একটু ভাবতে হবে.......... আমি পুরোদুম্বর কোন সিনেমা বিশারদ না । তবে হা, আমি প্রচুর সিনেমা দেখি এবং ভিবিন্ন দেশের ভিবিন্ন কালচারের সিনেমার ল্যাঙ্গুয়েজ বুঝার চেষ্টা করি । কিছু দিন ধরে কিছু পড়ালেখা ও করতেছি এই বিষয়ে । কিছুক্ষন আগে রেদওয়ান রনির চোরাবালি মুভিটা দেখে আসলাম । বাংলা নাটকের সূ্ত্র দরে আমরা কম বেশি সবাই রেদওয়ান রনিকে চিনি।
উনি আমাদের পুরোপুরি বিনোদন নির্ভর বেশ কিছু রসাত্নক হাসি ঠাট্টাময় নাটক উপহার দিয়েছেন। বাংলা নাটকের গতানুগতিক যা চরিত্র তাতে এই ধরনের সস্তা কাজ ক্ষনিকের বিনোদন উপকরন মাত্র । তাই নাটক শেষ হওয়ার সাথে সাথে কিছু টকঝাল অনুভূতি আমাদের মধ্যে দু একদিন কাজ করে, পরবর্তীতে আমরা চাইলে ও এই ধরনের বিনোদন থেকে সৃতির গ্রন্থকার থেকে কিছু বের করতে পারি না ।
এবার মূল কথায় আসি । চোরাবালি রেদওয়ান রনির প্রথম কাজ , যেহেতু আমি পূর্বে উনার কাজ দেখেছি সেহেতু সত্য বলতে কি ততটা বেশি আশা নিয়ে আমি উনার মুভি দেখতে যায় নি।
তবে মুভিটা দেখার পর আমি বেশ হতাশ কারন নৃন্যতম যে আশাটা নিয়ে মুভিটা দেখতে গেছি তার কিছুটাই আমি পায় নি। এই ধরনের গল্পের মুভি এর আগে বাংলা চলচ্চিত্রের ভাণ্ডারে না হলেও হাজার খানেক জমা আছে । পরিচালক তার সাধ্যমত মুভিতে বাণিজ্যিক সব উপকরনই রাখার চেষ্টা করেছেন । আগামাথা কোন কিছু ছাড়াই হুট করে শরীর বল্লীয় দম ধামাকা আইটেম সং এরি অংশ । যদিও এটা দোষের কিছু না তবে যেহেতু সিনেমা একটি শিল্প, শিল্পগুন বজায় রেখেই বানিজ্য করা উচিত।
বিনোদন কিভাবে মুভিতে পরিচালক দিবেন সেটা একান্তই পরিচালকের রুচীর ব্যাপার। আর দর্শকরা কিভাবে নিবে, সেটা একান্তই তাদের ব্যাপার। কিন্তু এই যে পরিচালক থেকে দর্শক পর্যন্ত পৌছানোর মাধ্যম, এটাকে কাজে লাগাতে পরিচালক ব্যর্থ বলা যায় ।
পুরো মুভিতে পরিচালকের নিজস্ব কোন নান্দনিকতা চোখে পড়ে নি । অযথা ফ্ল্যাশ ব্যাকে গিয়ে মুভির গল্পের বেশ কিছু অসংগতি চোখে পড়ার মত ।
পুরো মুভিতে ইন্দ্রনীলের চরিত্রটি আমার কাছে প্রাণবন্ত মনে হয় নি, তার উপর ইন্দ্রনিলের ডাবিং ভয়েচ দেয়া হয়েছে অথচ মুভির প্রচরনার সময় বলা হয়েছিল ইন্দ্রনীলের রিয়েল ভয়েচেই থাকবে । তবে পুরো মুভিতে অভিনেতা শহিদুজ্জামান সেলিম অসাধারন অভিনয় করেছেন । এর জন্য উনার প্রাপ্য কৃ্তিত্ত্ব উনাকে দিতেই হবে। আমার প্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান তার স্বভাবজাত সাহসী অভিনয় আর গ্লামার্স দিয়ে দর্শকদের মাতিয়ে রেখেছেন । তবে শেষপর্যন্ত চোরাবালি কথটা শিল্পসমত ভিন্নধারার নান্দনিক কাজ হয়েছে, নাকি শুধু ক্ষনিকের বিনোদন নির্ভর একটি মনরঞ্জক চলচ্চিত্র হিসেবে কালের গর্ভে হারিয়ে যাবে সেটা সময়েই বলে দিবে ।
পরিশেষে ছোট মুখে একটি বড় কথা না বলে পারছি না তা হল শুধুমাত্র ভাল ক্যামেরার ব্যাবহার ,বাণিজ্যিক মাশাল্লা ,ভাল আর্টিস্ট, গ্লামার্সের ছড়াছড়ি আর বড় বাজেট দিয়ে একটি চলচ্চিত্রের সফলতা নির্ভর করে না। একটি সফল চলচ্চিত্রের জন্য যেটা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তা হল পরিচালকের নিজস্ব স্টাইল, শিল্পগুণ ও ল্যাঙ্গুয়েজকে দর্শকদের কাছাকাছি নিয়ে যেতে পারার সক্ষমতা । ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।