আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ডিসিতে কোরবানীর ঈদ

ওয়াশিংটন ডিসি থেকে বাংলাদেশ

প্রবাসে কোবরবানীর ঈদ উপযাপন করা বেশ নস্টালজিক। দেশের ঈদের আমেজ এই প্রবাসী জীবনে খুঁজে পাওয়া সত্যি কস্টকর। তারপরেও ঈদ উদযাপনের উপলক্ষ্যে আমরা সবাই একএিত হই। একসাথে হৈ চৈ করি। এবারের ঈদের দিন সপ্তাহান্তে পড়াতে বেশ মজাই হলো।

ডিসেম্বরের 30 তারিখ শনিবারে ঈদ উদযাপন করলাম। প্রতিবারের মতো এবারও এখানে দু'দিন ঈদ উদযাপন করা হয়েছে। আমরা অনেকেই শনিবারে পালন করলাম। অনেকে করল রোববারে। রোববার দিন সকাল 6:30 মিনিটে বের হলাম কোরবানী দেওয়ার জন্য।

বাসা থেকে প্রায় 95 মাইল দূরে পেন্সিলভেনিয়ার লিটল টাউন নামে শহরের একটা ফার্মে কোরবানী দিতে গেলাম। সকাল 8:00টায় পৌঁছে গিয়ে দেখি বাংলাদেশীসহ প্রচুর লোকের ভীঁড়। তার মাঝেই সব ভাবীরা নিয়ে এলেন রান্না করে। আমি নিয়ে গেলাম চটপটি, সেমাই ও চিপস। আমাদের গরুর সিরিয়াল ছিল 10।

সিরিয়াল আসার পর গরু জবাই করলো আমাদেরই অতি পরিচিত একজন বেলা 2:30 মিনিটে। তারপর ফার্মের লোকরা কাটাকাটি করল। প্রায় 4/5টা মেশিনে মাংস কাটা হচ্ছে। মেশিনগুলো ছোট আকারের স'মিলের করাতের মতো। বিশাল বিশাল গরু, দুম্বা আর ছাগল অনায়াসে দ্রুত কেটে টুকরো করে ফেলা হয়।

ফার্মে ছিল অসংখ্য মানুষের ভীঁড়। এর মধ্যে প্রচন্ড ঠান্ডা। বিকেলে তাপমাএা নেমে আসল 36 ডিগ্রী ফারেনহাইটের কাছে। উষ্ণতার সন্ধানে সবাইকে গাড়ীর হিটিং চালিয়ে ভেতরে অবস্থান নিতে হলো। তারপর সন্ধ্যে 6:30 মিনিটে মাংস সবাই পেলাম।

সব মাংস গাড়ীতে করে নিয়ে এলাম এক ভাবীর বাসায়। সেটাও প্রায় 74 মাইল দূরে। সেখানে গ্যারেজের মধ্যে সবাই মাংস ভাগ করলো। এর মধ্যে ভাবী মাংস ও মাছ দিয়ে রাতের খাবারের আয়োজন করে ফেললেন। সব গুছিয়ে আরও 30 মাইল ড্রাইভ করে বাসায় ফিরলাম রাত 11:00টায়।

তখন আর কোন এনাজর্ী নেই মাংস প্রসেস করে ডিপ ফ্রীজে রাখার। গ্যারেজ খুবই ঠান্ডা। মাংসগুলো গ্যারেজের ভেতর রেখেই ঘুম। সকাল বেলা উঠে আশেপাশের প্রতিবেশীদের বাসায় দেশীয় স্টাইলে মাংস বিতরণ করলাম। যেমন কস্ট তেমন আনন্দ।

রাতে বাঙ্গালী প্রতিবেশীদের সবাইকে নিমন্ত্রণ দিলাম। সবাই বসে একসাথে ঈদের মাংস খেলাম। সারাদিন রান্না করে টেবিলে সাজিয়ে দিলাম খাবার। খাবারের আইটেম ছিল ভুনা গরুর মাংস, খাসীর রেজালা, ঝাল চিকেন, সালাদ, পোলাও, আর শেষে ছিল আইসক্রীম, চীজ কেক আর মিস্টি। রাত বাজে এগারোটা।

কালকে সকালে কাজে যেতে হবে। তারপরেও এই পোস্টটা দেওয়ার লোভ সামলাতে পারলাম না। গত দু'দিনের ছবির কোলাজ আপনাদের জন্য তুলে দিলাম। বিদেশেও ঈদ হয়, আনন্দ হয়, উৎসব হয়। একসাথে খাওয়া দাওয়া হয়।

শত হলেও দেশী বাঙ্গালী আমরা, হৈ চৈ ছাড়া কি আমাদের কোন পরিচয় আছে?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।