পরিবর্তনের জন্য লেখালেখি
মেয়েটা এত নিখুঁত সুন্দর! মাঝে মাঝে হা করে তাকিয়ে থাকি! দেহবল্লরী দেখলে সুপার মডেলরা ভিমরি খাবে ! ওর শরীরের প্রতিটা ইঞ্চি সুন্দর। প্রথম দেখার দিনটার কথা মনে পড়ে যায়। করিডোরে এলে বেলে ছেলে ছোকরাদের পরিবেষ্টিত হয়ে মহারানীর মত দাঁড়িয়ে!
আমার হৃদপিন্ড স্তব্ধ হবার যোগাড়! ওরে আল্লাহ! হুর পরী নাকি?
আমাকে হা করে তাকিয়ে থাকতে দেখে পাপড়ি দাবড়ানি দেয়।
ঃ ঐ! ইমন, এই মেয়ের ফুফাত ভাই কিন্তু কালা জাহাঙ্গীর না সুইডেন আসলামের সাগরেদ। তুই হা বন্ধ কর।
সাথে সাথে আঁতে লাগলো। আমি বরাবরই প্রচন্ড দুঃসাহসী। সোজা গিয়ে পথ আটকে দাঁড়ালাম।
ঃ এই মেয়ে তোমার তো দারুন সৌভাগ্য !
দু'চোখে প্রচন্ড কৌতুক নিয়ে ক্লিওপেট্রা ভঙ্গিমায় আমাকে বিদ্ধ করে।
ঃ তাই নাকি!!!!
ঃ ইয়েস।
তোমার সৌভাগ্য যে আমি একটা মেয়ে। নাহলে এখনি ধরে ,
"চুমিয়ে দিতাম নয়ন ঢুলু ঢুলু
উপড়ে নিতাম তোমার ঠোঁটের দীপ্ত কমন্ডুলু "
করিডোর স্তব্ধ !
মেয়েরা হতবাক।
ছেলেরা মারমুখী। বর্নার প্রেমপ্রার্থী জিরো মার্কা হিরোর সংখ্যা তো কম ছিলো না! তারা সইবে কেন?
কিন্তু একটা মেয়েকে পিটায়ই বা কি করে! সুতরাং সব কটা অতি মেধাবী ভবিষ্যত ডাক্তার [ কেউ কেউ ডাবল মেধাবী , যারা বুয়েট ছেড়ে ডাক্তারী পড়তে এসেছে] উস্খুস করতে থাকে । কি ভাবে আমাকে একটা জ্বালাময়ী ঝাড়ি দেওয়া যায় ।
"ঘরে কি মা বোন নেই" জাতীয় কথা তো বলে লাভ নেই। বেচারা রামছাগলরা । ঈশ!!!
আমি ভেবেছিলাম, মেয়েটা "---" বাচচা বা হোমো/ লেসবিয়ান ধরনের কোন গালি দিবে। খুব একটা পুতু পুতু ধরনের যেহেতু মনে হলো না।
আমাকে উলটো চমকে দিয়ে মেয়েটা এবার আমার শরীর ঘেষে দাঁড়িয়ে পড়ে ।
নিঃশ্বাসের দারুন গরম বাতাস আমার গালে মেখে কানে কানে বলে ,
ঃ কিন্তু আমি যে দারুন অ-সমকামী ! তাই,
"কাছে আসা বড্ড বেশি হবে
এই এখানেই দাঁড়িয়ে থাকা ভালো !"
এই বার আমার চমকানোর পালা!
ঃ এই কবিতাটা তুমি জানো?
এবার দুজন এক সাথেই বলে উঠি।
" তোমার ঘরে থমকে থাকে দুপুর
বারান্দাতে বিকেল পড়ে এলো । "
ঃ আমি ইমন। এই কবিতা আমি প্রথম পড়েছি ১৯৯১ সালে। আর কাউকেই এই কবিতা কখনো বলতে শুনি নি তো!
ঃ আমি বর্না ।
তুমি কি জাহাঙ্গীর নগরের মেয়ে?
ঃ নাহ । ঢাকার । কেনো? চিনি অবশ্য অনেক মানুষকে। যাই মাঝে মাঝে ।
ঃ ওহ! তাহলে হয়ত দেখেছি কখনো ।
খুব চেনা চেনা লাগছে। নাটক বা গানের সাথে কি.......?
ঃ হুম, তাহলে সত্যিই দেখেছো হয়ত। ফুটবলার স্বপন আমার প্রেম দিওয়ানা।
ঃ আর তুমি? তুমি দিওয়ানী না?
ঃ নারে ভাই, আমি ফুটবল মানে চট্টগ্রামের "---" কে চেনো? তার বান্ধবী । প্রেম ট্রেম করি না, নারী প্রীতি আছে তো , চরিত্র খারাপ!
ঃ সেকি !!! আমি তো উনার নাম শুনেছি! মোটেই উনি ফুটবলের মত না আর চরিত্র খারাপ উনার? কি বলো এই সব !!!
বর্না ফাঁপরে পড়ে।
ভ্রু -চোখ কুঞ্চিত।
ঃ আরে নাহ! আমার জন্য ফুটবলের মত সিলেট, ঢাকা , চট্টগ্রাম করতো তো ! চরিত্র খারাপ আমার ! দেখলা না তোমার সাথে কেমন ..............হাহ হাহ হাহ
আমরা দুজনেই হেসে ফেলি ।
ঃ করতো মানে? ভাইয়া এখন আর করে না?
ঃ নাহ। এখন খুব শান্ত হয়ে এক জায়গায় শুয়ে থাকে । নো ছুটাছুটি ।
নো ফালা ফালি।
আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বর্না কি যেন পড়ে নেয় ।
তারপর থেকে আমরা জোড়া শালিক । দুইটা আহত পাখি , দুইজনকে খুঁজে পেলাম!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।