সময়... অনাদি... হতে... অনন্তের... পথে...
আজ ভারতের অবিসংবাদিত নেতা, জাতির জনক, অহিংস আন্দোলনের প্রবক্তা মহাত্মা গান্ধীর ১৩৯তম জন্মদিন। জাতিসংঘ ক্ষণজন্মা এ মহান পুরুষের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তার জন্ম তারিখকে ‘আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস’ ঘোষণা করেছে।
শুক্রবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে সর্বসম্মতিক্রমে ২ অক্টোবরকে আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস ঘোষণার প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। যেসব দেশ প্রস্তাবটি উত্থাপন করে, তার মধ্যে বাংলাদেশও ছিল। বিশ্ব থেকে হিংসা, বিদ্বেষ, হানাহানি, মারামারি, সহিষ্ণুতা ও রক্তপাত বন্ধে বিশ্ববাসীর চেতনাকে তথা বিশ্ব বিবেককে জাগিয়ে তুলতেই আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস ঘোষণার উদ্যোগ নেয়া হয়।
সর্বসম্মতিক্রমে প্রস্তাবটি পাস হওয়ায় গান্ধীর অহিংস আন্দোলনের প্রতি বিশ্ব সম্প্রদায়ের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি মিলল।
দিবসটি উপলক্ষে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তিনি বলেন, বিশ্ব নেতারা পৃথিবী থেকে সহিংসতার অবসান ঘটিয়ে শান্তির সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার আশায় বিশ্ব সংস্থা গড়ে তুলেছিলেন। কিন্তু এখনও সেই আশা পূরণ হয়নি। বিশ্বের বিবেকবান মানুষ এখনও শান্তির অন্বেষণে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন।
এ প্রসঙ্গে তিনি অনন্য বিশ্ব ব্যক্তিত্ব মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর নাম উল্লেখ করেন। মুন বলেন, মহাত্মা গান্ধীর মতবাদ এখন অনেক বেশি প্রয়োজন। কেননা, আমাদের চারপাশে এখন কেবলই অসহিষ্ণুতা, উত্তেজনা, সহিংসতা। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে দরকার গান্ধীর অহিংস মতবাদ ছড়িয়ে দেয়া। এ আন্তর্জাতিক দিবসটি সহিষ্ণুতা ও অহিংসা প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের পুরোধা মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী ১৮৬৯ সালে ভারতের গুজরাট রাজ্যে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ভারতে লেখাপড়া শেষ করে ব্রিটেনে যান ব্যারিস্টারি পড়তে। বার-এট-’ল পাস করার পর তিনি ১৮৯১ সালে ভারতে ফিরে যান। ১৮৯৩ সালে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকা যান আইন পেশায় যোগ দিতে। ওখানে অবস্থানকালে তিনি ভারতীয় অভিবাসীদের ওপর আফ্রিকানদের আচরণে কষ্ট পান।
তখন তাদের মৌলিক অধিকার আদায়ের আন্দোলনে নেমে পড়েন। তিনি ‘সত্যাগ্রহ আন্দোলন’ শুরু করেন। এ অহিংস আন্দোলনের মুখে ১৯১৪ সালে তৎকালীন আফ্রিকা সরকার তার অনেক দাবিই মেনে নিয়েছিল।
এর পরপরই তিনি ভারতে ফিরে যান। ভারতে ফিরে ১৯১৫ সালে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে অহিংস পথে অসহযোগ আন্দোলন শুরু করেন।
কিছুদিনের মধ্যে তিনি ভারত উপমহাদেশের রাজনীতির প্রাণপুরুষ হয়ে ওঠেন।
অহিংস আন্দোলনের প্রবক্তা গান্ধী ১৯৪৮ সালে প্রার্থনারত অবস্থায় নিহত হন উগ্রপন্থী নাথুরাম গডসের হাতে।
মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিন এ অহিংস দিবস উপলক্ষে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও নানা অনুষ্ঠান পালন করা হয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।