একদিন তোর কথা শুনবে নদি...
আধ-জাগা ঘুমে তলিয়ে আছে রাখাল। জানলা দিয়ে বৃষ্ট্রি উষ্মা ভেঙ্গে ভেঙ্গে ঘরময় ছড়িয়ে যাচ্ছে। ক্রিয়েটিভের মৃদু শব্দের From East to West মূর্ছনায় পুরো ঘর হিমায়িত। দু'হাতের ভাঁজে পাঠ্য বই। তার উপর মাথা।
বাতাসে Assignment এর পাতাগুলো ছড়িয়ে গেছে।
কাছাকাছি স্বশব্দে বাজ পড়েলো। মহিলা কণ্ঠ কাকে বকে জানলা বন্ধ করতে বলছে। নিচের রাস্তা থেকে ভেসে আসছে টোকাইদের আনন্দ উল্লাস। পাশের বাড়ির ছাদে কারা দলবেঁধে কানামাছি খেলছে।
ওদের খিলখিল হাসি ঘুমে তলিয়ে যাবার মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়। ভেতর থেকে কৌতহলী কেউ ফিসফিসিয়ে বলে ওঠে- "বেকুব; চোখ মেলে চেয়ে দেখ! পৃথিবীটা আজও রঙিন...!" কিন্তু মনের একদম ভেতর থেকে সায় পাওয়া যায় না। রাখালী মন প্রতিবাদ করে বলে, 'রঙিন? সেতো কেবল মধ্যরাতের জন্য'।
গাছের পাতা ছুঁয়ে গড়িয়ে যাওয়া জলের শব্দ রাখালকে লোভী করে তুলে। টিপটিপ করে ফেটে যাওয়া বুদবুদ ত্যাগী হতে বারন করে।
ঘুম, তবু ভাঙ্গে না। একদম শেষ সময়ে ঘ্রানটা নাকে আসে। সে লম্বা একটা শ্বাস তুলে মাথা উঁচু করে। চোখ খুলে নতুন রঙের পৃথিবীটাকে দেখে। প্রলোভন? জানে।
তারপরও, দরজা খুলে নিজেকে ভাসিয়ে দেয় সে। শীতল হওয়া দরকার তার; হিম শীতল। বৃষ্টির ঝাপসা রুপোলী স্যাঁতসঁ্যাতে আয়োজনে নিজেকে বিলিয়ে দেয়ার প্রলোভন সে উপেক্ষা করতে পারেনা। সে কিছুক্ষন বসে থাকে; বসে বসে একমনে বুদবুদ দেখে। ক্রিয়েটিভ ফেটে ভেসে আসা "পথ চেয়ে যে, কেটে গেল..." তাকে রঙিন পৃথিবী বরন করার সাহস জোগায়।
সে হাত-পা ছেড়ে চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ে। আকাশ থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে বৃষ্টি নেমে আসে। চোখ, মুখ, শরীর গলিয়ে বৃষ্টিকণা ভেতরে প্রবেশ করতে থাকে। গভীর থেকে গভীরে। অবিরাম।
আবেগে চোখ বন্ধ হয়ে আসে তার। বৃষ্ট্রি ঘ্রানের মাত্রারিক্ত সুভাসে সে ঝাপসা-রুপোলী-সঁ্যাতস্যাঁতে পৃথিবীতে তলিয়ে যেতে থাকে...!
অ-নে-ক দূর থেকে মৃদু কাঁপাকাঁপা কণ্ঠ ভেসে আসে- 'র-ঙি-ন পৃথিবী? সেতো কেবল মধ্যরাতের জন্য। যা দেখছিস তা চোরাবালি; তলিয়ে যাবি। তুই ফিরে আয়, ফিরে আয়, ফিরে...'
*** রাখাল ফিরে এসেছে। কারন সে শকুন নয়।
সে সাধারণ স্বপ্ন দেখা এক ঘাস ফড়িং।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।