আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বইমেলা



বইমেলা। বাঙালীর প্রাণের মেলা। গতকাল গেলাম বই মেলায়। দেখলাম মিডিয়ার দৌরাত্ব। চ্যানেল আই-এর লাইভ, বাংলা ভিশনের লাইভ।

এছাড়াও সাংবাদিক ও সাংঘাতিকদের ভীড়। কিছু তারকার ভীড় কিছু অ-তারকার ভীড় এছাড়াও রয়েছে কিছু সামরিক আর কিছু অসামরিক মানুষের ভীড়। কিছু র্যাব কোনায় বসে (মুক্তধারার পিছনে) ধুমপানে ব্যস্ত। কিছু সাদা পোশাকের পুলিশ বাথরূমের কাছে সাদা মাইক্রোবাসে বসে আড্ডা দিচ্ছে সেইসাথে শুভ্রদন্ড নিয়ে মশগুল। কিছু কিছু স্টলে সুন্দরী রমনী, কিছু কিছু ষ্টলে কিশোরী মেয়েরা বসে আছে কোন কাজ নেই বইয়ের বিক্রিও নেই।

কিন্তু তারা খুব উৎফুল্ল। নিজের মোবাইল ফোনে কথায় ব্যস্ত কিন্তু নতুন পড়তে শেখা শাড়ীর কোন ঠিকানা হচ্ছে না শরীরে। কিছু লোক সেদিকে কেবলার মত তাকিয়ে আছে আর কিছু লোক হ্যাবলার মতো ঘুরে বেড়াচ্ছে বই মেলায়। কিছু তরুণের তরুনীদের পিছে ঘুরে বেড়ানো আর কিছু তরুন তরুণীর উশৃংখল চলাফেরা। মনে হচ্ছে হলিউডে আছি।

সকলেই বই দেখছে। কিনছে কম। কিন্তু বই এর মেলা যেহেতু কোথাও উৎসবের কমতি নেই। তবে কফিওয়ালা চামে কিছু বাজে জিনিষ বিক্রি করছে। অবশ্য পাবলিক সানন্দেই তা খাচ্ছে।

এর মধ্যে দু'জনকে দেখলাম বই চুরী করছে। তাতে আমার এতটুকু খারাপ লাগেনি। বই আসলেই চুরির জিনিষ। (তবে অবশ্যই পড়ার জন্য হলে ভালো)। মাঝখানে আবার শুনলাম চ্যানেল আইয়ের ক্যামেরাম্যান নিখোজ।

তাকে খোজা হচ্ছে ইনফরমেশন ডেস্ক থেকে। মজাই লাগলো। দেখলাম লিটল ম্যাগাজিনের স্টল ছেড়ে রবীনের নিজস্বস্টল দেয়া। দেখলাম প্রকাশকদের বই এলে কেমন বাচ্চা হয়ে যান তারা। লেখকরা একটু প্রফেশনালিজম দেখাচ্ছেন বটে তবে যাদের নতুন এবং প্রথম বই আসছে তাদের কাছে প্রথম সন্তানের মতো।

কিছু কিছু স্টলে নিরস বদনে বসে কিছু বিক্রেতা। তাদের দেখে কষ্টই পেলাম। কিন্তু কিছুই করার নেই। ভাল লাগলো কিছু কিছু প্রকাশকের ভালো বিক্রি দেখে। মানুষ বই কিনছে।

এটা অবশ্যই একটা পজেটিভ দিক। কিন্তু ইনফরমেশন ডেস্কের মহিলাটি কেন যেন বিরস। কথায় কোন মধু নেই। অবশ্য সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বকবক করলে মধু কি আর অবশিষ্ট থাকে ? খুবই ভালো লাগলো বই মেলায় ভাষ্কর্য দেখে। দেরীতে হলেও ভাষা সৈনিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারছে বাঙালী।

তারপরও কত কথা। আর সব সৈনিকরা গেল কোথায়? এটা েকোন ভাস্কর্য হলো ? ইত্যাদি নানা বিশেষন। ব্যাটা নাই মামার থেকে কানা মামা ভাল। বেশ কিছুসিসি ক্যামেরাও চোখে পড়লো। অনেক সুগঠিত মনে হলো এবারের বই মেলাকে।

কিন্তু সেই মেলা কোথায় গেল ? রাস্তায় কোন স্টল নেই। লোকজন খুব শৃংখলভাবে মেলায় ঢুকছে। ব্যাগ চেক হচ্ছে। ভাল লাগলো। অনেক পরিবর্তন পরিবর্ধন তবুও বই মেলাতো।

আসুন সবাই অন্তত একদিন হলেও বইমেলায় যাই এবং বিপুল পরিমান বই কিনি। বলছিলাম মিডিয়ার কথা। সবচোরদের ধরে ধরে লকাপে ঢোকানো হলো। ফালুর ফালাফালি, সাকার চোখ রাঙ্গানি কিংবা নাসিমের বসা গলাটাকে উঠানো এবং চিৎকার করা- কোনটাই আর কাজে লাগছে না। মিডিয়ায় কারো ছবি আর অপ্রকাশিত নেই।

হঠাৎ করে অবশ্য রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু'র কোন ছবি নেই এবং এসম্পর্কে কোন তথ্যও নেই। কিহলো বুঝলাম না। বিশ্ব ব্যাংক এবং আমেরিকার প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী বাংলাদেশের এই গণতন্ত্র কি আদৌ টিকবে ? কেন যেন মিডিয়া একটু দুর্বল হয়ে পড়লো। বিশেষ করে ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া। একুশে টেলিভিশন আসছে 21শে ফেব্রুয়ারিতে।

তাতেও কি ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার প্রভাব বা শক্তি বাড়বে? আজ পর্যন্ত ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার কোন ঐক্যবদ্ধ সংগঠন নেই। বন্ধ হয়ে যাবে বাংলা ভিশন, আর টিভি, এনটিভি, চ্যানেল ওয়ান বা বৈশাখী টিভি। এতোগুলো লোক কোথায় যাবে। কেমনে চলবে তাদের ফ্যামেলী। হয়তো আরো টিভি চ্যানেল আসবে।

তাতে কি আদৌ এই স্কিল (কোন কোন েেত্র স্কীল না) লোকগুলোর চাকরী হবে ? আসলে আমরা কোনদিকে যাচ্ছি মিডিয়া কি আমাদের একটু গাইড করতে পারে না? পারে না একটি পথের নির্দেশনা দিতে। শুধুতো খুন মারামারি বা হত্যা-রাজনীতিই মিডিয়ার সাবজেক্ট হতে পারেনা। দেশে এতোগুলো শিল্প প্রতিষ্ঠান, আসছে বাহিরের ইনভেস্টমেন্ট, চলছে পিএইচপি বা নাসির গ্লাসের মতো কোম্পানী গুলো যাদের ইনভেস্টমন্ট 1000-2000 কোটি টাকা। তাহলে কেন আজো পিছনে পড়ে থাকা। কেন বিদ্যুৎ না থাকলে এর বিকল্প না ভেবে মন্ত্রীদের গুষ্টি উদ্ধার করা।

কেনো যানজট কমানোর ব্যবস্থা না করে যানজট নিয়ে রিপোর্ট। আমরা কি আর কোনো জইমামুন বা মুন্নী সাহা বা শাকিলদের তৈরী করতে পারিনা? বিশ্বে 192টি দেশে গণতন্ত্র আছে। যার মধ্যে 129টি দেশে আছে বাংলাদেশের মতো গণতন্ত্র। তাহলে কি আমরা আসলেই গণতন্ত্রের চর্চায় ব্যস্ত নাকি প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী চলতে বাধ্য। সবই বুঝতে পারছি তারপরেও কেন জানি উদাস লাগতাছে হালায়।

হালায় লুথা হয়া গেলাম নাকি ? এখন চলছে ট্রাবল শুটিং, এরপর জাতিয় সরকারের আগমন এরপর দেশের ইনভেস্টমেন্ট বাড়বে, বাড়বে উন্নয়নের সূচক। দেশের মানুষ শান্তিতে থাকবে দেশ চলে যাবে অন্যের কবজায়। হায় সেলুকাস! আমরা তো হালায় আগেও লুথা ছিলাম এখনও লুথা আবার ভবিষ্যতেও লুথাই রয়া গেলাম।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।