আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কুরআন সম্পর্কে বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানীদের উক্তি - (1ম পর্ব)



কুরআন সম্পর্কে বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানীদের উক্তি 1)Professor Keith L. Moore এম্ব্রায়োলজি এবং অ্যানাটমির বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানীদের একজন এবং 'দ্য ডেভেলপিং হিউম্যান' বইয়ের লেখক, যে বইটি কিনা বিশ্বের আটটি ভাষায় অনুদিত হয়েছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এক বিশেষ কমিটি দ্বারা এটি একজন লেখক কর্তৃক লিখিত সর্বশ্রেষ্ঠ বইয়ের স্থান দখল করে। তিনি কানাডার ইউনিভার্সিটি অব টরেন্টোর অ্যানাটমি এবং সেল বায়োলজি বিভাগের প্রফেসর ইমেরিটাস। তিনি 8 বছর এই অ্যানাটমি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি 1984 সালে কানাডার অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যানাটমিস্টস কর্তৃক প্রদত্ত জে.সি.বি. গ্রান্ড এওয়ার্ড লাভ করেন, যা কিনা কানাডায় প্রদত্ত অ্যানাটমি বিষয়ে সর্বোচ্চ এওয়ার্ড। তিনি কানাডিয়ান এন্ড আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যানাটমিস্ট এবং কাউন্সিল অব দ্য ইউনিয়ন অব বায়োলজিকাল সায়েন্সের মত বহু আন্তর্জাতিক সংস্থার পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

1981 সালে, সৌদি আরবের দামামে অনুষ্ঠিত সপ্তম মেডিকেল সম্মেলনে তিনি বলেন: "কুরআনে বর্ণিত মানুষের বৃদ্ধি সংক্রান্ত বক্তব্যগুলোকে বোধগম্য করে তোলার ব্যাপারে সাহায্য করতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। আমার কাছে এ কথা স্পষ্ট যে এগুলো মুহাম্মাদের নিকট নিশ্চিতভাবেই স্রষ্টা কতর্ৃক প্রেরিত হয়েছে, কেননা প্রায় সকল তথ্যই আবিষকৃত হয়েছে বহু শতাব্দী পরে। এটা আমার কাছে এ কথাই প্রমাণ করে যে মুহাম্মাদ নিশ্চিতভাবেই স্রষ্টা কর্তৃক প্রেরিত বাণীবাহক। " এরপর তাকে প্রশ্ন করা হয়: "এর মানে কি এই যে আপনি কুরআনকে স্রষ্টার বাণী বলে স্বীকার করেন?" তিনি উত্তরে বলেন: "এটা স্বীকার করতে আমার কোন দ্বিধা নেই। " অপর এক সম্মেলনে তিনি বলেন: "...যেহেতু মানব ভ্রূণের ক্রমাগত পরিবর্তনের কারণে এর বৃদ্ধির পর্যায়গুলোকে চিহ্নিত করা জটিল, তাই কুরআন এবং সুন্নাহতে বর্ণিত পরিভাষা ব্যবহার করে একে নতুনভাবে পর্যায়-বিভক্ত করা যেতে পারে।

প্রস্তাবিত এই নতুন পদ্ধতি অত্যন্ত সহজ, পরিপূর্ণ এবং বর্তমান ভ্রূণবিদ্যার জ্ঞানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। গত চার বছরে সংঘটিত কুরআন এবং হাদীস সংক্রান্ত প্রচুর গবেষণার ফলে মানব ভ্রূণের পর্যায়সমূহ চিহ্নিতকরণের একটি নতুন পদ্ধতি আবিষ্কৃত হয়েছে, এবং এটা অত্যন্ত বিস্ময়কর কেননা এ সবই লিপিবদ্ধ হয়েছে সপ্তম শতাব্দীতে। যদিও ভ্রূণীয়বিদ্যার প্রতিষ্ঠাতা এরিস্টোটল খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতকে মুরগীর ডিম পর্যবেণ করে বুঝতে পেরেছিলেন যে মুরগীর ভ্রূণ বিভিন্ন পর্যায়ের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করে, তিনি এসব পর্যায়ের কোন বিস্তারিত বিবরণ দেননি। ভ্রূণবিদ্যার ইতিহাস থেকে যা জানা যায় তা হল মানব ভ্রূণের পর্যায় এবং প্রকারভেদ সম্পর্কে বিংশ শতাব্দীর পূর্বে তেমন কিছুই জানা ছিল না। আর এজন্যই কুরআনে বর্ণিত মানব ভ্রূণের বর্ণনা সপ্তম শতাব্দীর বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা সম্ভব নয়।

একমাত্র যুক্তিসংগত সিদ্ধান্ত হচ্ছে: এই বর্ণনাগুলো স্রষ্টা কর্তৃক মুহাম্মাদের নিকট প্রেরিত। তাঁর প েএসব বিস্তারিত তথ্য জানা সম্ভব ছিল না, কেননা তিনি ছিলেন একজন নিরর ব্যক্তি যাঁর বিজ্ঞানে কোন প্রশিণ ছিল না। " 2)Dr. T. V. N. Persaud, প্রফেসর অব অ্যানাটমি, প্রফেসর অব পেডিয়ট্রিকস এন্ড চাইল্ড হেলথ, প্রফেসর অব অবস্টেট্রিকস, গাইনোকলজি এন্ড রিপ্রোডাক্টিভ সায়েন্সেস, ইউনিভার্সিটি অব ম্যানিটোবা, উইনিপেগ, ম্যানিটোবা, কানাডা। তিনি সেখানে 16 বছর যাবৎ অ্যানাটমি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ছিলেন। তিনি তার বিষয়ে সুপরিচিত একজন ব্যক্তি।

তিনি 22 টিরও অধিক পাঠ্যবইয়ের লেখক এবং তাঁর 181 টির অধিক বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র রয়েছে। তিনি 1991 সালে কানাডার অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যানাটমিস্টস কর্তৃক প্রদত্ত জে.সি.বি. গ্রান্ড এওয়ার্ড লাভ করেন, যা কিনা কানাডায় প্রদত্ত অ্যানাটমি বিষয়ে সর্বোচ্চ এওয়ার্ড। যখন তাঁকে কুরআনের বৈজ্ঞানিক অলৌকিকত্ব সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়, যা নিয়ে তিনি গবেষণা করছিলেন, তিনি বলেন: "আমাকে বর্ণনা করা হয় যে, মুহাম্মাদ একজন অতি সাধারণ ব্যক্তি ছিলেন। তিনি পড়তে বা লিখতে পারতেন না। প্রকৃতপ েতিনি ছিলেন নিরর।

এবং আমরা 12 শতাব্দী [প্রকৃতপ েচৌদ্দ] পূর্বের কথা বলছি। একজন অশিতি মানুষ, যিনি কিনা বিজ্ঞান সম্পর্কিত বেশ কিছু গভীর ঘোষণা ও বক্তব্য পেশ করছেন, যেগুলো আশ্চর্যজনক মাত্রায় নিভর্ুল। এবং আমি ব্যক্তিগতভাবে এগুলো কপাল জোরে মিলে যাওয়ার কোন সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি না। এেেত্র নির্ভুলতার সংখ্যা অনেক বেশী, তাই ড: মুরের মতই এ ব্যাপারে আমারও কোন দ্বিধা নেই যে ঐশী প্রেরণাই তাঁকে এ ধরনের বক্তব্য প্রদানে পরিচালিত করেছে। " 3)Dr. Joe Leigh Simpson, বিভাগীয় প্রধান, অবস্টেট্রিঙ্ এবং গাইনিকলজি বিভাগ, প্রফেসর অব অবস্টেট্রিঙ্ এন্ড গাইনিকোলজি, এবং প্রফেসর অব মলিকু্যলার এন্ড হিউম্যান জেনেটিঙ্, বেইলর কলেজ অব মেডিসিন, হিউসটন, টেঙ্াস, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

তিনি আমেরিকান ফার্টিলিটি সোসাইটির প্রেসিডেন্টও ছিলেন। তিনি বহু এওয়ার্ড লাভ করেছেন, যার মাঝে রয়েছে অ্যাসোসিয়েশন অব প্রফেসরস অব অবস্টেট্রিঙ্ এন্ড গাইনিকোলজি কর্তৃক প্রদত্ত পাবলিক রিকগনিশন এওয়ার্ড, যা তিনি 1992 সালে লাভ করেন। তিনি নবীজী মুহাম্মাদ (সা) এঁর নিম্নলিখিত দুটো হাদীস নিয়ে গবেষণা করেন: "তোমাদের প্রত্যেকের সৃষ্টির উপাদানগুলো মায়ের জরায়ুতে 42 দিন যাবৎ একত্রিত হয়..." "যখন ভ্রূণের 42 রাত্রি পার হয়, আল্লাহ একজন ফেরেশতা প্রেরণ করেন, যিনি একে আকৃতি দান করেন এবং এর শ্রবণশক্তি, দর্শনশক্তি, চর্ম, গোশত এবং হাড় তৈরী করেন..." ড: সিম্পসন এদুটো হাদীসের আলোকে মানব ভ্রূণের বৃদ্ধি পর্যবেণ করে দেখতে পান যে 42 দিন মানব ভ্রূণের বিকাশের একটি সুস্পষ্ট পর্যায়কে চিহ্নিত করে। বিশেষত তিনি এই বর্ণনার নিভর্ুলতার মাত্রা দেখে মুগ্ধ হন। পরবতর্ীতে একটি সম্মেলনে বক্তব্য রাখার সময় তিনি বলেন: "যে দুটো হাদীস বর্ণনা করা হল, সেগুলো আমাদেরকে 40 দিনের পূর্ব পর্যন্ত মানব ভ্রূণের বৃদ্ধির একটি সুনির্দিষ্ট টাইম-টেবল দেয়।

আবারও সেই একই কথা বলতে হয়, যা আমার মনে হয় আজ সকালে অন্যান্য বক্তাগণও বলতে চেয়েছেন: এসকল হাদীস তাদের রচনাকালের বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের ভিত্তিতে কখনোই রচনা করা সম্ভব নয়... আমার মতে এ থেকে একথাই প্রতীয়মান হয় যে জেনেটিকস এবং ধর্ম সাংঘর্ষিক নয়, বরং ধর্ম বিজ্ঞানকে পথ দেখাতে পারে বিজ্ঞানের গতানুগতিক ধারার সাথে ওহী সংযোজনের মাধ্যমে, এবং কুরআনে এমন বক্তব্য রয়েছে যেগুলো কয়েক শতাব্দী পরে সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে, যা কিনা কুরআনের জ্ঞানকে স্রষ্টার প থেকে আগত হওয়ার দাবীকে সমর্থন করে। " (চলবে)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।