আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একদিকে সংকট অন্যদিকে হাজারো সমস্যায় চা শিল্পাঞ্চ (চা শিল্পাঞ্চল-৯)

সময়... অনাদি... হতে... অনন্তের... পথে...

বিদ্যুৎ সমস্যা,সেচ সুবিধা এবং অধিকাংশ চা ফ্যাক্টরিতে গ্যাস সংযোগ না থাকায় একদিকে চায়ের উতপাদন কমছে, অন্যদিকে বাড়ছে উতপাদন খরচ। উতপাদিত চায়ের মানও খারাপ হচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দেশের বাগানগুলোর প্রায় সবগুলোতেই কমবেশি সেচ সমস্যা রয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ৬০ টি বাগানের সমস্যা সবচেয়ে বেশি। গত বছরের দীর্ঘ খরায় হবিগঞ্জ জেলার লস্ড়্গরপুর টি ভ্যালির ১৯টি এবং চট্টগ্রাম ভ্যালির ২৪টি চা বাগান সেচ সুবিধার অভাবে দারুন তিগ্রস্ত হয়।

খড়া মৌসুমে চা বাগানের নার্সারি ও নতুন প্লান্টেশন এলাকায় পানি সেচ দিতে হয়। গত এক দশকে দেশের চা বাগানগুলোর ৭টি ভ্যালিতে চা বোর্ডের তত্ত্বাবধানে ৪০টি জলাধার নির্মাণ করা হলেও এগুলো প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। একটি জলাধার থেকে একটি চা বাগানের সামান্য অংশই সেচ দেওয়া হয়। তাছাড়া বাগানগুলোর অভ্যন্তরের ছোট ছড়াগুলোও খড়া মৌসুমে শুকিয়ে যাওয়ায় প্রয়োজনের সময় সেচ ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়ে। ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ে জেলার চা শিল্পে প্রতি বছর ব্যাপক তি হচ্ছে।

চা বাগানগুলো মূলত পল্লী বিদ্যুতের মাধ্যমে বিদুৎ পেয়ে থাকে। জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলায় বিভিন্ন চা বাগানের ৬০টি কারখানা রয়েছে। দেশের ১৬০টি চা বাগানের মধ্যে মাত্র ২৯টি বাগানের নিজস্ব গ্যাসচালিত বিকল্প বিদ্যুৎ উতপাদন মতা রয়েছে। বাকি ১৩১টি বাগানই বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনের ওপর নির্ভরশীল। দেশের মোট উৎপাদিত চায়ের ৮৮ শতাংশ চা উতপাদনকারী মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জের ১১৫টি বাগান বিদ্যুৎ সমস্যায় জর্জরিত।

এসব বাগানের মোট চাদিদা দৈনিক প্রায় ১৫ মেগাওয়াট। কিন্তু জাতিয় গ্রীড থেবে সরবরাহ করা হয় খুব অল্প পরিমান বিদ্যুৎ। ফিনলে ও ডানকানের বাগান ছাড়া অধিকাংশ বাগানগুলোতেই নিজস্ব বিদ্যুতের ব্যবস্থা নেই। ফলে উৎপাদন প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটে এবং চায়ের রঙ, গুনগত মান নষ্ট হয়। বাজারে চায়ের দাম কমে যায়।

চা বাগান এবং চা গভেষনা ইন্সটিটিউডের বিভিন্ন সূত্র জানায়, চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য দেশের একমাত্র টি রিসার্চ ইন্সটিটিউড (বিটিআরআই) তেমন কোন অবদান রাখতে পারছেন। চা বাগান ব্যবস্থাপক ও মালিকদের অভিযোগ, এ প্রতিষ্ঠানটির বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা চায়ের নতুন নতুন কোন সৃষ্টিতেই ব্যাস্ত। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে চা গাছগুলোতে কি ধরনের পরিচর্যা করলে ফলন আরো বাড়বে সে ব্যাপারে কোন গভেষনা করেন না। এ অভিযোগ অীðকার করে বিটিআরআইর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, আসলে এ প্রতিষ্ঠানটির কর্মত্রে যতটুক ুবিস্তৃত , সে পরিমাণ সুযোগ সুবিধা নেই। আবার বাগানে ঘুরতে গেলে যে পরিমাণ যানবাহন দরকার তাও নেই।

এদিকে বিভিন্ন চা বাগান থেকে অবাধে শেড টৃ (ছায়াবৃ) পাচার হচ্ছে। বাগানের কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারী, চৌকিদার, পাহাড়াদার ও স্থানীয় কতিপয় জনপ্রতিনিধির সহযোগিতায় এসব কাজ হচ্ছে বলে অভিযোগ আছে। গাছ কাটার কারণে প্রখর রোদে চা গাছে পাতা পুড়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বিরান ভূমিতে পরিণত হচ্ছে বাগানের বিশাল এলাকা। ফলে চায়ের উৎপাদন ও গুনগত মান কমে যাচ্ছে।

খোজ নিয়ে জানা গেছে, ব্যক্তি মালিকানাধীন চা বাগানগুলোতে গাছ কাটা হচ্ছে বেশ। এ কাজটি করেছেন অনেক মালিকই। একটি চা বাগানের সাবেক এক হেড কার্ক মালিকদের কাছ কেটে নেয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে বলেন, নতুন অনেক মালিক চান গাছ বিক্রির টাকা দিয়ে বাগানে প্লান্টেশন ও অন্যান্য ব্যয় মেটাতে। ব্যাংক থেকে যে ঋন তারা নেন, তা ব্যবসায় খাটান। চলবে....


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.