বন্ধুদের নিয়ে বাঁচি
রাইসু ভাই কই?কার পক্ষে কথা কন দেইখা যান! গত কাল ভোরের কাগজে ছাপা হইছিলো।
কাষ্ট পেস্ট করছি।
শুধুমাত্র বিএনপিপ্রীতির কারণে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব থেকে উপদেষ্টা পর্যনত্দ বনে যাওয়া মোখলেছুর রহমান চৌধুরীর রাহুমুক্ত হয়েছে বঙ্গভবন। কিন' রাহুমুক্তি ঘটেনি তিনি যে জেলার সেই হবিগঞ্জের। এখনো তার কুকীর্তিগুলো বিদ্যমান হবিগঞ্জের গ্রামে।
চাকরি হারানোর পর তার কীর্তিকলাপ সম্পর্কে বেরিয়ে আসছে নানা তথ্য। মোখলেছ চৌধুরী তার নিজ জেলা হবিগঞ্জে নিজের নামের 'ছ' অক্ষরের পরিবর্তে 'স' ব্যবহার করে 'মোখলেসগঞ্জ' নামে একটি এলাকা প্রতিষ্ঠা করার দৌড়ঝাঁপ শুর" করেন বহু আগে থেকেই। এ নামে হবিগঞ্জে কোনো জনপদ বা গ্রামের অসত্দিত্ব না থাকলেও একপর্যায়ে 'মোখলেসগঞ্জ' নামে তিনি নামকরণ করেন একটি প্রসত্দাবিত পৌরসভার। এখনো লাখাই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মোখলেসগঞ্জ নামের সাইনবোর্ডও শোভা পাচ্ছে।
সূত্র মতে, মোখলেছ চৌধুরী নির্বাচন করতে চান।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব নিযুক্ত হওয়ার পর তিনি নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রাথর্ী হওয়ার জন্য প্রস'তি নেন। তখন পত্রপত্রিকায় তার নামও আসে।
বিএনপি হাইকমান্ডেও যোগাযোগ করেন। কিন' চাকরি পাকা হয়ে যাওয়ায় সে চেষ্টায় ক্ষানত্দ দেন। এখন সর্বশেষ উপদেষ্টা পদ হারানোর পর তিনি কী করবেন তা স্পষ্ট নয়।
হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলা সদর কালাউক থেকে পশ্চিম দিকে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী কাটিহারা গ্রাম। এই গ্রামেই একদা রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব ও পরে উপদেষ্টা পদবীধারী মোখলেছুর রহমান চৌধুরীর বাড়ি। ওই গ্রামের নাম ইতিমধ্যে পরিবর্তন করা হয়েছে নাকি নতুন করে গ্রামের নাম মোখলেসগঞ্জ করা হয়েছে, তা নিয়ে এলাকায় আলোচনার কমতি নেই। কাটিহারা গ্রামের উজ্জ্বল চৌধুরী ও শাহ আলমসহ কয়েকজন মুরবি্ব অবশ্য জানান, গ্রামের নাম পরিবর্তন করে যদি এলাকার উন্নয়ন হয় তবে তাদের কোনো আপত্তি নেই। অন্যদিকে একই গ্রামের বিশিষ্ট মুর"বি্ব সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বরের স্বামী ডা. গোলাম মোহাম্মদ ওয়াদুদ জানান, কাটিহারা গ্রামের নাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
তবে মোখলেসগঞ্জ নামে নতুন একটি এলাকা করা হবে। তিনি অবশ্য জানান, মোখলেসগঞ্জ নামকরণের ব্যাপারে গ্রামের সমুদয় লোকদেরকে নিয়ে কোনো বৈঠক বা সিদ্ধানত্দ হয়নি। এ ব্যাপারে কয়েকজনকে নিয়ে গঠিত একটি বোর্ডে সিদ্ধানত্দ হয়েছে।
কাটিহারা গ্রামের বাসিন্দা ও সংশ্লিষ্ট বামৈ ইউপির চেয়ারম্যান মোঃ মাহফুজুল আলম জানান, কাটিহারা গ্রামের নাম পরিবর্তন হয়নি। আর যদি কেউ এই নাম পরিবর্তন করতে চায় তা প্রতিহত করা হবে।
তবে মোখলেসগঞ্জ নামে নতুন গ্রাম করার ব্যাপারে তাদের কোনো আপত্তি নেই। তিনি আরো জানান, মোখলেসগঞ্জ নামকরণের ব্যাপারে তিনি কিছুই অবগত নন। তবে এ নামে তিনি কয়েকটি সাইনবোর্ড টাঙানো দেখেছেন। তিনি জানান, মোখলেছুর রহমান চৌধুরী গ্রাম বা এলাকার লোকদের সঙ্গে এ ব্যাপারে কোনো যোগাযোগ না করেই স্বউদ্যোগে মোখলেসগঞ্জ নামকরণ করেছেন।
বামৈ বাজারের প্রবেশদ্বারে একটি ব্রিজের পাশে মোখলেসগঞ্জ নামে একটি সাইনবোর্ড রয়েছে।
ঐ রাসত্দার বাম দিকের পাকা রাসত্দাটি মোখলেছুর রহমান চৌধুরীর বাড়িতে যাওয়ার পথ। একইভাবে তার বাড়ির সামনে ও কাটিহারা গ্রামের শেষ প্রানত্দে মাদ্রাসার সামনে একটি গাছে মোখলেসগঞ্জ নামে তীর চিহ্নিত আরো দুটি সাইনবোর্ড রয়েছে।
লাখাই (কালাউক) উপজেলার বামৈ ইউনিয়নের 5নং ওয়ার্ডের গ্রাম কাটিহারা। ঐ গ্রামে প্রায় 2 হাজার 600 ভোটার রয়েছেন। ঐতিহ্যবাহী ঐ গ্রামে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মরহুম ফরহাদ চৌধুরী, বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব আলহাজ মরহুম আজিজুর রহমান চৌধুরী, বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান মাহফুজুল আলমসহ বিভিন্ন গুর"ত্বপূর্ণ পদের ব্যক্তিগণ রয়েছেন।
এ গ্রামের নামের সঙ্গে রয়েছে গ্রামবাসীর আত্মার সম্পর্ক। তাই গ্রামবাসী কোনোমতেই গ্রামের নামের পরিবর্তন চায় না।
অন্যদিকে গ্রামের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে প্রায় এক একর জমির ওপর ছোট একটি টিনশেড ঘর রয়েছে। ঘরের সামনে একটি সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে 'আলহাজ আজিজুর রহমান চৌধুরী টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট'। এই প্রতিষ্ঠানটি মোখলেছুর রহমান চৌধুরীর পিতার নামে নামকরণ করা হয়েছে।
ইনস্টিটিউটটি 2000 সালে স্থাপিত হয়ে 2002 সালের 8 অক্টোবর একাডেমির স্বীকৃতি পায়। খোলার দিনেও তালাবদ্ধ ঘরটিতে কোনো চেয়ার-টেবিলের অসত্দিত্ব পাওয়া যায়নি। সূত্র জানায়, ওই ইনস্টিটিউটের নামে লাখ লাখ টাকার অনুদান এনে লুটপাট করে হজম করেছে মোখলেছ চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ একটি মহল।
নামসর্বস্ব আলহাজ আজিজুর রহমান চৌধুরী টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের সামনেও মোখলেসগঞ্জ নামে একটি সাইনবোর্ড রয়েছে। এখানে বাড়িঘর, অফিস কিংবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকা সত্ত্বেও ওই স্থানটির নাম কীভাবে মোখলেসগঞ্জ হলো তা নিয়ে অনেকেরই প্রশ্ন।
যেখানে স্থানেরই অসত্দিত্ব নেই, সেখানে মোখলেসগঞ্জ কীভাবে পৌরসভার নাম হলো সেই প্রশ্ন প্রসত্দাবিত পৌরসভাবাসীরও। এ নিয়ে রয়েছে তাদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ।
লাখাই উপজেলার বামৈ ইউনিয়নের কাটিহারা, বামৈ, ভাদিকারা গ্রাম ও মোখলেসগঞ্জ (অসত্দিত্ব বিহীন), বুল্লা ইউনিয়নের শালদিকা গ্রাম, মুড়িয়াউক ইউনিয়নের মশাদিয়া গ্রাম এবং তেঘরিয়া ইউনিয়নের তেঘরিয়া গ্রামের একাংশ (2নং ওয়ার্ড) নিয়ে মোখলেসগঞ্জ পৌরসভার প্রসত্দাব করা হয়েছে।
লাখাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আয়াতুল ইসলাম জানান, তিনি সবেমাত্র যোগদান করেছেন। তিনি আসার পূর্বে প্রসত্দাবিত পৌরসভার বিষয়ে চিঠি চালাচালি হলেও তার দায়িত্ব গ্রহণের পর কোনো চিঠি আসেনি।
মোখলেসগঞ্জের ব্যাপারে জানতে চাইলে বলেন, তিনি সবেমাত্র এসেছেন। এ ব্যাপারে অবগত নন। মোখলেসগঞ্জের মতো উপজেলার অনেক কিছু সম্পর্কেই জানার বাকি রয়েছে। প্রসত্দাবিত মোখলেসগঞ্জ পৌরসভা লাখাই পরিসংখ্যান অফিসেও তালিকাভুক্ত নয় বলে অফিস সূত্রে জানা গেছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।