১.
ছোট বেলায় ঈদের চাঁদ উঠার আগেই মনেতে ঈদের বাজনা বেজে উঠত। কবে নতুন জামা কাপড় কিনব, আজ ই কিনে দিতে হবে, না না কাল না আজ ই কিনে দিতে হবে এসব বলে বাবা মার কান জ্বালা পালা করে দিতাম। নতুন জামা কিনে দিত। ঈদের আগে তা প্রায় বের করে দেখতাম। ঈদে পরব।
ঈদের দিন সকালে সবার আগে ঘুম ভেঙ্গে যেত। গোসল করে সেমাই, মিষ্টি খেয়ে বাবার দুটি আঙ্গুল চেপে চলতাম ঈদগাঁয়ের দিকে। বাবার দুটি আঙ্গুল চেপে ঈদ গাঁয়ে যাবার যে কিআনন্দ তা ভাষায় প্রকাশ করার মত না। রাস্তা দিয়ে যেতাম আর মানুষগুলোর দিকেচেয়ে থাকতাম আমার মত অনেক ছোট বাচ্চা তাদের বাবার সাথে ঈদ গায়ে যাচ্ছে। আহ্কত যে আনন্দ!
হয়তোবা ঐ দিন গুলো ই ছিল প্রতিটি মানুষের সবচেয়ে মধুর এক টা সময়।
যা মানুষ সেদিন গুলো আর কথনও ফিরে পাবে না।
২.
যৌবনে হয়ত সে সুযোগ আর কারো থাকে না। বাধ্য হয়ে একা বের হতে হয় মাঠে। খুব ই যন্ত্রনার দিন গুলো। রাস্তায় যেতেই চোখে ভেসে উঠে অতীতের সেই দিন গুলির কথা।
অনেক বাচ্চা তাদের বাবার সাথে ঈদ গায়ে যাচ্ছে। হঠ্যাত্ বাবাকে রেখে দৌড় দিচ্ছে। আবার বাবার কাছে ফিরে আসছে। বাচ্চা টা হাত গুড়িয়ে গুড়িয়ে অন্যদের দেখাচ্ছে। ছবি গুলো চোখে ভেসে আসলে চোখের কোণে জল এসে যায়।
৩.
আজ আমি একজন বাবা। জীবন সংগামে আজ হয়ত পূর্ণতা এসেছে। ঈদের সকালে আমার বাচ্চা আমার আঙ্গুল দুটি ধরে আমার সাথে যেতে প্রস্তুত। আজ আমি বাবা হয়ে বুঝতে পেরেছি বাবা হবার কি আনন্দ। এটা ও বুঝতে পেরেছি আমার বাচ্চার কাছে আমার হাত টি তার একটি খুঁটি।
আমার ছোট বেলার মতো আজ সে ও অনেক আনন্দে ঈদ গায়ে যাচ্ছে। তার প্রতিটি আনন্দের বিন্দু গুলো আমার হৃদয়ে দোলা দিতে থাকল। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই শংক্ষা লাগল সে ও একদিন এ জিনিস টা হারিয়ে ফেলব।
৪.
একদিন আসবে হয়ত আমি ও থাকবনা। সেই একাত্বটাকে তাকে ও বহন করতে হবে।
এই ছবি গুলো দেখে তার ও একদিন দু চোখ অশ্রুতে ভেসে যাবে। সে তার বাবার সেই স্পর্শ মায়ের সেই স্নেহ আর ফিরে পাবে না। তার দু চোখের অশ্রু মুছে দেবার ও কেউ থাকবে না। আমার বাচ্চাকে একদিন এই সংগ্রাম পাড়ি দিতে হবে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।