নিজেকে নিয়ে কিছু একটা লেখার চেষ্টা, এখোনো করে যাচ্ছি . . .
সবকিছুতেই গড়রাজি, শুধু এই একটাই ব্যপার যেটাতে আমার সমস্ত অনীহা। বাজার করা। বাজারের ব্যাগ হাতে বিভিন্ন দোকানে ঘুরে ফিরে দরদাম করে জিনিস কেনা খুবই অস্বস্তিকর একটা ব্যপার মনে হয়। আর পারলেও তো, না পারি দোকানদারের সাথে দরদাম করনে, না চিনি ভাল জিনিস। সমস্যা সবদিকেই!
বাবা অসুস্থ হওয়ার পর থেকে মা-ই বাজার সদাই করেন, সেদিন সকাল থেকে মা বেশ ত্যাক্ত বিরক্তই আমার উপর, উপলক্ষ ”বাজার” করা নিয়ে।
আর কতদিন ! তাই বেশ রাগত স্বরের আদেশেই আমাকে একপ্রকার একা বাজারে পাঠালেন। বাজার আমাকে করে আনতেই হবে, তা পচাঁ হোক আর মন্দ হোক।
আল্লাহর নাম বুকে নিয়ে রওনা হলাম বাজারের দিকে, এখানে তো একদামের দোকান নেই যে দরদাম করা লাগবেনা, একপ্রকার চাপা ভয়ও কাজ করছিল যদি দামে ঠকে যাই ! যাই হোক শুরু হল আমার বাজার অভিযান মাছের বাজারে কিছুক্ষন দাড়িয়ে পাশ কাটিয়ে ফিরে এলাম। গরু না মহিষ দিযেছে সেই আশাংকায় সেদিকেও নজর দিলাম না, শাক সবজির দোকানের সামনে মূলার ঝুড়ির সামনে দাড়িয়ে দর করে একটি ৫০০টাকার নোট দিলাম ভাঙ্গিয়ে টাকা ফেরত দেবার জন্য, দোকানদারটি ভাঙ্গানোর কথা বলে বাহিরে গেল আমাকে দাড় করিয়ে। দাড়িয়ে আছি তো আছি, মূলা দোকানদারের কোন খবর নেই এদিকে ঝুড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ঝুড়িতে বেশী মূলাও নেই, আমিই বোধহয় শেষের কাষ্টমার।
অপেক্ষা আর শেষ হয়না কিন্তু মূলা দোকানদার আর ফিরেনা, বুঝতে বাকী থাকেনা আসল ঘটনা, মূলা দোকানদার ৫০০ টাকা নিয়ে পাগার পাড়।
আমার হাতে তখন ২কেজি মূলা সমেত একটি ব্যাগ, এদিকে পকেটে যা ভাংতি আছে তাতে বাড়ী ফেরার পথের ভাড়াও হবেনা। মাথা পুরা খারাপ, কি করব ! কাউকে কিছু বলতেও পারছিনা, কিন্তু বাড়ী তো ফিরতে হবে অবশেষে ২কেজি মূলা ৩৫টাকায় বিক্রি করে পথের ভাড়া যোগাড় করে বাড়ী ফিরলাম। যদিও কেনা দাম ৪০ টাকা ৫ টাকা লসে বিক্রি করেছি।
বাসায় ফিরলে খালি ব্যাগ আর টাকা খোয়ানোর গল্প শুনে মা দু:খ প্রকাশ করবে কি এমনভাবে হাসাহাসি শুরু করল, পাশের বাসা, উপর, নীচ সব ফ্লাটের বাসিন্দা এক হল।
সবাই হাসছে আার মাঝে আমি মুখ বন্ধ করে বসে আছি, আর মা-এর উপর খেপছি, তিনি গেলেই তো আজ এমন কান্ডটা হতনা।
৫০০টাকা হারানোর কষ্ট না, কিন্তু এভাবে প্রথম বাজারের স্মৃতি “মূলা বেচেঁ বাড়ী ফেরা” সত্যিই সারাজীবন মনে থাকবে !
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।