স্মৃতিচারণ ও এলোমেলো ভাবনা। বেশিরভাগই জগাখিচুড়ি।
অবশেষে স্বর্গ থেকে মত্যর্ে পদার্পণ করলাম। বাংলাদেশে গিয়েছিলাম প্রায় আড়াই বছর পর। বিগত তিন সপ্তাহ এখন মনে হচ্ছে চোখের পলকে কেটে গেছে।
গত আড়াই বছরে মনে হয় এত তাড়াতাড়ি সময় আর যায় নি। যাই হোক দীর্ঘদিন দেশের বাইরে থেকে দেশে যাওয়ার অনুভূতিটা দারুণ সুখকর। তেমনি মাত্র 2/3 সপ্তাহ কাটিয়ে ফেরত আসাটাও খুবই দুঃখজনক এবং ক্ষেত্রবিশেষে হতাশাজনক। ফিরে এলাম গত শনিবার রাতে। ইমিগ্রেশন কর্মকতর্া যখন ছিল-ছাপ্পর মেরে বললেন "ওয়েলকাম হোম,স্যার" তখন এমন রাগ হয়েছিল তা বলার মত না।
মনে হয়েছিল ব্যাটার কল্লাটা চিবিয়ে খাই। ঘরে ঢুকে এত মেজাজ খিঁচড়ে গিয়েছিল, তা বলার মত না। রাগে সব ভেঙ্গেচুরে ফেলতে ইচ্ছা করছিল।
আসলে প্রবাস জীবনটা যে নিঃসঙ্গতায় ভরা এক অসহ্য সময় তা দেশে গেলে ভালমতো উপলব্ধি করা যায়। দেশে কেউ না কেউ সবসময় আছে।
নিজেকে কখনই একা মনে হয় না। পরিবেশটাই অন্যরকম। সুখী অ্যাটমোসফিয়ার। হ্যাঁ, দুঃখ-কষ্ট আছে, তা তো সব জায়গাতেই রয়েছে। কিন্তু তার পাশাপাশি যে মানসিক সাপোর্টটা পরিবার ও বন্ধুদের কাছ থেকে পাওয়া যায়, তার তুলনা নেই।
এখানে এরকম মানসিক সাপোর্ট কে দেবে? মনে আছে মাস দু'য়েক আগে ভাঙ্গা কাঁচের টুকরায় পা কেটে গিয়েছিল, দর দর করে রক্ত পড়ছিল। উপায় নেই, তাই এক হাতে স্যান্ডেল আর আরেক হাতে গাড়ির চাবি নিয়ে ছুটেছিলাম প্রিন্সেস আলেকজানড্রিয়া হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে। হাসপাতালে পৌঁছানোর পর দেখি গাড়ির এক্সিলেটরের প্যানেল রক্তে রজ্ঞিত। খোঁড়াতে খোঁড়াতে রক্তাক্ত পা নিয়ে ঢুকেছিলাম ইমার্জেন্সিতে সেদিন। এরকম দুর্দিনে নিজেকে এত অসহায় মনে হয়, বলার মত না।
দেশে এরকম একটা ঘটনা ঘটলে 4/5 জন দাঁড়িয়ে যেত সাহায্যের জন্য।
রাজনৈতিক অসিহরতা এখন দেশে নেই। বেশ শান্তিপূর্ণ একটা পরিবেশ এখন বিদ্যমান। রেডিও টুডে ও ফূর্তির সুবাদে মানুষজন বেশ ফূর্তিতে আছে বলেই আমার ধারণা। রাস্তাঘাটে ভিড়-ভাট্টাও অনেক কম মনে হয়েছে।
যেরকম এখানে বসে শুনি অন্তত সেরকম জীবন অতিষ্ঠ করা জ্যাম আমি দেখিনি। তবে জিনিসপত্রের দাম বেশ বেশি মনে হয়েছে। আর সন্ধ্যার পর মার্কেট বন্ধ হয়ে যাওয়াতে রাস্তার ভিড়-ভাট্টা সন্ধ্যার পর সহনীয় বলেই মনে হয়েছে। সন্ধ্যার পর মার্কেট বন্ধ রাখার পক্ষপাতী আমি নিজেও। কারণ উন্নত বেশিরভাগ দেশে অফিস আওয়ারের পর দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়।
তবে সপ্তাহে একদিন রাত নয়টা বা দশটা পর্যন্ত জনস্বার্থেদোকান-পাট খুলে রাখা উচিত ও অন্যান্য দিন অন্তত মুদির দোকানগুলো একটু বেশি রাত পর্যন্ত খোলা রাখা উচিত বলে আমি মনে করি।
এদেশে ফেরত আসার পর সবকিছুতেই বিরক্ত লাগছে। আরও কিছুদিন এরকম চলবে বলে আমার ধারণা। দেখি কবে মুক্তি পাই এই অসহ্য দোযখ থেকে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।