যারা উত্তম কে উচ্চকন্ঠে উত্তম বলতে পারে না তারা প্রয়োজনীয় মুহূর্তে শুকরকেও শুকর বলতে পারে না। এবং প্রায়শই আর একটি শুকরে রুপান্তরিত হয়।
ব্লগে প্রবন্ধ লিখে কেউ হাতিঘোড়াতেলাপোকা মেরে ফেলতে পারে এমন ভ্রান- স্বপ্নে ভোগা এখনো অনেক দূরের বিষয়। তবুও নিউরণে অনুরণনের ধরণের ভিন্নতায় আমরা যারযার মত করে অনুভব করি ভিন্ন ভিন্ন ধরণের স্বাদ। তবে বিষয়টাকে কেবল স্বাদের মধ্যে আটকে রাখলেও অনেকটুকুই বলা হয় না।
কে কোন খাবার গ্রহণ করবে অথবা কোন কোন খাবার কার ভালো লাগে এ জাতীয় গল্পগুলোর চেয়ে জোরালো হয়ে ওঠে কোন কোন বিষয়ের সাথে আমরা সম্পৃক্ত বোধ করি এবং কোন কোন বিষয়গুলোকে নিজেদের বলে আমাদের মনে হয় এবং আবশ্যিকভাবে কোনগুলোকে মনে হয়না, কোন মতামতের বিপরীত বোধ করি অথবা প্রতিবাদ করার তাগিদ অনুভব করি। নানা কারণেই এই বিষয়টি এমনি জটিল যে কখনো কখনো শুধুমাত্র পক্ষ বা অবস্থান পরিষ্কার করা ছাড়া অন্য কোন উপায় থাকেনা।
খেয়াল করার মত বিষয় হল স্রোতের বিপরীতে অথবা অপ্রথাগত ব্লগার থেকে শুরু করে জনপ্রিয় ‘আমি ভালো তুমি কেমন’ জাতীয় ব্লগিং সবারই কোন না কোন পাঠক গোষ্ঠী রয়েছে। আর মজার ব্যাপার হল এই ব্লগিং গোষ্টীও সবসময় নির্ধারিত, অনড় কিছু নয়। এটিও পরিবর্তিত হয়।
সাম্প্রতিক সময়ের ব্লগার ভিজিটের বিষয়টিকে লক্ষ করলেই অনেক কিছু স্পষ্ট হয়ে যায়। হয়ত যেসব ব্লগারের ভিজিট করা অপ্রত্যাশিত তাদের নামই বাঁদিকের সারণীতে স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
ব্লগকে নিয়ে মাতামাতি করা যায় নানাভাবেই; ধর্ম, রাজনৈতিক, প্রাযুক্তিক, দার্শনিক, সাহিত্যিক, মতাদর্শিক, ঐতিহাসিক, ব্যক্তিগত যোগাযোগ, যৌনতা, নারী, আইকন, আইডল, পিতৃতন্ত্র এমন নানা অভিনব বিষয়। আমরা অনেকেই এই বিপুল বৈচিত্র্যময়তা নিয়ে যেমন বুঁদ থাকতে পারি তেমনি সরাসরি নিজের অবস'ান নিয়ে দৃঢ় হয়ে যেতে পারি। লক্ষ্যনীয় বিষয় হল এখানকার কোন ব্লগারই কেবল বৈচিত্র্যময়তা অথবা কেবল পৃথকীকৃত অবস'ান এমন আলাদা করে নিজের অবস'ান নিশ্চিত করতে পারেননি।
আর সেটা সম্ভবও নয়। বিষয়, অবস'ান, জানাশোনা, আগ্রহ এমন নানা কারণে আমরা নিজের সম্পৃক্ততা অনুভব করি যা কখনো প্রকাশ করি কখনো করিনা।
যে তর্কটি নিয়ে আজকের আলাপচারিতা তা আসলে বহুবছরের পুরোনো, আসলে মানবইতিহাসের সমান বয়সী। আদৌ কি কোন ব্যাক্তির পক্ষে সম্পূর্ণ নৈর্ব্যাক্তিক, নিরপেক্ষ অথবা সম্পূর্ণ পক্ষপাতপূর্ণ থাকা সম্ভব হয়? এ নিয়ে আমার ঘোর সন্দেহ আছে। আবার একই সাথে সামষ্টিক পরিচয় এবং নিজের রাজনৈতিক অবস'ানের জন্য একটি জ্ঞানী জ্ঞানী আবাল দূরত্ব নিয়ে মধ্যস-াকারীর ভূমিকা পালন করা কি সম্ভব হয়? সবচেয়ে ভালোর সাথেও সম্পূর্ণ একাত্মতা ঘোষণা করলেও অনেক কিছু বাদ পড়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে।
যেমন মূল ধারার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে পাকিস-ানে আটকে পড়া নারী বা বাংলাদেশে আটকে পড়া পাকিস-ানী নারীর গল্প যেভাবে উপস'াপিত তা খুবই অপ্রতুল। আর জামাত শিবির ইতিহাস এবং বর্তমান তো ভয়ানকভাবে নিপীড়ক এবং ষড়যন্ত্রকারী। পক্ষ নিয়ে আমার অবস'ান সবসময়ই পরিষ্কার, আমি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে। কিন' এই প্রশ্নসহ যে সব পক্ষপাতিত্বই অন্ধত্ব তৈরী করতে পারে এবং কোন মানুষই পক্ষপাতিত্বের উর্দ্ধে নয়। আবার আমরা একটা নিরপেক্ষ অবস'ানে পৌছানোরও চেষ্টা করি।
এটিরও প্রয়োজন রয়েছে। কিন' এই নিরপেক্ষ অবস'ানই খুব সমস্যাজনক হয়ে উঠতে পারে। যেমন মূলত সামরিক সরকারের তত্ত্ববধায়ক নিরপেক্ষ খোলশটি উন্মোচিত হতে শুরু করার পর এখন অনেকেই উৎকন্ঠিত; পুরোনো পতিতদের প্রতি তাদের মায়া দেখি বাড়ছে। আপা খালাম্মা নিয়ে ছানাছানি হচ্ছে। যদিও জামাত শিবির অর্থায়নের বিষয়টি নিয়ে এই সরকার এখনো আইনী নিরপেক্ষতার ধুঁয়া তুলছেন।
রাজনৈতিক ইসলামের এদেশীয় ধরণটিকে যদি আমরা ‘মৌলবাদ’ থেকে একেবারে আলাদা করে দেখি তাহলে সমস্যা আরো গভীরতর হবে বলেই আমার মনে হয়। সামপ্রতিক ব্লগ বর্জনের সিদ্ধানে- অনেকেই সম্মতি জানিয়েছেন। আমি নিজেও এই বিষয়টির প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন করি, তবে ব্লগে পোষ্ট করা থেকে বিরত থাকাকে খুব কার্যকর পন্থা বলে মনে করিনা। হয়ত আমার পন্থা ভুল, তবে একটা বিষয় মনে রাখা দরকার যে ব্লগীয় মোহগ্রস্ততায় আমরা যদি খুব বেশি আচ্ছন্ন হই তাহলে নতুন পন্থাকে জায়গা দেবার রাস্তা আমরা নিজেরাই হয়ত বন্ধ করে দেবার সম্ভাবনা রাখি। সামহয়ারইন তো পৃথিবীর একমাত্র ব্লগ নয় ব্লগস্পট, ওয়ার্ডপ্রেস আরো অসংখ্য সাইট আছে।
এছাড়া এমনকি আমাদের অনেক ব্লগার চাইলেই একটা নতুন ব্লগ বানিয়ে দিতে পারবে বলেই আমার বিশ্বাস। কথাগুলো এজন্য বলা কারণ শঙ্কা হয়; যে কোন মোহগ্রস্ততাই বিকার তৈরীর এক নতুন পথে আমাদের চালিত করতে পারে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।