কখনো চাই নাই দূরে থাকি...তবু দূরগুলো বারে বারে আসে...
(অনেকদিন পর জাবির মানিকের নামটা ত্রিভন্ডের কল্যাণে ব্লগের পাতায় দেইখা আমি নষ্টালজিক হইলাম...মনে হইলো নিজের কিছু অভিজ্ঞতার কথা ব্লগের পাতায় তুইলা রাখতে পারলে ভালো হয়। হয়তো বৃদ্ধ হইলে স্মৃতিকাতরতায় আরো আনন্দ সম্ভব। )
কোএড স্কুলে পড়নের অভিজ্ঞতা ছিলো, যদিও ম্যাট্রিক পাশ দিছি একটা বয়েজ স্কুল থেইকা, আর তাই ছেলে ছাত্ররা তার পালটা মেয়ে ছাত্রগো লইয়া কি ভাবে...কিরম স্বপ্ন দেখে...কিরম কুটনামী করে তার সকল অভিজ্ঞতাই আমার আছে। কইতে দ্্বিধা লাগলেও কইয়া ফেলি এইফাকে, আমি নিজেও পোলাগো এইসব টাংকিবাজী, মাইয়াগো শরীর নিয়া মন্তব্যকরনে বহুতই পার্টিসিপেট করছি...লুকাইয়া চুরাইয়া মাইয়াগো cleavedge দেখার সাধ ক্লাস সিক্সের টাইমে ইসলামিয়াত স্যার নজরুল ইসলামের মতোন আমারো কিঞ্চিত ছিলো...
কিন্তু বড় হইছি দুইবোনের একভাই হইয়া...আর আমার মা'এর কোন আচরণে যেহেতু কোন প্রিভিলেজ পাই নাই...তাই আর যাই শিখি আর না শিখি কোনদিন এমন কিছু করনের লেইগা আগ্রহী হইতে পারি নাই যাতে মনে হয় কোন মেয়েরে অধস্তন বা ভোগ্যপণ্য মনে হয়...(হয়তো মনে ছিলো, তা অস্বীকার করনে গলার জোর অনেক বাড়াইতে পারি না যদিও)। এইসব কারণে আপাতঃ ভদ্র পোলা হিসাবে স্বীকৃতি ছিলো মহল্লাবাসী মুরুব্বীগো কাছ থেইকা।
স্কুলে পড়নের টাইমে আমরা টিফিন পিরিয়ডে টিচার্স ট্রেনিং সেন্টারের সামনের ফুটপাথে, তখন অগ্রনী স্কুল ছুটি হইতো, লগে ইডেন হোম ইকনমিক্সের ছাত্রীরাও যাইতো রিকশায়, আমরা বিড়ি ধরাইয়া রাস্তার এই পার থেইকা অন্য পারে যাওনের একটা দুর্দ্ধর্ষ(?) খেলা খেলতাম...আমাগো বাচ্চাকালের শহুইরা মধ্যবিত্ত রোমান্টিসিজমে নারী চরিত্ররা এমনেই আইতো। এই টাইমে নারীরা আসলে কি ছিলো? তারা ছিলো আমাগো খেলার সামগ্রী...যদিও একান্তই তাগো অজান্তে আমরা খেলতাম...সেই খেলা বয়স বাড়নের সাথে সাথে কমতেছিলো এইটা সত্য...কিন্তু এই কইমা যাওনের ব্যাপারটা আসলে যে অবদমন ছিলো সেইটা বুঝছি অনেক পরে।
নারী বিষয়ে আমার বর্তমান উপলব্ধি প্রথম আসে সেবাদিরে দেইখা। সাধারণ চেহারার ছোটখাটো একটা মেয়ে(?)। কিন্তু কতোটা দৃঢ়চেতা! তারে না দেখলে কেউ বিশ্বাস করতে পারবোনা।
যে কোন প্রতিরোধে সে যে কোন সঠিক বোধ সম্পন্ন মানুষের মতো দাঁড়াইয়া যাইতো। এই ব্লগে জাবির অনেকেই আছেন যাগো সাথেও সেবাদির কোন না কোন সমৃতির নজীর খুঁইজা পাওন যাইবো। সেবাদি আমার প্রথম শিক্ষক যিনি নারীরে অন্যরম ভাবে আমারে দেখতে বাধ্য করছিলো, অতোটা পারে নাই ফ্লোরেনস গ্রিফিথ জয়নার'ও!
যেই কারণে আসলে পোস্টটা রাইখা দিতে ইচ্ছা করলো ব্লগে...সেইটা কিন্তু একোক্ষণ যা বকবক করলাম তার অনেক দূরবর্তী বিষয়, আমার বিশ্ববিদ্যালয় ব্যাচমেট মানিকরে নিয়া দেখি অধিকাংশ মানুষই কিংবদন্তি তৈরী করনের প্রয়াস নিতাছে! বলা হয় মানিক ধর্ষণের সেঞ্ছুরী উৎসব পালন করছিলো ক্যাম্পাসে। অন্য আরো অনেকের মতোই ব্যাপারটা আমি শুনছিলাম (কারণ ঐটা একান্তই ছাত্রলীগে মানিক পন্থীগো ঘরোয়া একটা অনুষ্ঠান ছিলো) কিন্তু আমি যা শুনছিলাম সেইটা অন্ততঃ সত্যের কাছাকাছি যাওনের সম্ভাবণা রাখে। মানিকরে বিশ্ববিদ্যালয় তরুণীগো ধর্ষক এইরম একটা লেবেল লাগাইয়া জাবিরে ধর্ষকগো অভয়ারণ্য বানানের একটা অপচেষ্টা দেখি ম্যাক্সিমাম তার্কিকগো তথ্যে।
এতে অবশ্য বাস্তব অবস্থা পালটায় না। কিন্তু মানুষের চিন্তার প্যাটার্নে কিছু আবর্জনা জন্মায়। আমরা যারা জাবির ঐ আন্দোলনে সক্রিয় ছিলাম তারা জানি মানিক আসলে ধর্ষণের সেঞ্চুরী কেমনে করছিলো...সে সামাজিক মানিক হিসাবেই ধর্ষণে আনন্দ পাইতো। এইখানে ছাত্রলীগ কিম্বা জাবির ছাত্র পরিচয়ের কোন কৃতিত্ব নাই। মানিকের সেঞ্চুরী ইনিংসের শুরু তার কলেজ জীবন থেইকাই।
তখন সে ছাত্রদল করতো। জাবিতে আইসা সে তার অন্য রাজনীতি ছাত্র লীগ করতে শুরু করে, আবার সে ছাত্র দলেই ফিরা যায় মাঝে, আওয়ামিলীগ ক্ষমতায় আসনের পর আবার তার পালটি খাওয়া...পুণরায় ছাত্রলীগ! এই পুরা সময়টাতেই তার ধর্ষণের ইতিহাস। তার একটা স্বভাবজাত প্রবণতা আমরা দেখছি, সবসময় ক্ষমতার নৈকট্য অভিলাষ।
আসল সমস্যাটা ক্ষমতার, এইটা আমি মানি পুরাদমে। পুরুষ দিন দিন এরম জায়গায় পৌছাইয়া গেছে, যেইখানে সে ক্ষমতার সব চচ্র্চায় অংশগ্রহণ করতে চায়।
ধর্ষণটাও তারই অংশ। ধর্ষণ বিরোধী আন্দোলনে আমি একটা কথা কইতাম...এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজে প্রত্যেক পুরুষই পোটেনশিয়াল ধর্ষক!
যেমন তার নতুন গাড়ি, আধুনিক বাড়ির শখ থাকে তেমনেই থাকে নারীর অভীপ্সা! আর তারই প্রতিফলন দেখি মানিকের মাঝে! এইখানে মানিক আসলে এই সমাজের একজন ক্ষমতাশালী প্রতিনিধি...
যাই হোক, আমার মায়ের সাথে একটা বাৎচিতের এক্সপেরিয়ানসের উল্লেখ কইরা পোস্ট থামাই। আমার মা ধর্ষণ বিরোধী আন্দোলনের টাইমে আমারে কইলো, ঐ মাইয়ারা ক্যান এতো রাইতে বাইরে থাকলো? নিজের নিরাপত্তা ক্যান তারা দেইখা রাখলো না! একহাতে কোনদিন তালি বাজে না...এর জবাবে তারে আমি খালি একটা প্রশ্ন করছিলাম...আম্মা তুমি কি ধর্ষকরে জায়েজ করতে চাও?...আমার মা মাথা নীচু কইরা খানিক্ষণ ভাইবা তার চিন্তার প্যাটার্ন পালটাইছিলো...আমি জানি না যারা এই পোস্ট পড়বো তারা কি ভাবতাছেন!!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।