সাহিত্যের সাইটhttp://www.samowiki.net। বইয়ের সাইট http://www.boierdokan.com
ঢাকার বাইরে থেকে ফিরে পুরো অচল একটা শহর দেখে, দোকানে দোকানে মোমবাতির জন্য হাহাকার দেখেও বুঝতে পারছিলাম না দক্ষিণবঙ্গে কী ঘটে গেছে। মানুষ বিদ্যুতবিহীন, পানিবিহীন, উৎকণ্ঠিত। ফোনে নেটওয়ার্ক নাই। আত্মীয় স্বজন কে কোথায় আছে তার নিশ্চিত খবর জানা নেই।
আজ বিডিনিউজ খুলে বসে আছি। মৃতের খবর বাড়ছে। মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। হাজার ছড়াবে। অনুমান করতে ভয় লাগছে।
কত হতে পারে জানি না, খুব বেশি ভাবতে ভয় করছে। এই মৃত্যুর শোক আমার কাছে দুই দিনের পানি-বিদ্যুত না থাকার কষ্টের চেয়ে বড় হতে পারলে কতই না সুখের বেদনা হতো মনে। কিন্তু বুকে হাত দিয়ে বুঝি, এই মৃত্যুর খবরে আমি তেমনিই নিশ্চুপ বসে আছি যেভাবে বসে থাকতাম বার্মায় বা থাইল্যান্ডে বা চীনে এত লোক মারা গেলে। সবচেয়ে ভয় পাচ্ছি এখন নিজের নিরুদ্বেগ, নিরুত্তাপ অনুভূতিকে। সহমর্মিতা, সহানুভূতি আর একাত্মবোধ হারিয়ে যাচ্ছে।
অসহনীয় পরিস্থিতি।
কিছুক্ষণ আগে এক বন্ধু ফোন করে বললো সঞ্জীব চৌধুরী মারা গেছেন, অ্যাপোলো হাসপাতালে। পরে শুনলাম, না সঞ্জীবদা এখনও বেঁচে আছেন। তবে খুব কষ্টে আছেন। খুবই নাজুক তার পরিস্থিতি।
কাল খবর পেয়েছিলাম উনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। দেখতে যাবো যাচ্ছি করে আজ বিকাল হয়ে গেল। দক্ষিণ বঙ্গে মারা গেলেন ১০০০ মানুষ। সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে। মৃত্যুর কারাভাঁয় যারা পরিচিত তাদের জন্য প্রচণ্ড শোক হয়, কষ্ট হয়।
কিন্তু যে মারা গেল, তার কি খুব কষ্ট হয়? না, যে মৃত্যু সংবাদ শোনে আর যে বেঁচে থাকে তারই কষ্ট হয়। স্মৃতিই সব অনিষ্টের মূলে। নইলে মানুষের মৃত্যুতে মানুষের কোনো কষ্টই হতো না। একজন কেন হাজার হাজার মানুষ মরলেও আমরা আনন্দ করতে পারতাম।
সিডরে নিহত হাজার মানুষের জন্য কষ্ট হচ্ছে।
সিডরে যারা মারা গেছেন তাদের স্বজনদের কেউ যদি বেঁচে থাকেন তবে তাদেরও কষ্ট হচ্ছে হয়তো। নইলে, সেই গায়েবী স্বজনদের পক্ষ থেকে আমাদেরই হাহাকার করতে হবে। অন্তত একদিন রাষ্ট্রীয়ভাবে শোক পালন করতে হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।