যখন বিকাল হতে থাকে, হতে হতে সূর্যটা ঢলে পড়ে, পড়তে থাকে
অনেক দিন পরে বিএমকলেজে গেলাম। বৃষ্টিমুখর শুনশান ক্যাম্পাস। দুপুর গড়িয়েছে। ফটাফট ছবি তুলছি। আমার ডিপার্টমেন্টের গিয়ে দেখি পন্ডিত মশাইয়ের মত টেবিলের উপর পা তুলে সিগারেট ধরাচ্ছেন নাজিম স্যার (ছদ্মনাম)।
আমি যখন বিএম কলেজ ছাড়ি তখন তার চুল দেখেছিলাম কাঁচা। এবার দেখে আমি পুরা পাংখা হয়ে গেলাম। সম্পূর্ণ পাকা চুল, খোচাখোচা দাড়ি। একসময় গাজা খেত প্রচুর। একবার এক কলকীর আসরে গিয়ে তার সাথে দেখা।
অন্ধকার ঘরের কার্পেটে দশবারোজন গাজাখোর। আমার ডানপাশে দুইজন পরে তিনি ছিলেন, কলকীর টানে যখন লাল স্ফুলিংগ ছড়ায় তাতে ভেসে উঠলো তার চেহারাখানি। এরপরে আমার তো পালাই পালাই অবস্থা। কিন্তু সংগী পাড়াত বড় ভাই টেনে ধরে, যাস কোথায়? এখান থেকে খালি হাতে গেলে কলকীসেবীদের অমংগল হয়!
ডিপার্টমেন্টে আমরা কয়েক বন্ধু মিলে অতীত কালের কিছু মনিষীর ছবি বাধাঁই করে দিয়ে এসেছিলাম। সেই ছবিগুলো দেখে নস্টালজিক হয়ে গেলাম।
চুয়ান্নজন ছিলাম। আজকে কেবল ছ'সাত জনের সাথে যোগাযোগ আছে। বাকীরা কে যে কোথায় আছে কোন খবর নাই। আমরা যারা বরিশাল শহরের ছিলাম তাদের সাথেই যোগাযোগটা বেশী হয়েছে। বাকীরা বিভিন্ন জেলা, উপজেলা থেকে এসেছিল, হলে, মেসে থাকতো।
কারো বাড়ীর ঠিকানা জানা নাই। এনায়েত, হিমু, মনোজ, রতনা, রুমি, মাধবী, সুরভী, জাকির, মিনু বেশীর ভাগই কলেজের শিক্ষক হয়েছে। তবে একজনকে খুঁজে বের করতে পেরেছি, সে হচ্ছে আমাদের গ্রেট মিলি। এখন এনজিওতে চাকুরী করে। স্বামী প্রথম আলোর বরিশালের স্টাফ রিপোর্টার।
বিএম কলেজের সাথে অনেক দিনের সন্বন্ধ। অনেক মারামারি, দুষ্টমী, ফ্লার্টিং এর দিনগুলি কেমন গিলে খেয়েছে সময়। বাকসু ভবনের সেই জৌলুস নাই, বৃদ্ধ রাজনীতিই টালমাটাল তারপরে আবার ছাত্র রাজনীতি! আমাদের ডিপার্টমেন্টের মোস্তফা স্যার এখন ভাইস প্রিন্সিপল। গেট দিয়ে বের হতেই তার সাথে দেখা। কি জঘন্য যে পড়াতেন এরিওপ্যাগেটিকা, মনে পড়তেই ফিক করে হেসে ফেললাম।
স্যার দেখে বললেন, চলো রুমে চলো, চা খাবে!
স্যারদের সামনে জীবনেও চেয়ারে বসিনি। এখন দিব্যি তার অফিসে চেয়ারে বসে চা খেয়ে চিনি বড় কড়া মনে হলো!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।