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে আপনি কখনো গেলে রীতিমত অবাক হবেন নিশ্চিত। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এতগুলো কনডমের প্যাকেট আপনাকে মানসিকভাবে করবে আহত যদি আপনার মেয়ে বা বোন অথবা নিকটাত্বীয় এখানে পড়াশুনা করে।
আরেকটু সামনে গেলে পাবেন ক্ষুদ্রাকৃতির চায়ের স্টল। আপাত: দেখলে মনে হবে কোন বিক্রি নেই। কিন্তু প্রশ্নটি যদি দোকানদারকেই করেন তার ভাষায়,"সন্ধ্যার পর যে বিক্রি করি তা দিয়ে দিন ভালোই যায়"। সেক্সুয়াল ট্যাবলেট বিক্রয় যার পেশা এবং ব্যবসা।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রায় অভিযোগ শুনা যায় শিক্ষক কর্তৃক যৌন হয়রানী।
বেশী মার্কসের কথা বলে বা অন্য কোন প্রলোভন দেখিয়ে ছাত্রীদের সাথে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। পত্রিকার পাতায় প্রকাশিত হয় গুটিকয়েক ঘটনা। আড়ালেই থেকে যায় অধিকাংশ।
এখানকার টয়লেটগুলোতে গেলে আপনার বিশ্রী অভিজ্ঞতা সঞ্চিত হবে। টয়লেটের ফ্লাশগুলোতে ছড়িয়ে আছে ফেনসিডিলের বোতল, নানা প্রকার কনডমের প্যাকেট আর লেডী স্ট্রীপ।
যা দৈনিক যুগান্তর পত্রিকা ছবিসহ একদিন প্রকাশিত করেছিল।
৮ম উদাহরণ :
এমন বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে ধর্ষণের সেঞ্চুরী হয়েছে কিন্তু কোন বিচার হয়নি
২০১২ সালের শুরুতে দেশের প্রায় সবকয়টা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ ছাত্র লীগ নেতা-কর্মীরা বেপরোয়া ভাবে নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় নেমেছে এবং ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে । আর সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও ছাত্র লীগকে সমর্থন জানিয়ে যাচ্ছে।
বর্তমানে সবচেয়ে বেশী সমালোচিত ও নিন্দিত হলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র লীগ-এর ভিসি গ্রুপ। ভিসি গ্রুপটা ছাত্র লীগেরই একটা গ্রুপ ।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতির সাথে পরিচিতরা বিভিন্ন গ্রুপের নাম শুনে থাকবেন। একই ছাত্র সংগঠনের একাধিক গ্রুপ থাকে এবং গ্রুপগুলো তাদের ছাত্র-নেতার নামে পরিচিতি লাভ করে। এদের কোন কোন নাম শুনতেও কেমন জেনো লাগে । যেমন : রেপিস্ট গ্রুপ, কিলার গ্রুপ । কিন্তু এর আগে কেউ কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ভিসি গ্রুপে’র নাম শুনেনি ।
গণমাধ্যমগুলোর তথ্য মতে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মহামান্য ভিসি ড. শরীফ এলামুল কবীর দ্বারা লালিত পালিত রাজনৈতিক গ্রুপটার নাম হল ‘ভিসি গ্রুপ’। তবে আজ আমি বাংলাদেশ ছাত্র লীগের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ভিসি গ্রুপ’ সম্পর্কে তেমন কোন তথ্য উপস্হাপন করছি না ।
আজ আমি ইংরেজী দৈনিক ডেইলি স্টারের একটি ব্যানার হেডিং সম্পর্কে কিছু বলবো । ঘটনাটি ১৯৯৮ সালের অগাষ্ট সেপ্টেম্বর মাসের । দৈনিক মানব জমিন সর্বপ্রথম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ ছাত্র লীগের ভয়াবহ ধর্ষণ কর্ম অনুশীলনের তথ্য দেয় ।
তারপর দৈনিক দিনকাল । ইনকিলাব আর ভোরের কাগজ রহস্যজনক কারণে প্রথম নিরব থাকে । জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ ছাত্র লীগের সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দীন মানিক দৈনিক দিনকালের বিরোদ্ধে মানহানির মামলা করলে ঘটনা জটিল রুপ ধারন করে । তখন পত্রিকা পাঠকদের কৌতুল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে ধাবিত হয় । আর পত্রিকাগুলোর হাতে গোনা কয়েকটি তখন পাঠকদের কৌতুল নিবৃত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে ।
তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে ইংরেজী দৈনিক ডেইলি স্টার । তাহলে আমরা আজ দেখবো ডেইলী স্টারের একটা শীর্ষ খবর যা ২৬ সেপ্টেম্বর ১৯৯৮ তারিখে প্রকাশ হয়েছিল ।
কৃতজ্ঞতা :অর্থনীতি বিভাগের প্রাক্তন এক ছাত্র
বিস্তারিত ও পূর্বপ্রকাশঃ এখানে ক্লিক করুন // ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।