সময়... অনাদি... হতে... অনন্তের... পথে...
নানা প্রতিকুলতা ও সমস্যার মাঝেও শ্রীমঙ্গলে চলতি মৌসুমে কাঠাঁল ও আনারসের বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু বাজারে সঠিক দাম না পাওয়ায় আনারস ও কাঠাঁল চাষীদের মুখে হাসি নেই। দেশের আনারস উৎপাদনের প্রধান কেন্দ্রস্থল হিসাবে শ্রীমঙ্গলের সুপরিচিতি বিশ্বজোড়া।
কিন্তু আনারস, কাঠাল ও কাগজী লেবুর প্রক্রিয়াজাত করনের কোন ব্যবস্থা আজও হয়নি। জানা যায়, শ্রীমঙ্গল উপজেলার পাহাড়ী উচু-নীচু টিলায় ষাটের দশক থেকে আনারস চাষ শুরু হয়।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী উপজেলার প্রায় ১০হাজার হেক্টর পাহাড়ী টিলায় বিভিন্ন প্রজাতির আনারস চাষাবাদ করা হচ্ছে। পাহাড়ী জমি সরকারের কাছ থেকে লীজ নিয়ে বাগান করেছেন শতাধিক ব্যক্তি। কেউ আনারসের ফলন ধরতে শুরু করলেই পাইকারের কাছে ফল বিক্রি করে দেয় যাতায়াত সমস্যার কারনে। কেউ কেউ নিজেই বাগানের ফল আহরন করে শ্রীমঙ্গলের বাজারে এনে পাইকারী দরে বিক্রি করেন। আনারসের পাশাপাশি চলতি বছরে কাঠাঁলের ফলনও ভাল হয়েছে বলে কাঠাঁল চাষীরা জানান।
কিন্তু কাঠাঁলের বাজার খুবই মান্দা। মান্দাবাজারে দুর্গম পাহাড় থেকে কাঠাঁল শ্রীমঙ্গল পর্যন্ত পৌছাতে যাতায়াত খরচ হয় অনেক বেশী। তবে বাজার ভাল হলে সব খরচ বাদ দিলেও লাভবান হওয়ার প্রত্যাশা করছেন কাঠাঁল চাষীরা। একাধিক আনারস চাষীদের অভিযোগ সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগ তাদের যথাযথ পরামর্শ দিচ্ছে না। লাগসই প্রযুক্তি,আধুনিক চাষাবাদ পদ্মতির ব্যাপারে কৃষি বিভাগ সহযোগীতা করলে আনারসের ফলন দ্বিগুন হতো।
মধুমাসে আনারস কাঠাঁলের মৌ মৌ গন্ধ এখন শ্রীমঙ্গলের সর্বত্র ছড়িয়ে আছে। আনারস ও কাঠাঁল কেনার জন্য প্রতিদিন শ্রীমঙ্গলে ভীড় করছেন দেশের বিভিন্ন এলাকার শত শত ব্যবসায়ীর। ভোর বেলা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত আনারস কাঠাঁলের বাজার থাকে জমজমাট। অসংখ্য মানুষের ভীড়ে তখন সাধারন ক্রেতাদের চলা ফেরা দায় হয়ে পড়ে পুরানবাজার, নতুনবাজার এলাকায়। আনারস ও কাঠাঁল কিনে ট্রাক বোঝাই করে বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যায় পাইকারী ব্যবসায়ীরা।
আনারসের মৌসুমের শুরু হয়েছে মাত্র।
চলবে আরও ৩/৪ মাস। বর্তমানে শ্রীমঙ্গলে জলডুবি, হিরামতি, চায়না আনারস প্রচুর পরিমানে পাওয়া যাচ্ছে। যা স্বাদে ও গন্ধে মন মাতানো বলাই বাহুল্য। ভাল মান ও সাইজের ১ হাজার আনারসের বর্তমান বাজার মুল্য ১৫ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা।
তবে স্বল্প দামেও আনরস বিক্রি হচ্ছে। মাত্র ৫০০ টাকায় ১ হাজার কেইডস আনারসও পাওয়া যায়। সাইজ যদিও ছোট হয় সুস্বাদুর তুলনায় উৎকৃষ্ট নিঃসন্দেহে।
বিভিন্ন আনারস বাগান ঘুরে দেখা যায় এ বছরে পর্যাপ্ত ফলন হয়েছে। তবে বাগান গুলোর যথাযথ পরিচর্যা না করায় অনেক বাগান জঙ্গলে পরিপুর্ন হয়ে গেছে।
বাগানে কর্মরত শ্রমিকদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, আনারস বাগানে সঠিক পরিচর্যা, সার ও কীট নাশক প্রয়োগ করা হলে ফলন যেমন বাড়বে তেমনি আনারসের সাইজও বড় হবে। এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপরে সহযোগীতা, সরকারী পৃষ্টপোষকতা, আধুনিক চাষাবাদ পদ্মতির প্রশিন সর্বোপরি শ্রীমঙ্গলে জুস ও আনারস, কাঠাঁল প্রক্রিয়াজাতকরনের ব্যবস্থা গ্রহন প্রয়োজন। শ্রীমঙ্গলের আনারস ও কাঠাঁলের চাহিদা আভ্যন্তরীন বাজারে যেমন রয়েছে তেমনি বিদেশেও এর ব্যাপক চাহিদা আছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান। এসব ব্যাপারে সরকারের সহযোগীতা না থাকায় আনারস ও কাঠাঁল চাষীরা উৎসাহ পাচ্ছেন না। শ্রীমঙ্গলের সুস্বাদু ফল আনারস প্রক্রিয়াজাতকরনের ব্যবস্থা ও জুস কারখানা স্থাপন করা হলে মৌসুমী ফল বিনষ্ট না হয়ে সরকারের জন্য নিয়ে আসতো বিপুল পরিমান রাজস্ব।
এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন অতিব জরুরী বলে শ্রীমঙ্গলবাসী মনে করেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।