আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঘুইরা আইলাম মাধবপুর লেক থাইকা

সময়... অনাদি... হতে... অনন্তের... পথে...

মানুষের জীবনে বিনোদন ছাড়া কিছুতেই স্বচ্ছন্দ বোধ করতে পারেনা। সারাদিন কাজের শেষে অথবা একটা সময় নিয়ে একটু ঘুরাফেরা কিংবা ভ্রমন করলে শরীর ও মন দুটোই ভাল লাগে। তাই হয়তো ভাবতে পারেন যাবেন কোথায়? ভাবনার কিছুই নেই। চোট্ট বাংলাদেশে রয়েছে অনেক বিনোদনের স্থান। আনন্দ ভ্রমন কিংবা পিকনিক করতে বন্ধুরা মিলে চলে আসুন মাধবপুর লেকে।

দিনের প্রথম দিকে অথবা আসতে পারেন পড়ন্ত বিকেলে। গাড়ি থেকে নামতেই সবুজ পাতার গন্ধ মনকে চাঙ্গা করে তুলব। চারদিকে সবুজ পাহাড়। পাশাপাশি উঁচু উঁচু টিলা। সমতল চা বাগানে গাছের সারি।

হয়তো এরই মাঝে একঝাঁক পাখি অথিতিদের আমন্ত্রন জানাবে তার সুরের মুর্চ্ছনা দিয়ে। পাহাড়ী পাখীর গান আর নৃত্য ছাড়াও দেখতে পাবেন নানান প্রজাতির বন্যপ্রাণী। হয়তো যাদের দেখতে চিড়িয়া ঘুড়েও সম্ভব হয়নি। তখন মনে হবে সত্যি একটি নতুন আমেজের স্বাদ দারুন। মাধবপুর লেক যেন প্রকৃতির নিজ হাতে অঙ্কিত মায়াবী নৈসর্গিক দৃশ্য।

সুনীল আকাশ আর গাঢ় সবুজ পাহাড়, শিল্পীর তুলিতে আঁকা ছবির মত চা বাগানের এই মনোরম দৃশ্য আকর্ষন করে নিয়ে যাবে ভিন্ন জগতে। বন্যপ্রানীদের মধ্যে বানর ও হনুমানের লাফালাফিতে চিত্ত বিমোহিত হয়ে শিশু কিশোরের মতই আনন্দ পাওয়া যাবে। চারদিকে সুউচ্চ পাহাড়ের মাঝখানে অবস্থিত লেকটি সত্যি অপুব। আস্তে আস্তে সামনের দিকে যতই এগুতে থাকবেন তত ভালোই লাগবে। একাকি ভাবনার কিছু নেই।

প্রতিদিনই পর্যটকরা আসছেন মাধবপুর লেকে। শত শত বিনোদন প্রিয় পর্যটকদের পদভারে পুরো বছরই মুখরিত থাকে লেক। আপনার পছন্দের একটি জায়গায় গিয়ে বসলে মনে হবে এত সুন্দর একটা জায়গা অথচ এখানের কোন উল্লেখ যোগ্য উন্নয়ন নেই। যেখানে প্রতিদিন এখানে শ’শ লোক পরিদর্শন করছে। কিন্তু সরকার বা কোন বেসরকারী প্রতিষ্টান এ পর্যটনের জায়গাটির দিকে দৃষ্টি দিচ্ছেনা।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যেøর লীলা ভুমি খ্যাত মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর লেকটি একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে গড়ে উঠতে পারে। সরকারী পৃষ্টপোষকা পেলে লেকটিতে যেমন দর্শনার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে তেমনি সরকারও পাবে বিপুল পরিমান পর্যটন আয়। সারাদিন শহরে গাড়ির বিকট শব্ধ কালো ধোয়া আর মানুষের চিৎকারে ভালো লাগে না। এরকম পরিবেশে এসে একটু বিশ্রাম নিতে কার না মনে চায়। সৌন্দর্যেø ভরপুর নয়নাভিরাম দৃশ্যের অধিকারী মৌলভীবাজারের এই ‘মাধবপুর লেক’।

এখানে পর্যটকদের আকর্ষনের কথা বললেও আজ পর্যন্ত গড়ে উঠেনি পর্যটন বিকাশের কোন সুবিধা। তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, মাধবপুর লেককে পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলার জন্য ২০০৫ সালের ১০ অক্টোবর পর্যটন প্রকল্প হিসাবে হাতে নেয়া হয়েছিল। এদিনই কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লেকের পাশে পর্যটন বিকাশ কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপনের বছর পেরিয়ে গেলেও মাধবপুর লেককে দৃষ্টিনন্দন করে তোলার জন্য এখনও কোন কাজ শুরু হয়নি। মূলত ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপনের মধ্যেই লেকটির কর্মতৎপরতা থেমে আছে।

মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নে পাত্রখলা চা বাগানে লেকটির অবস্থান। এটি মৌলভীবাজার থেকে ৪০ কিঃমিঃ দক্ষিনে ও শ্রীমঙ্গল থেকে ১০ কিঃমিঃ পুর্বে অবস্থিত। খানাখন্দে ভরা চা বাগানের রাস্তা দিয়ে এ লেকে যেতে হয়। ন্যাশনাল চা কোম্পানীর মালিকানাধীন পাত্রখলা চা বাগানের ভিতরে অবস্থিত বানিজ্যিক ভাবে এ লেকটিকে গড়ে তোলা হলে একদিকে পর্যটকরা যেমন তৃপ্তি পাবেন অন্যদিকে সরকারও পাবে বিপুল পরিমান রাজস্ব। মাধবপুর লেকের ঝলমল পানি, ছায়াসুনিবিড় পরিবেশ, শাপলা শালুকের উপস্থিতি মনোমগ্ধকর করে তুলে।

কক্স বাজার সমুদ্র সৈকত, আর সেন্ট মার্টিন এর মত এটিও হতে পারে একটি আকর্ষনীয় স্থান। যেখানে প্রতিদিন দেশ-বিদেশ থেকে পর্যটনের জন্য আসবে হাজারো মানুষ। শ্রীমঙ্গলে প্রতিমাসে অন্তত শ’ বিদেশীদের আগমন ঘটে। তারা প্রতিবারই এক বার মাধবপুর লেকে আসেন। সেখানে চা বাগান আর সুবজের হাতছানি দেখার জন্য ছুটে আসে অগণিত দর্শনার্থী।

মাধবকুন্ড জল প্রপাতের মত মাধবপুর লেকটিকে গড়ে তোলা হলে এটি একটি অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে স্থান পাবে। এবং পর্যটকদের কাছে চিত্তবিনোদনের একটি সমাদৃত স্থান হবে বলে অভিজ্ঞমহল মনে করেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.