অতি দক্ষ মিথ্যুক না হলে সত্যবাদিতা উৎকৃষ্ট পন্থা
সংজ্ঞার সংজ্ঞা হয়ে ওঠার পর্যায়টা অনাবিস্কৃত- তবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাওয়ার পর তা প্রচলিত হতে তেমন সময় লাগে না। প্রযুক্তিকে ধন্যবাদ এখনও আমাদের সংজ্ঞায়িত করার সুযোগ দিয়ে যাচ্ছে।
মুঠোফোন শব্দটা আবিস্কারের কৃতিত্ব নির্মলেন্দু গুনের কিনা এটা নিয়ে প্রশ্ন চলতে পারে তবে প্রচলনের কৃতিত্ব কিন্তু তারই। তার মুঠোফোন কাব্য এটাকে ব্যপক প্রচলিত শব্দ করে তুলেছে- তবে এমনও হতে পারে এর আগেই কেউ এমন একটা শাব্দিক রূপ দিয়েছিলো-সেটা সর্বসাধারণের জ্ঞাতসীমায় এনেছেন তিনিই।
সংজ্ঞা আসলে কি? কেনো প্রয়োজন? কার প্রয়োজন? কোনো এক অভিধানে নাকি সিগারেটের সংজ্ঞায় লেখা ছিলো এর একপাশে থাকে আগুন অন্য পাশে বোকা একজন মানুষ-এই বিশিষ্ঠতা প্রদানই সংজ্ঞা।
একটা আকার আকৃতি দিয়ে সেটাকে অন্য সব কিছুর সাথে আলাদা করে রাখা।
নিছক একটা শব্দ নয় শব্দের অধিক কিছু ধারণ করে এটা- হয়তো বহন করছে, করবে অনির্দিষ্ট কাল। পরিচয়বলেই হয়তো কাক আর চড়াইয়ের সাথে একপাতে ভাত খায় না কোকিল। চৈত্র শেষ হতে চললো-ফাল্গুনের মাতামাতি স্তব্ধ। তবে এখানেও সেই একই মারপ্যাঁচ- আমরা অতীত আর নিস্পন্ন শব্দের ব্যবহারিক অর্থ জানি।
এর সাথে স্মৃতি- বিশ্বাস- অভিজ্ঞতা জুড়ে নিজস্ব সংজ্ঞা তৈরি করে নি।
চৈত্র কিংবা ফাল্গুন কিংবা হটেনটট আর মুরং নিছক কিছু অনুরণন বাতাসে। আমরা এইসব অনুরণনকে নিজস্ব অর্থে বিবেচনা করি।
একদেশের বুলি অন্য দেশের গালি বলেই উচ্চারণ একই হলেও ব্যবহারিক অর্থ ভিন্ন বলেই ঝামেলা। এভাবেই উচ্চারণের স্থানীয় সংজ্ঞা তৈরি হয়।
উচ্চারণগুলোও স্থানিক, এর পরিব্যাপ্তি সীমিত পরিসরে।
অর্থনীতি এখানেও আছে- বিনিময় চলছে সবসময়ই। রীতি সংস্কৃতি কৃষ্টি- গতিশীল ঐতিহ্য মানুষের। শুধু শরীরের ভাষায় ঐক্য আছে- বোধ হয় সবচেয়ে বোধগম্য শরীরের ভাষা।
শব্দ যতটুকু যেতে পারে দৃষ্টি আর স্পর্শ যেতে পারে আরও অনেক বেশী।
ভাব প্রকাশে অনেক বলিষ্ঠ শরীরের ভাষা- রিচার্ডসের তাচ্ছিল্য ভরে চুইংগাম চিবাতে চিবাতে ক্রীজে আসার ভেতরে যে অভিজাত্য প্রকাশিত হয় সেটার প্রভাব আর অনুভব শব্দে প্রকাশযোগ্য হয়তো সম্পূর্ণ ভাবে না।
দৃশ্যটা তেমন অবাক করা না। শেষ বিকেলে আকাশ অন্ধকার, ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টি আসছে, সবার বাড়ী ফেরার ভীষণ তাড়া-বাস ট্যাক্সি - প্রাইভেট -রিকশা মিলেমিশে বিশাল এক ঝঞ্ঝাট। ফুটপাতে তরূনি মায়ের ওড়নার নীচে শিশু। তরুনীর হাসিমুখ।
এটুকু বললেই অনেক কিছু বলা হয়ে যায়- ফুটফুটে শিশু কাঁধে তরুনী মায়ের গর্বিত হাসির মতো জনপ্রিয় কোনো শ্লোগান নেই। এমন দৃশ্য দেখবো বলেই এত যুদ্ধ, এত পরিশ্রম।
আমাদের নিজস্ব সীমানা অনেক কিছুই ধারণ করে না। দুই যুগের তীব্র ঘৃনা আর মুছে দেওয়ার চেষ্টার পরও বুড়ো রবিন্দ্র নাথ মধ্যবিত্তের কাছাকাছি ছিলো। বাংলা ভাষায় তার অবদান যতটুকু সেটা অস্বীকার করার মতো না।
বাংলাভাষাকে সংজ্ঞায়িত করার কাজটা শক্থাতে সমাপ্ত হলেও এর শরীরে মেদ মাংস লাগানোর আসল স্থপতি তিনিই।
তেমন নতুন কোনো রীতি আবিস্কৃত হয় নি, কুলীন সংস্কৃত পুঁথির ভাষা ছিলো। লেখবার আর ধর্ম প্রচারের বাহন। সেই চর্যপদ থেকে শুরু করে অষ্টাদশ শতক পর্যন্ত লেখার ভিন্ন ধারা ছিলো লোকের ভাষায় ধরে রাখা অনুভব। ব্যকরণের চোখ রাঙ্গানি নেই কোনও।
ন, ণ,শ, স, ষএসবে কোনো পার্থক্য নেই- ণত্ব বিধাণ ষত্ব বিধান নেই- অথচ এটাই এখন সভ্য রীতি- অষ্টাদশ শতাব্দিতে মিশনারীদের আনূকুল্যে যেভাবে ব্যকরণের টিকি জোড়া হলো- উচ্চারণ রীতি নির্দিষ্ট হলো-ঝামেলা বাড়লো অনেক তবে নতুন পেশাও তৈরি হলো- বানান শোধক- শব্দশোধন কিংবা প্রুফ রিডার বলে এদের-বড় মাপের মানুষেরা ঘর না ঘড় লিখলেন- ঘটা না ঘতা লিখলেন- এই নিয়ে অনুসারিদের মারামারি- বুদ্ধদেব নিজেও খুসি ছিলেন কোনো কারন খুশী হতে পারেন নি- তার বানানরীতিতে এই স আর শ এর নির্বিকার ব্যবহার উল্লেখযোগ্য- সমস্যা কি? আমি ঘড়ি লিখলে যদি লোকজন সেটাকে সময়মাপক যন্ত্র হিসেবে চিহ্নিত করতে পারে তবে ঘরি লিখেও যদি সেই একই জায়গায় নিয়ে যেতে পারি তাহলেই হলো- সেই বুঝটা পৌছাতে পারাটাই বড় কথা।
ব্যর্থ আর ব্যার্থ নিয়ে কিংবা ব্য দিয়ে শুরু শব্দগুলো নিয়ে ঝামেলা- আকার থাকা আর না থাকার ঝামেলা। অর্থতো পরিবর্তন হয় না- তবে শব্দশোধকের অর্থগমন অনিশ্চিত হয়ে যায়। কারণটা অর্থনৈতিক। সঠিক বানানে লিখলেও তেম কোনো সমস্যা হয় না- রীতি প্রচলিত তাই বিধিনিষেধ, কেউ বিধীনীষেধ লেখলেও আপত্তি আসবে- এই আপত্তির ভিত স্থাপিত হলো ব্যকরণ দিয়ে-
চিহ্নকে নির্দিষ্ট করে তার উচ্চারণ বিধি বেধে দেওয়া হলো- দাঁতে বাড়ি খেলে স, তালুটে বাড়ি লাগলে শ, ষ এটা কোথায় ধাক্কা খেলে হয় এখনও জানি না- র ড় নিয়ে গড়গড় করে চলতে পারে না- জব্দ যবেদা খাতায় আসে না, টান দিলেই তান আসে না- সবই ত বর্গীয় তালব্য ঝংকার আর ত বর্গীয় দাঁত ঠোকাঠুকি।
এই সংজ্ঞাটা তৈরি হয়ে যাওয়ার পর এখন এটাই সংজ্ঞায়িত- এটাই প্রমাণ্য- এভাবে না করলে কিছুতেই সঠিক হবে না।
সংজ্ঞা তৈরিতে ব্যক্তির অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ- আমি অধম রাসেল যদি কদু কে কডু লিখি আমাদের অনেক প্রুফ রিডার এসে ঝাপিয়ে বলবে বেটা বানান ঠিক মতো লিখতে পারে না আবার বড় বড় কথা কওন চোদায়-
ব্যর্থ বানান ব্যার্থ লিখার পর মাননীয় প্রুফ রিডার আমাকে এসে এসব বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছিলো-
একটা গভীর প্রশ্ন চারপাশে- আমার লেখায় শিশ্নাধিক্য নিয়ে- কেনো আমি এত শিশ্ন পরায়ন- সিস্ন পড়ায়ণ হলেও হয়- আসলে নিজের লেখার খামতি নিয়ে বিব্রত আমি- তাই অকারণে শিশ্ন লাগিয়ে রাখি -যদি কোনো উত্তেজক দৃশ্য দেখলে লেখাটা দাঁড়ায়- যেহেতু ইন্টারনেটেই লিখি- আশায় আশায় থাকি -কোনো না কোনো ভাবে এটা এক্স রেটেড সাইটের পাশ দিয়ে যাবে এবং ফলশ্রুতিতে আমার লেখাটাও দাঁড়াতে পারে-অতএব কষ্টের কিছু নাই-
এইসব ভুল বানান, ভুল রীতি- ভুল শব্দ দিয়ে আমি আমার নিজস্ব সংজ্ঞা নির্মাণ করছি- এখন ব্যস্ত- আপনি কিংবা আপনারা পরে যোগাযোগ করেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।