আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অনুসন্ধান করো.....পাবে!!

ফাজলামৗ ও বিটলামি, খোঁচা এবং গুতা,

গতকাল ব্লগে আর আজ প্রথম আলোর নিউজ। টেরেন্স স্যার নেই! আমার দেখা নটরডেমের সবচেয়ে অসাধারন রকমের খুব ভালো একটা খারাপ লোক! স্যারকে প্রথম দেখি কলেজের নবীনবরনে। ভারীক্কি গলার রাশভারী। সবাই বলেছিলো সাবধানে থাকিস। ধরলে খবর! ধরলো প্রথম ক্লাসেই।

'এই ছেলে, রোল নাম্বার 2! চুল এত্তো বড় কেনো?' ফাজলামী করে বল্লাম 'স্যার পয়সা নাই। ' (ক্লোজআপহাসি) 20 টাকা ধরায় বল্লেন 'যাও কাটিয়ে এসো। ' ঐ টাকাটা খেয়ে ফেল্লেম। তারপরের দিনের দৌড়ানি....রিসেস এর পর স্যারের সাথে দেখা....'স্যার চুলটা কাটিয়েছি। ' অথবা সুবর্ণ জয়ন্তী'র কথা।

তিনদিনের জটিল, ঝলমলা সময়। সিনিয়রদের সাথে স্যার, 'how's the food boys?' একেকজনের কঁাচুমাচু চেহারা। আমার বড় বলেছিল, 'Food?! শালার গলায় আটকায় যে মরি নাই! স্যার এসে জিগায় খাবার কেমন?!' অথচ কলেজে থাকতে ভাইয়া টেরেন্স কে (আমরা সবাই ই বোধহয়) ডগ বলতাম। ক্যান্টিনে প্রায়ই তাস-আড্ডা হতো। সমস্যা নাই, কিন্তু ক্লাস ফঁাকি! রুমে ঢুকাবে, বিভিন্ন রকমের আওয়াজ আসবে।

ব্যস, ছাত্র মাথায় আলু, শার্ট ছেড়া আর খোড়াতে খোড়াতে বের হবে। এই ছিলেন টেরেন্স। শৃঙ্খলার ব্যপারে কঠোর। আট টার ক্লাস কখনো 7:59 এর পরে শুরু হতে আমি দেখি নাই। স্যারকে অপমান করেই কলেজ থেক বের করা হয়েছিলো।

সেটার জন্যই কী তবে তার এই চলে যাওয়া? আত্তসম্মানের জন্য বোধ হয় ফিরেও চান নি। সবশেষ স্যারের সাথে দেখা হয়েছিলো আমার গত মাসে। এম.বি.এ ক্লাসে যাচ্ছি বিকালে। হঠাৎ ডাক, 'রোল নাম্বার 2'! প্রচন্ড ভয়, প্রচন্ড কনফিউশন, এটা স্যার? আমাকে মনে রেখেছেন? ভয়, কেন তা জানি না। তাকে আমি অনেক ভয় পেতাম।

স্যারের সাথে কথা, কেমন আছেন, কী করছি, এসব। বলেছিলাম ' পড়ছি, মানে কিছু করছি না, মানে একটা চাকরী করতাম, মানে এম.বি.এ করছি....' হুংকার 'কোনটা করছো?' 'স্যার, এমবিএ করছি স্যার'। হাহ্‌। মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন। আমি বুঝলাম না এটা স্যার কীনা! মাথায় হাত বোলানো...টেরেন্স...মিল্লো না! জিগ্গেস করেন ক্লাস কখন? এইতো স্যার 6:00টায়।

'তা এখনো এখানে কী করছো? যাও ক্লাসে যাও। ' আমি বুঝলাম না কী হলো! 'বল্লাম না ক্লাসে যাও(খাইয়ালামু) !' দৌড় দিলাম প্রায়। বুঝেছিলাম যে ওটা স্যার ই ছিলেন। কিন্তু বিদায় টা নেওয়া আর হলো না। ।

তবে এটা বলতে পারি যে স্যারের হঠাৎ করে ডাক, 'রোল নাম্বার 2' টা আমি খুব ই মিস করবো। স্যার আপনাকেও। স্যারকে নিয়ে লিখতে গ্যালে ব্লগের পোস্টগুলো বিশালের চেয়েও বিশাল হবে। লেখাটা আজকের জন্য বেমানান। তারপরেও লিখছি, গুরুদক্ষিণা...হয়তো হবে! শিরোনামটা স্যার নবীনবরনের লেখায় সারাজীবন ই দিতেন।

একটি লেখাই সবসময় ছিলো। তাই এটাই হোক এ লেখার শিরোনাম।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।